আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৪. জুমআর অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৬
জুমআর দিনে গোসলের ফযীলত।
৪৯৬. মাহমুদ ইবনে গায়লান (রাহঃ) ...... আওস ইবনে আওস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ যে জুমআর দিনে সকাল সকাল গোসল করল এবং গোসল করাল, তারপর ইমামের কাছে গিয়ে বসে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল তার প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে এক বছরের রোযা ও কিয়ামের (নামাযের) সাওয়াব। মাহমুদ (রাহঃ) এ হাদীসে বলেন, ইমাম ওয়াকী’ বলেছেনঃ যে নিজে গোসল করল এবং তার স্ত্রীকে গোসল করাল। - ইবনে মাজাহ ১০৮৭

আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রাহঃ) সূত্রে এই হাদীসে বর্ণিত আছে যে, যে নিজে গোসল করল এবং (কাউকে) করাল অর্থাৎ সে তার মাথা ধৌত করল এবং সে গোসল করাল। আবু বকর, ইমরান ইবনে হুসাইন, সালমান, আবু যর, আবু সাঈদ, ইবনে উমর ও আবু আইয়ুব (রাযিঃ) থেকেও এই বিষয়ে হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ আওস ইবনে আওস (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান। আবুল আশ’আস আস্-সান’আন (রাহঃ) এর নাম শুরাহিল ইবনে আদা। আবু জানাব হলেন ইয়াহয়া ইবনে হাবীব আল্-কুসসাব আল্-কূফী।
باب مَا جَاءَ فِي فَضْلِ الْغُسْلِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، وَأَبُو جَنَابٍ يَحْيَى بْنُ أَبِي حَيَّةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عِيسَى، عَنْ يَحْيَى بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَغَسَّلَ وَبَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَدَنَا وَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ كَانَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ يَخْطُوهَا أَجْرُ سَنَةٍ صِيَامُهَا وَقِيَامُهَا " . قَالَ مَحْمُودٌ قَالَ وَكِيعٌ اغْتَسَلَ هُوَ وَغَسَّلَ امْرَأَتَهُ . قَالَ وَيُرْوَى عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ " مَنْ غَسَّلَ وَاغْتَسَلَ " . يَعْنِي غَسَلَ رَأْسَهُ وَاغْتَسَلَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَسَلْمَانَ وَأَبِي ذَرٍّ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي أَيُّوبَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَأَبُو الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيُّ اسْمُهُ شَرَاحِيلُ بْنُ آدَةَ . وَأَبُو جَنَابٍ يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْقَصَّابُ الْكُوفِيُّ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস থেকে জুমআর দিনে গোসল করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা ছুন্নাত ও ফযীলতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (বাদায়েউস সানায়ে’: ১/২৬৯) জুমআর দিন গোসল করা জরুরী বলে যদিও কোন কোন ইমাম মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলামের শুরু যুগে সাহাবায়ে কিরামের আর্থিক দৈন্যতা ছিল চরমে। নিজেরা ক্ষেতে খামারে কাজ করতেন, মোটা কাপড় পরিধান করতেন এবং ঘর্মাক্ত শরীরে জুমার নামাযে আসতেন। ঘামের দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁদের অনটন দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন। তাঁরা উন্নতমানের পাতলা কাপড় পরিধান করেন। কাজের মানুষে তাঁদের কাজ করে। তখন গোসল করার ঐ প্রয়োজনীয়তা থাকেনি যা শুরু যুগে ছিলো। (তহাবী শরীফ-৭০৭) এ হাদীসের আলোকে বলা যেতে পারে যে, রসূল স.-এর বাণী الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ জুমআর দিনের গোসল করা সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়াজিব’ (বুখারী-৮১৬) এটা ইসলামের শুরু দিকের কথা। এর আরো একটি প্রমাণ মেলে مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَة ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে অযু করে জুমআর নামাযে যায় এবং চুপ করে মনোযোগ সহকারে (ইমামের খুৎবা) শোনে তার এই জুমআ থেকে পরের জুমআ এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম-১৮৬১) এ হাদীসে জুমআর ফযীলত পাওয়ার জন্য তিনটি আমলের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে গোসলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকেও বুঝা যায় যে, জুমআর জন্য গোসল করা জরুরী নয়। তবে বুখারী: ৮৬৪ নং হাদীস থেকে গোসলের ফযীলত প্রমাণিত হয়েছে। অতএব এটা ছুন্নাত।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান