আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৩. বিতর নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪৫৪
বিতর ফরয নয়।
৪৫৪. সুফিয়ান সাওরী প্রমুখ (রাহঃ) ...... আসিম ইবনে যামরা (রাহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, আলী (রাযিঃ) বলেছেনঃ ফরয নামাযের অনুরূপ বিতরের নামায অবশ্য করণীয় নয়। এ হল রাসূল (ﷺ) প্রচলিত এক সুন্নত।

বুনদার (রাহঃ) .... সুফিয়ান সাওরী (রাহঃ) থেকে আমাদের কাছে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এই রিওয়ায়াতটি আবু বকর ইবনে আয়্যাশ (রাহঃ)–এর রিওয়ায়াত (৪৫২ নং) থেকে অধিক সহীহ। মনসুর ইবনুল মু’তামির (রাহঃ) এর সূত্রে আবু বকর ইবনে আয়্যাশ (রাহঃ)–এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
باب مَا جَاءَ أَنَّ الْوِتْرَ لَيْسَ بِحَتْمٍ
وَرَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، وَغَيْرُهُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ الْوِتْرُ لَيْسَ بِحَتْمٍ كَهَيْئَةِ الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ وَلَكِنْ سُنَّةٌ سَنَّهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .

حَدَّثَنَا بِذَلِكَ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ . وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ . وَقَدْ رَوَاهُ مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ نَحْوَ رِوَايَةِ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সুন্নাহর আলোকে বিতরের শরয়ী বিধানঃ

বিতর নামায আদায় করা ওয়াজিব। ফরজ বা সুন্নত নয়। ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত প্রতিটি আলাদা পরিভাষা। প্রত্যেকটির হুকুম ও আলাদা।
এটা জানা কথা যে, সকল নামায শরয়ী বিধানগতভাবে দুই প্রকার: ফরজ ও সুন্নাত (নফল)।
ফরজ: এমন সব বিধান যা অকাট্য দলিল প্রমাণাদির ভিত্তিতে সাব্যস্ত হয়। আর তা মানা ও পালন করা আবশ্যক। স্বেচ্ছায় এই বিধানকে ছেড়ে দিলে তাদের জন্য রয়েছে কঠিনতর শাস্তি। আর অস্বীকার করলে তাকে শরীয়তের পরিভাষায় কাফের বলা হয়। যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অর্থাৎ ফজরের দুই রাকআত, যোহরের চার রাকআত ইত্যাদি।
সুন্নাত (নফল): এমন সব বিধানকে বলা হয়, যা অত্যাবশ্যক নয়। কিন্তু আমল বা পালন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয় ও আমলকারীকে কৃত আমলের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। যেমন ফরজ নামাজ ব্যতীত অন্যান্য নফল বা সুন্নাত নামাজসমূহ।

ফরজ নামাজের বৈশিষ্ট্য:
⦿ ফরজ নামাজ অকাট্য দলিল প্রমাণাদি দ্বারা সুসাব্যস্ত বিধান।
⦿ ফরজ নামাজ আবশ্যিক বিধান।
⦿ ফরজ নামাজ স্বেচ্ছায় ত্যাগকারীর জন্য রয়েছে কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি।
⦿ ফরজ নামাজ অস্বীকারকারী শরয়ী পরিভাষায় কাফের।
⦿ ফরজ নামাজ ছেড়ে দিলে অবশ্যই কাজা করতে হয়।
⦿ ফরজ নামাজের সময়, রাকআত ও সূরা নির্দিষ্ট।
⦿ ফরজ নামাজ সওয়ারি বা কোনো বাহনের ওপর আদায় করা যায় না।
সুন্নাত (নফল) নামাজের বৈশিষ্ট্য:
⦿ নফল নামাজ আবশ্যিক বিধান নয়।
⦿ নফল নামাজ ছেড়ে দিলে কাজা আদায় করা আবশ্যক নয়।
⦿ নফল নামাজ ছেড়ে দিলে তার জন্য শাস্তির বিধান নেই।
⦿ নফল নামাজের জন্য আজান, একামত ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো সময়, রাকআত ও সূরা নির্ধারিত নেই।
⦿ নফল নামাজ সওয়ারি বা বাহনের ওপর আদায় করা যায়।
এ সংক্ষিপ্ত ভূমিকায় আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখতে পাই, বিতর এমন একটি নামাজ যেখানে উভয় বিধানের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। যেমন- বিতর নামাজে ফরজ নামাজের ন্যায় সময়, রাকআত ও সূরা নির্দিষ্ট। বিতর নামাজ পড়তে ভুলে গেলে কাযা আদায় করতে হয়। ফরজের ন্যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। যেমন হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আয়িশা রাযি. কে বিতরের জন্য জাগিয়ে দেওয়ার কথা এসেছে, কিন্তু তাহাজ্জুদের জন্য জাগিয়ে দেননি। তেমনি এই নামাজ স্বেচ্ছায় না পড়লে তার জন্য কঠিন ধমকি ও শাস্তির কথা এসেছে। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. বলেন, যে স্বেচ্ছায় বিতর নামাজ ছেড়ে দেবে, তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না। এসব বৈশিষ্ট্য থেকে বোঝা যায়, এটা ফরজ নামাজ।
তেমনি এই বিতর নামাজে রয়েছে সুন্নাত বা নফল নামাজের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য। যেমন- এই নামাজের জন্য ভিন্নভাবে আযান ও ইকামত দিতে হয় না। আর হাদীসে এই নামাজকে ফরজ নামাজের ওপর বৃদ্ধি করা হয়েছে বলা হয়েছে। এ বৈশিষ্ট্য থেকে বোঝা যায়, এটি নফল নামাজ।
তাই উভয় নামাজের সাথে মিলের কারণে হানাফী মাযহাবে এই নামাজকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করা হয়েছে, যা গুরুত্বের মানদণ্ডে ফরজ ও সুন্নাত-নফলের মাঝামাঝি। [টীকা : ১]
--
হাদীসসমূহ:
ওয়াজিব হওয়ার এই বিষয়টিও অসংখ্য সহীহ হাদীস ও আসার দ্বারা প্রমাণিত। অতএব সাধারণ নফল ও সুন্নাতের মতো মনে করে এতে অবহেলা করার কোনোই সুযোগ নেই।
বিতর নামাজ ওয়াজিব এই মর্মে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল:
এক.
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ: «‌الْوِتْرُ حَقٌّ، فَمَنْ لَـمْ يُوْتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا، الْوِتْرُ حَقٌّ، فَمَنْ لَـمْ يُوْتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا، الْوِتْرُ حَقٌّ، فَمَنْ لَـمْ يُوْتِرْ فَلَيْسَ ‌مِنَّا».
অর্থ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বুরায়দা রাযি. তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘বিতর আবশ্যিক বিধান বা ওয়াজিব। সুতরাং যে বিতর আদায় করবে না সে আমাদের অনুসারী নয়। বিতর অবশ্য পালনীয় বিধান, যে বিতর আদায় করবে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়। বিতর ওয়াজিব। যে বিতর আদায় করবে না তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’ [২]
হাদীসটির মান: ইমাম হাকিম রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। হাফিয যাহাবী রহ. হাকিম রহ.-এর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন। শায়খ শুয়াইব আল-আরনাঊত রহ. ও বলেছেন, হাসান। [৩]
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিতর ত্যাগকারীর ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারিবাণী উচ্চারণ করেছেন এবং তিন তিনবার করে বলেছেন, যে বিতর আদায় করবে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়। তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বলাই বাহুল্য, এমন কঠিন হুমকি কোনো সুন্নাত ত্যাগকারীর ব্যাপারে হতে পারে না। [৪] কারণ সুন্নাত যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, তা আদায় করলে অবশ্যই সওয়াবের অধিকারী হবে, তবে আদায় না করলে সাধারণত এমন কঠিন হুমকির সম্মুখীন হতে হয় না। সুন্নাত বিধানের ক্ষেত্রে শরীয়তের এমনই দৃষ্টিভঙ্গি। যেমন- তাহাজ্জুদের নামাজ ও ফজরের সুন্নাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ নামাজ। তবুও এগুলো আদায় না করলে এমন কোনো ধমকের কথা আসেনি। এ থেকেই বোঝা যায়, বিতর শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়; বরং অবশ্যই পালনীয় বিধানও বটে। এটিকেই ফিকহে ইসলামির পরিভাষায় ওয়াজিব বলা হয়।
দুই.
عَنْ خَارِجَةَ بْنِ حُذَافَةَ الْعَدَوِيِّ، قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ، فَقَالَ: «إِنَّمِنْ حُمْرِ النَّعَمِ، وَهِيَ الْوِتْرُ، فَجَعَلَهَا لَكُمْ فِيْمَا بَيْنَ صَلَاةِ الْعِشَاءِ إِلَىٰ صَلَاةِ الْفَجْرِ».
অর্থ: হযরত খারিজা রাযি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে এসে বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে এমন একটি নামাজ বৃদ্ধি করে দিয়েছেন যা তোমাদের জন্য লাল উট থেকেও উত্তম। আর সেটি হলো বিতর...। [৫]
হাদীসটির মান: হাফিয হাকিম রহ. বলেন, হাদীসটি সহীহ। শায়খ শুয়াইব আল-আরনাঊতও রহ. হাদীসটিকে সহীহ লিগাইরিহী বলেছেন।
তিন.
عَنْ أَبِيْ تَمِيْمٍ الْـجَيْشَانِيِّ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ، خَطَبَ النَّاسَ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ فَقَالَ: إِنَّ أَبَا بَصْرَةَ حَدَّثَنِيْ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ: «إِنَّ اللهَ زَادَكُمْ صَلَاةً، وَهِيَ الْوِتْرُ، فَصَلُّوْهَا فِيْمَا بَيْنَ صَلَاةِ الْعِشَاءِ إِلَىٰ صَلَاةِ الْفَجْرِ».
অর্থ: আবু তামীম আজ-জায়শানী রাযি. সূত্রে বর্ণিত, (একদিন) আমর ইবনুল আস রাযি. জুমার খুতবায় লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, আবু বাছরাহ রাযি. আমাকে নবীজির এ হাদীস বর্ণনা করলেন যে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে একটি নামাজ বৃদ্ধি করে দিয়েছেন, আর তা হলো বিতর। অতএব ইশা ও ফজরের মধ্যবর্তী সময়ে তা আদায় করো।’ [৬]
ব্যাখ্যা: উপরোক্ত হাদীসদ্বয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিতর সম্পর্কে বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সেটি বৃদ্ধি করে দিয়েছেন এবং তা আদায়ের সময় নির্ধারণ করেছেন ইশা ও ফজরের মধ্যবর্তী সময়ে। প্রকৃত অর্থে বৃদ্ধি করা হয়েছে কথাটি তখনই বলা হয়, যখন বর্ধিত বস্তুটি যার ওপর বৃদ্ধি করা হয়েছে তার শ্রেণিভুক্ত হয়। আর এখানে বর্ধিত বস্তুটি হলো, বিতর নামাজ। যার ওপর বৃদ্ধি করা হয়েছে তা হলো ফরজ নামাজ। [৭] (কারণ নফল ও সুন্নাতের ক্ষেত্র প্রশস্ত। এখানে কোনো সীমাবদ্ধতা ও বাধ্যবাধকতা নেই, তাই বাড়ানো বা কমানোর প্রশ্নই আসে না।) সে হিসেবে বিতরও ফরজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলোচ্য বর্ণনাটি ‘খবরে ওয়াহেদ’ (তথা সীমিতসংখ্যক সূত্রে বর্ণিত) হওয়ায় তা দ্বারা সংশয়মুক্ত সুনিশ্চিত জ্ঞান অর্জন হয় না, তাই ফকীহগণ উসূলে ফিকহের আলোকে বিতরকে ফরজ না বলে ওয়াজিব বলেছেন। [৮] উল্লেখ্য, হযরত আমর ইবনুল আস রাযি. মিম্বরে দাঁড়িয়ে জুমার খুতবায় বিপুল জনসংখ্যার সামনে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ থেকেও তার সমধিক গুরুত্ব প্রতিভাত হয়।
চার.
عَنْ أَبِيْ أَيُّوْبَ الْأَنْصَارِيِّ، قَالَ: «الْوِتْرُ حَقٌّ عَلَىٰ كُلِّ مُسْلِمٍ، فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوْتِرَ بِخَمْسٍ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوْتِرَ بِثَلَاثٍ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوْتِرَ بِوَاحِدَةٍ فَلْيَفْعَلْ».
