কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
৩৫. যুহদ-দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তির বর্ণনা
হাদীস নং: ৪১৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৮৭
সহনশীলতা প্রসঙ্গে
৪১৮৭। আবু কুরায়ব মুহাম্মাদ ইব্ন আলী আল-হামদানী (রাহঃ)....... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কাছে আব্দুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধিবর্গ এসেছেন, অথচ আমাদের কেউ দেখছিল না। আমরা এ অবস্থায় ছিলাম, হঠাৎ তারা এসে পৌঁছলেন, এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট হাযির হলেন। তবে আশাজ্জ আসরী নামক জনৈক ব্যক্তি অবশিষ্ট ছিলেন, পরে তিনিও এসে একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবতরণ করে তার উষ্ট্রী বাঁধলেন। নিজের কাপড় চোপড় এক পার্শ্বে রাখলেন। এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর নিকট হাযির হলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাকে বললেন, হে আশাজ্জ! তোমার মধ্যে দু'টো ভাল অভ্যাস রয়েছে, যা আল্লাহ তা'আলা খুবই পছন্দ করেন। একটি সহনশীলতা, অপরটি আত্মসম্মানবোধ। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! এই জিনিসটি কি জন্মগতভাবেই আমার মধ্যে রয়েছে, না নতুন করে সংযোজিত হয়েছে? তিনি বললেন, না, নতুন করে নয় বরং সৃষ্টিগতভাবেই তোমার মধ্যে বিদ্যমান।
بَاب الْحِلْمِ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ دِينَارٍ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ عُمَارَةَ الْعَبْدِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " أَتَتْكُمْ وُفُودُ عَبْدِ الْقَيْسِ " . وَمَا يَرَى أَحَدٌ فَبَيْنَا نَحْنُ كَذَلِكَ إِذْ جَاءُوا فَنَزَلُوا فَأَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَبَقِيَ الأَشَجُّ الْعَصَرِيُّ فَجَاءَ بَعْدُ فَنَزَلَ مَنْزِلاً فَأَنَاخَ رَاحِلَتَهُ وَوَضَعَ ثِيَابَهُ جَانِبًا ثُمَّ جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَا أَشَجُّ إِنَّ فِيكَ لَخَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ الْحِلْمَ وَالتُّؤَدَةَ " . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَشَىْءٌ جُبِلْتُ عَلَيْهِ أَمْ شَىْءٌ حَدَثَ لِي قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " بَلَ شَىْءٌ جُبِلْتَ عَلَيْهِ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর দু'টি সদগুণের প্রশংসা করে বলেন যে, এ দু'টি আল্লাহ তা'আলা পসন্দ করেন। গুণদু'টি হল- الحِلْمُ وَالْأَنَاةُ (সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতা)। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসা করলে হযরত আশাজ্জ রাযি. জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ দু'টি গুণ কি আমার মধ্যে নতুন জন্ম নিয়েছে, নাকি আগে থেকেই ছিল? তিনি বললেন, আগে থেকেই ছিল। তখন তিনি এই বলে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করলেন যে, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এমন দু'টি স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তিনি পসন্দ করেন।
হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর চরিত্রে সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতার গুণ বিদ্যমান ছিল। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রশংসা করেছেন। বোঝা গেল এ দু'টি প্রশংসনীয় গুণ, যা প্রত্যেক মুমিনের অর্জন করা উচিত।
এক বর্ণনায় আছে-
الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى، وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘ধীরস্থিরতা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (জামে' তিরমিযী: ২০১২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৫৭০২; তাবারানী, মাকারিমুল আখলাক: ২৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৯৮)
বলা হয়ে থাকে, তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে পাঁচটি ক্ষেত্র ছাড়া- অতিথি উপস্থিত হলে খাবার পরিবেশন করা, কেউ মারা গেলে তার দাফন-কাফন করা, কন্যাসন্তান বালেগা হলে তার বিবাহ সম্পন্ন করা, দেনা পরিশোধ করা এবং কোনও গুনাহ হয়ে গেলে তা থেকে তাওবা করা।
প্রকাশ থাকে যে, তাড়াহুড়া নিন্দনীয় দুনিয়াবী কাজে। দীনের কাজে বিলম্ব করতে নেই। সুযোগ হওয়া মাত্রই করে ফেলা উচিত। হযরত উমর রাযি. বলেন, ধীরস্থিরতা সব কাজেই ভালো, তবে আখিরাতের কাজে নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও কাজে তাড়াহুড়া করতে নেই। ধীরস্থিরভাবে করলেই কাজ সুন্দর ও সঠিক হয়।
খ. অন্যের প্রতি সহনশীল থাকা একান্ত কর্তব্য। এটা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক।
হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর চরিত্রে সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতার গুণ বিদ্যমান ছিল। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রশংসা করেছেন। বোঝা গেল এ দু'টি প্রশংসনীয় গুণ, যা প্রত্যেক মুমিনের অর্জন করা উচিত।
এক বর্ণনায় আছে-
الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى، وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘ধীরস্থিরতা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (জামে' তিরমিযী: ২০১২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৫৭০২; তাবারানী, মাকারিমুল আখলাক: ২৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৯৮)
বলা হয়ে থাকে, তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে পাঁচটি ক্ষেত্র ছাড়া- অতিথি উপস্থিত হলে খাবার পরিবেশন করা, কেউ মারা গেলে তার দাফন-কাফন করা, কন্যাসন্তান বালেগা হলে তার বিবাহ সম্পন্ন করা, দেনা পরিশোধ করা এবং কোনও গুনাহ হয়ে গেলে তা থেকে তাওবা করা।
প্রকাশ থাকে যে, তাড়াহুড়া নিন্দনীয় দুনিয়াবী কাজে। দীনের কাজে বিলম্ব করতে নেই। সুযোগ হওয়া মাত্রই করে ফেলা উচিত। হযরত উমর রাযি. বলেন, ধীরস্থিরতা সব কাজেই ভালো, তবে আখিরাতের কাজে নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও কাজে তাড়াহুড়া করতে নেই। ধীরস্থিরভাবে করলেই কাজ সুন্দর ও সঠিক হয়।
খ. অন্যের প্রতি সহনশীল থাকা একান্ত কর্তব্য। এটা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: