আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪৭- সৃষ্টি জগতের সূচনা
হাদীস নং: ২৯৭৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩২০৩
১৯৮৬. সূর্য ও চন্দ্র উভয়ে নির্ধারিত কক্ষপথে আবর্তন করে। এর জন্য মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, উভয়ের আবর্তন চাকার আবর্তনের অনুরূপ। আর অন্যেরা বলেন, উভয় এমন এক নির্দিষ্ট হিসাব ও স্থানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যা তারা অর্থাৎ চন্দ্র-সূর্য লঙ্ঘন করতে পারে না। حُسْبَانٌ হল حِسَابٍ শব্দের বহুবচন, যেমন شِهَابٍ এর বহুবচন ضُحَاهَا — , شُهْبَانٍ এর অর্থ জ্যোতি। أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ চন্দ্র-সূর্যের একটির জ্যোতি অপরটির জ্যোতিকে ঢাকতে পারে না, আর তাদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। سَابِقُ النَّهَارِ রাত দিনকে দ্রুত অতিক্রম করে। উভয়ে দ্রুত অতিক্রম করতে চায়। نَسْلَخُ আমি উভয়ের একটিকে অপরটি হতে বের করে আনি আর তাদের প্রতিটি চালিত করা হয় وَاهِيَةٌ এবং وَهْيُهَا এর অর্থ তার বিদীর্ণ হওয়া। أَرْجَائِهَا তার সেই অংশ যা বিদীর্ণ হয়নি আর তারা তার উভয় পার্শ্বে থাকবে। যেমন তোমার উক্তি عَلَى أَرْجَاءِ الْبِئْرِ কূপের তীরে وَجَنَّ أَغْطَشَ অন্ধকারে ছেয়ে গেল। হাসান বসরী (রাহঃ) বলেন كُوِّرَتْ অর্থ লেপটিয়ে দেয়া হবে, যাতে তার জ্যোতি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর বলা হয়ে থাকে وَاللَّيْلِ وَمَا وَسَقَ এর অর্থ আর শপথ রজনীর এবং তার যে জীবজন্তু একত্রিত করল। اتَّسَقَ বরাবর হল। بُرُوجًا চন্দ্র সূর্যের কক্ষ ও নির্ধারিত স্থান। الْحَرُورُ গরম বাতাস যা দিনের বেলায় সূর্যের সাথে প্রবাহিত হয়। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, حَرُورُ রাত্রিবেলার আর سَمُومُ দিনের বেলার লু হাওয়া। বলা হয় يُولِجُ অর্থ প্রবিষ্ট করে বা করবে وَلِيجَةً অর্থ এমন প্রতিটি বস্তু যা তুমি অন্যটির মধ্যে ঢুকিয়েছ।
২৯৭৬। ইয়াহয়া ইবনে বুকাইর (রাহঃ) .... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, যেদিন সূর্যগ্রহণ হল, সেদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামাযে দাঁড়ালেন। তারপর তাকবীর বললেন, এবং দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন। তারপর দীর্ঘ রুকু করলেন এরপর তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ এবং তিনি পূর্বের ন্যায় দাঁড়ালেন। আর দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন কিন্তু তা প্রথম কিরাআত থেকে কম ছিল। এরপর তিনি দীর্ঘক্ষণ রুকু করলেন কিন্তু তা প্রথম রাক'আতের তুলনায় কম ছিল। তারপর তিনি দীর্ঘ সিজদা করলেন। তিনি শেষ রাক'আতেও অনুরূপই করলেন,পরে সালাম ফিরালেন। এ সময় সূর্য উজ্জ্বল হয়ে গিয়েছে। তখন তিনি লোকজনকে লক্ষ্য করে খুতবা দিলেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কে বললেন, অবশ্য এ দু’টি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মধ্য থেকে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ-চন্দ্রগ্রহণ হয় না। অতএব যখনই তোমরা তা সংঘঠিত হতে দেখবে তখনই নামাযে ভয়-ভীতি নিয়ে ধাবিত হবে।
بَابُ صِفَةِ الشَّمْسِ وَالقَمَرِ بِحُسْبَانٍ قَالَ مُجَاهِدٌ: «كَحُسْبَانِ الرَّحَى» وَقَالَ غَيْرُهُ: بِحِسَابٍ وَمَنَازِلَ لاَ يَعْدُوَانِهَا، " حُسْبَانٌ: جَمَاعَةُ حِسَابٍ، مِثْلُ شِهَابٍ وَشُهْبَانٍ " {ضُحَاهَا} [النازعات: 29]: «ضَوْءُهَا»، {أَنْ تُدْرِكَ القَمَرَ} [يس: 40] «لاَ يَسْتُرُ ضَوْءُ أَحَدِهِمَا ضَوْءَ الآخَرِ، وَلاَ يَنْبَغِي لَهُمَا ذَلِكَ» {سَابِقُ النَّهَارِ} [يس: 40]: «يَتَطَالَبَانِ، حَثِيثَيْنِ»، {نَسْلَخُ} [يس: 37]: «نُخْرِجُ أَحَدَهُمَا مِنَ الآخَرِ وَنُجْرِي كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا»، {وَاهِيَةٌ} [الحاقة: 16]: «وَهْيُهَا تَشَقُّقُهَا»، {أَرْجَائِهَا} [الحاقة: 17]: " مَا لَمْ يَنْشَقَّ مِنْهَا، فَهُمْ عَلَى حَافَتَيْهَا، كَقَوْلِكَ: عَلَى أَرْجَاءِ البِئْرِ "، {أَغْطَشَ} [النازعات: 29] وَ {جَنَّ} [الأنعام: 76]: «أَظْلَمَ» وَقَالَ الحَسَنُ: {كُوِّرَتْ} [التكوير: 1]: «تُكَوَّرُ حَتَّى يَذْهَبَ ضَوْءُهَا»، {وَاللَّيْلِ وَمَا وَسَقَ} [الانشقاق: 17]: «جَمَعَ مِنْ دَابَّةٍ»، {اتَّسَقَ} [الانشقاق: 18]: «اسْتَوَى»، {بُرُوجًا} [الحجر: 16]: «مَنَازِلَ الشَّمْسِ وَالقَمَرِ»، {الحَرُورُ} [فاطر: 21]: «بِالنَّهَارِ مَعَ الشَّمْسِ» وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ، وَرُؤْبَةُ: «الحَرُورُ بِاللَّيْلِ، وَالسَّمُومُ بِالنَّهَارِ» يُقَالُ: {يُولِجُ} [الحج: 61]: «يُكَوِّرُ»، {وَلِيجَةً} [التوبة: 16] «كُلُّ شَيْءٍ أَدْخَلْتَهُ فِي شَيْءٍ»
3203 - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَخْبَرَتْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ، قَامَ فَكَبَّرَ وَقَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَقَالَ: «سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ» ، وَقَامَ كَمَا هُوَ، فَقَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً، وَهِيَ أَدْنَى مِنَ القِرَاءَةِ الأُولَى، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، وَهِيَ أَدْنَى مِنَ الرَّكْعَةِ الأُولَى، ثُمَّ سَجَدَ سُجُودًا طَوِيلًا، ثُمَّ فَعَلَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ سَلَّمَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَخَطَبَ النَّاسَ، فَقَالَ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ وَالقَمَرِ: «إِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلاَةِ»