অর্থ: হযরত আবু আইয়ুব আল-আনসারী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মুসলমানের ওপর বিতর ওয়াজিব। সুতরাং যার ইচ্ছা পাঁচ রাকআত পড়ার সে পাঁচ রাকআত (দুই রাকআত নফল ও তিন রাকআত বিতর) পড়ে নেবে, যার ইচ্ছা তিন রাকআত পড়ার সে তিন রাকআত পড়ে নেবে আর যার ইচ্ছা এক রাকআত পড়ার সে এক রাকআত পড়ে নেবে।’ [৯]
হাদীসটির মান: হাদীসটি দুইভাবে বর্ণিত হয়েছে, মারফু ও মাওকুফ। কোনো কোনো মুহাদ্দিস মারফু হওয়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কিন্তু অধিকাংশ হাদীস বিশেষজ্ঞ মাওকুফ হওয়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন, এবং এটিই সঠিক। তাই সাহাবীর উক্তি হিসেবে সেটিকে আমরা এখানে উল্লেখ করেছি।
ব্যাখ্যা: এই হাদীসে ‘হাক্কুন’ حَقٌّ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, যার দুটি অর্থ হতে পারে।
এক. ওজূব وجوب (তথা অবশ্য পালনীয় বিধান),
দুই. সুবুত (ثبوت) (প্রমাণিত বিধান ওয়াজিব হোক কিংবা সুন্নাত)।
বিভিন্ন বর্ণনায় যেহেতু বিতর আদায়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং বিতর পরিত্যাগকারীদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি বাণী উচ্চারিত হয়েছে। তাই হানাফী ফকীহগণ এখানে ‘হাক্কুন’কে ওয়াজিব অর্থে নিয়েছেন। [১০] তাছাড়া অন্য একটি বর্ণনায় ‘হাক্কুন’ শব্দটির সাথে ‘ওয়াজিবুন’ শব্দও এসেছে (যদিও বর্ণনাটি সূত্রগতভাবে দুর্বল)।
পাঁচ.
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُصَلِّيْ ‌مِنَ ‌اللَّيْلِ، ‌فَإِذَا ‌أَوْتَرَ، قَالَ: «قُوْمِيْ فَأَوْتِرِيْ يَا عَائِشَةُ».
অর্থ: হযরত আয়িশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে (তাহাজ্জুদের) নামাজ আদায় করতেন। যখন বিতর আদায়ের ইচ্ছা করতেন, তখন (আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিতেন এবং) বলতেন, ‘হে আয়িশা! ওঠো, বিতর আদায় করে নাও।’ [১১]
ব্যাখ্যা: এখানে লক্ষ করার বিষয় হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাহাজ্জুদ পড়ার সময় আয়িশা রাযি. কে ডাকতেন না, কিন্তু যখন বিতর আদায়ের সময় হতো, তখন তাঁকে জাগিয়ে দিতেন এবং বিতর পড়ার জন্য আদেশ করতেন। বুঝা যায়, বিতর ওয়াজিব।
ছয়.
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: «اجْعَلُوْا آخِرَ صَلَاتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا».
অর্থ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘(তোমরা যদি কিয়ামুল লাইল আদায় কর, তাহলে) সর্বশেষে বিতর নামাজ আদায় করো।’ [১২]
ব্যাখ্যা: আহমদ আলী সাহারনপুরী রহ. এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, উক্ত হাদীসে দুইটি বিষয়ের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে:
এক. বিতর নামাজ ওয়াজিব (কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদেশসূচক বাক্য ব্যবহার করেছেন)।
দুই. তা শেষ রাতে আদায় করা মুস্তাহাব [১৩]
সাত.
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: «‌مَنْ نَامَ عَنْ وِتْرِهِ، أَوْ ‌نَسِيَهُ، فَلْيُصَلِّهِ إِذَا ذَكَرَهُ».
