আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৪. জুমআর অধ্যায়

হাদীস নং: ৫১৭
আন্তর্জাতিক নং: ৫১৭
মিম্বর থেকে ইমাম নেমে আসার পর কথা বলা।
৫১৭. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ..... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ রাসূল (ﷺ) মিম্বর থেকে নেমে আসার পর প্রয়োজন হলে কথাবার্তা বলতেন। - ইবনে মাজাহ ১১১৭

ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ জারীর ইবনে হাযিম-এর বরাত ছাড়া এই সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না। মুহাম্মাদ আল-বুখারী (রাহঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, জারীর ইবনে হাযিম হাদীসটির বিষয়ে ওয়াহম ও সন্দেহের শিকার হয়েছেন। সহীহ হল সাবিত ......... আনাস (রাযিঃ) সূত্রে যা বর্ণিত হয়েছে তা হল, আনাস (রাযিঃ) বলেনঃ একদিন নামাযের ইকামতের পর এক ব্যক্তি এসে রাসূল (ﷺ)-এর হাত ধরে কথা বলতে লাগল। এমনকি মুসল্লীদের কেউ কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। মুহাম্মাদ আল-বুখারী (রাহঃ) বলেনঃ আসলে হাদীসটি হল এ-ই। অনেক সময় জারীর ইবনে হাযিম সন্দেহের শিকার হয়ে যান বটে, তবে তিনি সত্যবাদী।

মুহাম্মাদ বলেনঃ এমনিভাবে জারীর ইবনে হাযিম (রাহঃ) সাবিত আনাস (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণিত আরেকটি হাদীসের ক্ষেত্রেও ওয়াহমের শিকার হয়েছেন। সেটি হল, আনাস (রাযিঃ) বলেনঃ নামাযে ইকামত হয়ে গেলেও আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা (নামাযে) দাঁড়াবে না। মুহাম্মাদ বলেনঃ আসলে রিওয়ায়াতটি হল হাম্মাদ ইবনে যায়দ (রাহঃ) বলেনঃ আমরা সাবিত আল বুনানী (রাহঃ)-এর কাছে বসা ছিলাম। তখন তিনি হাজ্জাজ আস্-সাওওয়াফ ...... ইয়াহয়া ইবনে আবী কাসীর ...... আব্দুল্লাহ ইবনে আবী কাতাদা ......... তার পিতা আবু কাতাদা (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ নামাযের ইকামত হয়ে গেলে পর আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না। এখানে জারীর ওয়াহমের শিকার হয়ে গেছেন। ধারণা করেছেন সাবিত বুঝি আনাস (রাযিঃ) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
باب مَا جَاءَ فِي الْكَلاَمِ بَعْدَ نُزُولِ الإِمَامِ مِنَ الْمِنْبَرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُكَلَّمُ بِالْحَاجَةِ إِذَا نَزَلَ عَنِ الْمِنْبَرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ وَهِمَ جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَالصَّحِيحُ مَا رُوِيَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأَخَذَ رَجُلٌ بِيَدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَمَا زَالَ يُكَلِّمُهُ حَتَّى نَعَسَ بَعْضُ الْقَوْمِ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَالْحَدِيثُ هُوَ هَذَا . وَجَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ رُبَّمَا يَهِمُ فِي الشَّىْءِ وَهُوَ صَدُوقٌ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَهِمَ جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ فِي حَدِيثِ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي " . قَالَ مُحَمَّدٌ وَيُرْوَى عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ فَحَدَّثَ حَجَّاجٌ الصَّوَّافُ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي " . فَوَهِمَ جَرِيرٌ فَظَنَّ أَنَّ ثَابِتًا حَدَّثَهُمْ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

উপরিউক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় মুআজ্জিন বা মুক্তাদীগণ কেউই ঘড়ি দেখে নামাযের জন্য দাঁড়িয়ে যাবে না। বরং ইমামের আগমনের অপেক্ষা করবে। ইমাম সাহেব জামাতের নির্ধারিত সময়ে না এলে তাঁর প্রতিনিধি মুয়াজ্জিন বা অন্য কেউ ইমামের স্থলাভিষিক্ত হবেন। তখন মুসল্লীগণ তাঁর সাথে দাঁড়াবে। তবে ইমামকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, যেন তাঁর বিলম্বের কারণে কোন মানুষ কষ্ট না পায়।
ইমামকে দেখে দাঁড়ানোর নিয়ম হলো ইমাম যদি মুসল্লীদের সামনের দিক থেকে আসেন তাহলে তাঁকে দেখে সকলে একসাথে দাঁড়িয়ে যাবে। আর যদি ইমাম মুসল্লীদের পিছন দিক থেকে আসেন তাহলে তিনি যে কাতার অতিক্রম করতে থাকবেন তারা দাঁড়াতে থাকবে। এভাবে ইমাম তাঁর নির্ধারিত স্থানে আসতে আসতে সকল মুসল্লী দাঁড়িয়ে যাবে। (আলমগিরী: ১/৫৭)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ৫১৭ | মুসলিম বাংলা