আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

২. রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৪
কুবা মসজিদে নামায আদায়ের ফযীলত।
৩২৪. মুহাম্মাদ ইবনে’ল আলা আবু কুরায়ব ও সুফিয়ান ইবনে ওয়াকী (রাহঃ) ..... বনু খাতমা-এর মাওলা বা আযাদকৃত দাস আবুল আবরাদ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ আমি রাসূল (ﷺ)-এর অন্যতম সাহাবী উসায়দ ইবনে যুহাইর আল-আনসারী (রাযিঃ)-কে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ কুবা মসজিদে নামায আদায় করা উমরা আদায় করার মত।
باب مَا جَاءَ فِي الصَّلاَةِ فِي مَسْجِدِ قُبَاءٍ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ أَبُو كُرَيْبٍ، وَسُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَبْرَدِ، مَوْلَى بَنِي خَطْمَةَ أَنَّهُ سَمِعَ أُسَيْدَ بْنَ ظُهَيْرٍ الأَنْصَارِيَّ، وَكَانَ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الصَّلاَةُ فِي مَسْجِدِ قُبَاءٍ كَعُمْرَةٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُسَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَلاَ نَعْرِفُ لأُسَيْدِ بْنِ ظُهَيْرٍ شَيْئًا يَصِحُّ غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ وَلاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ . وَأَبُو الأَبْرَدِ اسْمُهُ زِيَادٌ مَدِينِيٌّ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কুবা মদীনা মুনাউওয়ারা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শহর। এক কালে এখানে একটি কুয়া ছিল। কুয়াটির নাম ছিল কুবা। সে নামেই জনপদটির নামকরণ করা হয়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা মুকারামা থেকে হিজরত করে প্রথমে ১৪ দিন এ জনপদেই অবস্থান করেন। তিনি এখানে পৌঁছেছিলেন ১৩ নববী বর্ষের ৮ রবীউল আউওয়াল সোমবার মোতাবেক ২৩ ডিসেম্বর ৬২২ খ্রীষ্টাব্দে। তিনি আমর ইবন আওফ গোত্রের নেতা কুলছুম ইবন হাদম রাযি.-এর বাড়িতে উঠেছিলেন।

যেসকল সাহাবী প্রথমে হিজরত করে এসেছিলেন, তারা কুবায় অবস্থানকালে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও কুবায় পৌঁছে এ মসজিদেই নামায আদায় করতে থাকেন। এ মসজিদটির অপর নাম মাসজিদুত্‌-তাকওয়া। এ মসজিদ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-

لَمَسْجِدٌ أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَى مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ أَحَقُّ أَنْ تَقُومَ فِيهِ فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ

যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে, সেটাই তোমার দাঁড়ানোর বেশি উপযুক্ত। তাতে এমন লোক আছে, যারা পাক-পবিত্রতাকে বেশি পসন্দ করে। আল্লাহ পাক-পবিত্র লোকদের পসন্দ করেন।'২৬৫

হযরত উছমান রাযি., হযরত উমর ইবন আব্দুল আযীয রহ., উছমানী খলীফা সুলতান মাহমূদ খান ও বাদশা ফয়সাল যথাক্রমে মসজিদটির সম্প্রসারণের কাজ করেন। ১৫ হাজার বর্গমিটারের বিশাল এ মসজিদে বর্তমানে একসঙ্গে ১০ হাজার মুসল্লী নামায পড়তে পারে।

হাদীসে আছে যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি শনিবারে এ মসজিদে এসে দু'রাকআত নামায পড়তেন। কখনও পায়ে হেঁটে আসতেন এবং কখনও সওয়ার হয়ে।
এ মসজিদের অনেক ফযীলত। প্রতি শনিবারে এ মসজিদে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনই এর ফযীলতের জন্য যথেষ্ট।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

খ. কুবা মসজিদে প্রতি শনিবার সকাল বেলা যাওয়া ও নফল নামায পড়া মুস্তাহাব।

খ. এ হাদীছ দ্বারা মুবারক ও পবিত্র স্থানসমূহ যিয়ারতের প্রতি উৎসাহ পাওয়া যায়।

২৬৫. সূরা তাওবা (৯), আয়াত ১০৮

২৬৬. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩২৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৪১১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা, হাদীছ নং ৭৫২৯; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৫৯
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ৩২৪ | মুসলিম বাংলা