অর্থ: হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিতর আদায় না করে ঘুমিয়ে পড়ে কিংবা তা আদায় করতে ভুলে যায়, সে যেন স্মরণ হওয়ার পর তা আদায় করে নেয়।’ [১৪]
হাদীসটির মান: ইমাম হাকিম রহ. হাদীসটিকে ইমাম বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ বলেছেন। [১৫] হাফিয যাহাবী রহ.ও তাঁর সাথে একাত্মতা পোষণ করেছেন। শায়খ আলবানী রহ. বলেন, তাঁর সনদ সহীহ। [১৬]
ব্যাখ্যা: এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যথাসময়ে বিতর আদায় করতে না পারলে (ভুলে যাওয়ার কারণে কিংবা অন্য কোনো কারণে) পরবর্তী সময়ে তা কাযা করার আদেশ করেছেন। এ থেকে বুঝা যায়, বিতর ওয়াজিব। কারণ সুন্নাতের কাযা করতে হয় না।
উপসংহার:
বিতরের শরয়ী মান ও বিধান বর্ণনা করতে গিয়ে ওলামায়ে কেরামের মাঝে ফিকহী পরিভাষাগত ইখতিলাফ ও মতানৈক্য থাকলেও এ বিষয়ে সকলেই একমত যে, ফরজ নামাজের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নামাজ হলো বিতর। যার ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন কারো নিকটেই জায়েয নেই। এমনকি ইমাম মালেক রহ. বলেছেন, যে ব্যক্তি বিতর আদায় করবে না, সে শাস্তিযোগ্য হবে এবং তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না। অনুরূপ বক্তব্য ইমাম আহমদ রহ. থেকেও বর্ণিত হয়েছে। [১৭]
ওলামায়ে কেরামের মাঝে দৃষ্টিভঙ্গিগত মতানৈক্যের মূল কারণ হলো, সেসব ফকীহ ফরজ ও সুন্নাতের মাঝে শরয়ী বিধানের অন্য কোনো (পারিভাষিক) স্তর মানেন না; তারা বলেন, এটি ‘আকাদুস সুনান’ (তথা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত, যার ব্যাপারে শিথিলতার কোনো সুযোগ নেই)। পক্ষান্তরে যারা ফরজ ও সুন্নাতের মাঝে শরয়ী বিধানের আরেকটি স্তর মানেন-তারা বলেন, এটি ওয়াজিব (অর্থাৎ অবশ্য পালনীয় বিধান, যা ছেড়ে দেওয়া বৈধ নয়)।
কথাটি সহজ করে এভাবেও বলা যায়, যারা ফরজ ও ওয়াজিবের মাঝে পার্থক্য করেন না; বরং উভয়টিকে একই অর্থে ব্যবহার করেন—তারা বলেন, বিতর নামাজ সুন্নাত, তবে সুন্নাতের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। পক্ষান্তরে যারা উভয়ের মাঝে পার্থক্য করেন তারা বলেন, বিতরের নামাজ ওয়াজিব, ফরজ বা সুন্নত নয়। আর ওয়াজিব বলা হয়, এমন শরয়ী বিধানকে যার মান ও স্থান ফরজের চেয়ে নিচে এবং সুন্নাতের উপরে।
উল্লেখ্য, বিতর নামাজ ফরজ নয় এ ব্যাপারে সবাই একমত এবং তা সাধারণ সুন্নাত বা নফল নামাজের মতোও নয় (যে, যার ইচ্ছা পড়বে, যার ইচ্ছা পড়বে না) এ ব্যাপারেও সবাই একমত। শুধু একটি বিষয়ে তাদের মাঝে মতভেদ হয়েছে। তা হলো, ফিকহে ইসলামির (ইসলামি আইনশাস্ত্রের) পরিভাষায় এটির মান কী এবং তা কোন শব্দ দিয়ে ব্যক্ত করা হবে? যারা ফরজ ও ওয়াজিবের মাঝে শরয়ী বিধানের অন্য কোনো (পারিভাষিক) স্তর মানেন না; তারা বলেছেন, বিতর আকাদুস সুনান। আর যারা পার্থক্য করেন তারা বলেছেন, ওয়াজিব।
শাস্ত্রীয় জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি মাত্রই জানেন, এ মতভেদটি একান্তই তা’বীরী বা প্রকাশভঙ্গিমূলক মতভেদ, যা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা আদৌ উচিৎ নয়। [১৮] আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শরীয়তের ‘মেজাজ’ বুঝার তাওফীক দান করুন। আমিন।

----
[টীকাসমূহ]
[১] বিস্তারিত দেখুন, আল-হিদায়া', বিতর অধ্যায় ও ফয়যুল বারী, খ. ২, পৃ. ৪৮০
[২] (ক) আবু দাউদ, আস-সুনান, দারুল মিনহাজ লিন নাশর ওয়াত তাওযী’, জিদ্দা, সউদী আরব (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪৩১ হি. = ২০১০ খ্রি.), খ. ২ পৃ. ৩২৫, হাদীস: ১৪১৪;
(খ) আহমদ ইবনে হাম্বল, আল-মুসনদ, মুআসসিসাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবনান (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪৩৬ হি. = 2015 খ্রি.), খ. ৩৮, পৃ. ১২৭, হাদীস: ২৩০১৯
وقال الملا علي القارئ في شرح هذا الحديث: («الْوَتْرُ حَقٌّ»)، أَيٌ وَاجِبٌ كَمَا فِي رِوَايَةٍ («فَمَنْ لَـمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا»)، أَيْ مِنْ أَتْبَاعِنَا («‌الْوَتْرُ ‌حَقٌّ»)، أَيْ: فَرْضٌ عَمَلِيٌّ («فَمَنْ لَـمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا»)، أَيْ: مِنْ أَهْلِ طَرِيقَتِنَا («الْوَتْرُ حَقٌّ»)، أَيْ ثَابِتٌ وُجُوبُهُ بِالسُّنَّةِ («فَمَنْ لَـمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا»)، أَيْ: مِنْ أَهْلِ مِلَّتِنَا تَغْلِيْظًا وَوَعِيْدًا، وَإِنَّمَا حَمَلْنَا الْـحَدِيْثَ عَلَىٰ مَا ذَكَرْنَا فَإِنَّ التَّأْسِيْسَ أَوْلَىٰ مِنَ التَّأْكِيْدِ. مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح (ط المكتبة الإمدادية، كراتشي - الباكستان): 3 / 175.
তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
فِيهِ (أي في هذه الترجمة) إشارة إلىٰ أن «مَنْ» في قوله : «فَلَيْسَ مِنَّا» اتِّصَالِيَّةٌ، وَالْـمَعْنَىٰ: فَمَنْ لَـمْ يُوْتِرْ فَلَيْسَ بِمُتَّصِلٍ بِنَا وَبِهَدْيِنَا وَطَرِيقِنَا. قاله الطيبي في شرح المشكاة: الكاشف عن حقائق السنن (ط إدارة القرآن والعلوم الإسلامية – باكستان): 3 / 154-155.
[৩] (ক) হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সাহীহায়ন, দারুর রিসালাতুল আলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩৯ হি. = ২০১৮ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ৯৭, হাদীস: ১১৫৯-১১৬০; (খ) শুয়াইব আল-আরনাঊত, তা’লীক মুসনদে আহমদ, মুআসসিসাতুর রিসালা, সিরিয়া (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪৩৬ হি. = 2015 খ্রি.), খ. ৩৮, পৃ. ১২৭, হাদীস: ২৩০১৯; (গ) শুয়াইব আল-আরনাঊত, তা’লীক শরহে মুশকিলুল আসার, আর-রিসালাতুল আলামিয়া, দামেস্ক, সিরিয়া (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪৩১ হি. = ২০১০ খ্রি.), খ. ৩ পৃ. ৩৭৩, হাদীস: ১৩৪৩
[৪] قال العيني في شرح هذا الحديث: وقوله: حق أي واجب ثابت، والدليل عليه بقية الحديث؛ لأنها وعيد شديد، ولا يقال مثل هذا إلا في حق تارك فرض أو واجب ولاسيما وقد تأكد بالتكرار الكلام ثلاث مرات، ومثل هذا الكلام بهذه التأكيدات لـم يأت في حق السنن. (البناية شرح الهداية: 2 / 479)
[৫] (ক) হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সাহীহায়ন, দারুর রিসালাতুল আলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩৯ হি. = ২০১৮ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ৯৮, হাদীস: ১১৬১; (খ) আবু দাউদ, আস-সুনান, খ. ২ পৃ. ৩২৫, হাদীস ১৪১৩; (গ) আত-তিরমিযী, আস-সুনান, মাকতাবাতুল ফাতাহ বাংলাদেশ, ঢাকা, বাংলাদেশ, খ. ১, পৃ. ১০৩, হাদীস ৪০২; (ঘ) ইবনে মাজাহ, আস-সুনান, আর-রিসালাতুল আলমিয়া, দামেস্ক, সিরিয়া (দ্বিতীয় সংস্করণ: ১৪৩১ হি. = ২০১০ খ্রি.), খ. ২ পৃ. ২৪৪, হাদীস ১১৬৮
[৬] (ক) আহমদ ইবনে হাম্বল, আল-মুসনদ, খ. ৩৯, পৃ. ২৭১ হাদীস: ২৩৮৫১; (খ) আত-তাহাবী, শরহু মুশকিলিল আসার, আর-রিসালাতুল আলামিয়া, দামেস্ক সিরিয়া (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪৩১ হি. = ২০১০ খ্রি.), খ. ১১ পৃ. ৩৫৫, হাদীস: ৪৪৯২। শায়খ শুআইব আল-আরনাঊত  উভয় কিতাবের তা’লীকে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
[৭] قال الشيخ بدر عالم الميرتهي  نقلًا عن الإمام الكشميري: والزيادةُ لا تكون إلا مِن جنس المَزيِد عليه، وهو ههنا الفرائض، لأن النوافل غيرُ محصورةٍ فتعين أن يكون المزيدُ عليه الفرائض. ومقتضاه أن يكون الوِتْرُ واجبًا. ولكن لما كان الحديثُ ظنيًا نَزَّلنا من الفَرْضية إلى الوجوب، وقلنا به. (فى هامش «فيض الباري»: 2 / 480)
[৮]فإن قيل: إن المستدل بحديث الزيادة علىٰ وجوب الوتر يلزمه أن يقول: بوجوب الركعتين قبل الفجر، لما روي البيهقي (4463) عن أبي سعيد الخدري  مرفوعا: «إِنَّ اللهَ زَادَكُمْ صَلَاةً إِلَىٰ صَلَاتِكُمْ هِيَ خَيْرٌ لَكُمْ مِنْ حُمْرِ النَّعَمِ أَلَا وَهِيَ الرَّكْعَتَانِ قَبْلَ صَلَاةِ الْفَجْرِ». (السنن الكبرىٰ: 3 / 138).
قلنا: إنا لم نستدل علىٰ وجوب الوتر بلفظ الزيادة فحسب بل باهتمام النبي ﷺ وأصحابه بعده ببيان تلك الزيادة وإيقاظه  أهله للوتر دون صلاة الليل وإيجاب القضاء علىٰ من فاته وافرازها بالقراءة وتعيين وقتها وما إلىٰ ذلك من القرائن ولم يوجد مثله فى ركعتي الفجر فلم نقل بوجوبها علىٰ أن الكشميري  قال: إن لفظ «أمدكم» في سنتي الفجر من وهم الراوي فإنه في حق الوتر وأدخله الراوي في سنتي الفجر من وهمه وكلا الحديثين مرويان عن أبي سعيد الخدري فيحتمل زيادة احتمال لوهم الراوي. (إعلاء السنن 6 / 7-8، والعرف الشذي بذيل سنن الترمذي المطبوعة من مكتبة الفتح بنغلاديش تحت: باب ماجاء في فضل الوتر بتصرف يسير وزيادة يسيرة)
[৯] ক) আবু দাউদ, আস-সুনান, খ. ২ পৃ. ৩২৭, হাদীস ১৪১৭; (খ) আন-নাসায়ী, আস-সুনান, মাকতাবাতুল ফাতাহ বাংলাদেশ, ঢাকা, বাংলাদেশ, খ. ১, পৃ. ১৯২, হাদীস: ১৭১১
[১০] قال الطيبي في شرح هذا الحديث: الْـحَقُّ يَجِيءُ ‌بِمَعْنَى ‌الثُّبُوْتِ ‌وَالْوُجُوْبِ، فَذَهَبَ أَبُوْ حَنِيفَةَ إِلَى الثَّانِي، وَالشَّافِعِيُّ إِلَى الْأَوَّلِ، أَيْ: ثَابِتٌ فِي الشَّرْعِ وَالسُّنَّةِ، وَفِيْهِ نَوْعُ تَأْكِيدٍ. الكاشف عن حقائق السنن (ط: إدارة القرآن والعلوم الإسلامية، كراتشي – الباكستان): 3 / 150
وقال الملا علي القارئ في شرح هذا الحديث: قَالَ ابْنُ حَجَرٍ: أُخِذَ مِنْهُ وَمِنَ الْـخَبَرِ الصَّحِيحِ أَيْضًا: «أَوْتِرُوا فَإِنَّ اللهَ وَتْرٌ يُحِبُّ الْوَتْرَ» وَرَجَّحَ أَبُوْ حَنِيفَةَ وُجُوْبَ الْوَتْرِ، وَاعْتَرَضَهُ ابْنُ الْمُنْذِرِ وَغَيْرُهُ بِأَنَّهُ لَـمْ يُوَافِقْهُ عَلَىٰ وُجُوْبِهِ أَحَدٌ. قُلْتُ: الْمُوَافَقَةُ لَيْسَتْ شَرْطًا فِي الْـمَسْأَلَةِ الِاجْتِهَادِيَّةِ. مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح (ط المكتبة الإمدادية، كراتشي – الباكستان): 3 / 175
صحيح ابن حبان - محققا (6 / 178): وفي «بدائع الفوائد» لابن القيم 3/4: ويستفاد كون الأمر المطلق للوجوب من ذم مَن خالفه، ‌ويستفاد ‌الوجوب ‌بالأمر تارة، وبالتصريح بالإيجاب، ولفظه «علىٰ» و«حق على العباد» و«على المؤمنين» وترتيب الذم.
[১১] মুসলিম, আস-সহীহ, খ. 1, পৃ. 511, হাদীস: ৭৪৪
[১২] (ক) মুসলিম, আস-সহীহ, খ. 1, পৃ. 517, হাদীস: ৭৫১; (খ) আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. 2, পৃ. 25, হাদীস: ৯৮৮; (গ) ইবনে আবু শায়বা, আল-মুসান্নাফ ফিল আহাদীস ওয়াল আসার, খ. 2, পৃ. 80, হাদীস: 6702; (ঘ) আবদুর রাযযাক, আল-মুসান্নাফ, হাদীস: ৬৭৩; (ঙ) আবু দাউদ, আস-সুনান, খ. 2, পৃ. 67, হাদীস: ১৪৩8
[১৩] হাশিয়ায়ে বুখারী, মাকতাবাতুল ফাতাহ বাংলাদেশ, ঢাকা, বাংলাদেশ, খ. ১, পৃ. ১৩৬, হাশিয়া: ৪
[১৪] (ক) আবু দাউদ, আস-সুনান, খ. 2, পৃ. 750, হাদীস ১৪২৬; (খ) আত-তিরমিযী, আস-সুনান, হাদীস: ৪৬৬; (গ) ইবনে মাজাহ, আস-সুনান, হাদীস: ১১৮৮
[১৫] হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সাহীহায়ন, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: 1411 হি. = ১৯৯০ খ্রি.), খ. পৃ. ৪৪৩, হাদীস: ১১২৭
[১৬] আল-আলবানী, সহীহ আবু দাউদ, মুআসসিসাতু গারাস, কুয়েত, খ. ৫, পৃ. ১৭৫, হাদীস, ১২৮৫
[১৭] وفي «المغني» لابن قدامة 2 / 161: قَالَ أَحْمَدُ: مَنْ تَرَكَ الْوِتْرَ عَمْدًا فَهُوَ رَجُلُ سَوْءٍ، وَلَا يَنْبَغِي أَنْ تُقْبَلَ لَهُ شَهَادَةٌ. وَأَرَادَ الْـمُبَالَغَةَ فِيْ تَأْكِيدِهِ؛ لِـمَا قَدْ وَرَدَ فِيهِ مِنْ الْأَحَادِيْثِ فِي الْأَمْرِ بِهِ، وَالْـحَثِّ عَلَيْهِ....
وحكى ابن حزم أن مالكا قال: من تركه أدب، وكانت جرحة في شهادته. انتهى، النقل من حاشية «صحيح ابن حبان» من مطبوعة الرسالة العالمية: (6 / 178).
[১৮] قال الكشميري : واتفقوا علىٰ عدم جواز تركها أيضا. فحينئذ لم يبق نزاع إلا في إطلاق لفظ الوجوب، وهذا كما ترىٰ مما لا ينبغي فيه النزاع. (فيض الباري: 2 / 480-481).
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান