কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৩৪. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতপূর্ব আলামতের বর্ণনা

হাদীস নং: ৪০৭৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৭৪
দাজ্জালের ফিতনা, ঈসা ইবন মারইয়ামের অবতরণ ও ইয়াজুজ-মাজুজের বের হওয়া
৪০৭৪। মুহাম্মাদ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইবন নুমায়র (রাহঃ)...... ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাত আদায় করে মিম্বরে উঠলেন, অথচ জুমু'আর দিন ব্যতিরেকে এর পূর্বে তিনি মিম্বরে আরোহন করতেন না। ব্যাপারটি সাহাবা কিরামের নিকট কঠিন মনে হয়। তাদের মাঝে কেউ দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং কেউ বসে ছিলেন। তিনি নিজের হাত দিয়ে তাদের ইশারা করলেন যে, তোমরা বসে পড়ো। (তারপর বললেনঃ) আল্লাহর শপথ! আমি আমার এ স্থানে তোমাদের কোন কাজে উদ্বুদ্ধ করা অথবা ভয় দেখাবার জন্য দাড়াইনি। তবে তামীম দারী (রাযিঃ) আমার কাছে এসেছেন। তিনি আমাকে এমন একটি খবর দিয়েছেন, যার আনন্দ ও প্রশান্তি আমাকে দুপুরের কায়লুলা থেকে বিরত রেখেছে। আমি তোমাদের নবীর এ খুশীর কথা তোমাদের কাছে ব্যক্ত করতে পছন্দ করেছি। জেনে রাখ। তামীম দারী (রাযিঃ) এর এক চাচাতো ভাই আমাকে এ খবর দিয়েছে যে, প্রবল বায়ু তাদেরকে এমন এক দ্বীপে নিয়ে গেল, যা তারা চিনতো না। তারা জাহাজের ছোট নৌকাগুলোতে বসলো, তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লো। হঠাৎ তারা সেখানে ঘন কৃষকেশধারী একটা কিছু দেখতে পেল। তখন তারা তাকে প্রশ্ন করলোঃ তুমি কে? সে বললোঃ আমি গুপ্তচর, (আমি দাজ্জালের গোয়েন্দা)। তারা বললোঃ আমাদেরকে তার সম্পর্কে কিছু তথ্য দাও। সে বললোঃ আমি তোমাদের নিকট কোন খবর সরবরাহ করবো না এবং তোমাদের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞেস করবো না। তবে তোমরা ঐ দূরে ইবাদতখানায় যেতে পরো, যা তোমরা দেখতে পাচ্ছো। তারপর তারা সেখানে গেল। কেননা সেখানে এক ব্যক্তি রয়েছে, যে তোমাদের সাথে কথা বলতে খুবই আগ্রহী আর্থাৎ তোমাদের কাছে প্রশ্ন করতে এবং তোমাদের তথ্য সরবরাহ করতে অত্যন্ত আগ্রহী। তারপর তারা সেখানে গেল এবং তার নিকট উপস্থিত হলো। তারা সেখানে অতি বৃদ্ধ জনৈক ব্যক্তিকে দেখতে পেলো। সে বয়সের ভারে কাঁপছিল। সে তার দূঃখ-দুর্দশাও চিন্তার প্রকাশ করলো, সে তাদেরকে বললোঃ তোমরা কোথা থেকে এসেছো? তারা বললোঃ শাম সিরিয়া থেকে। সে বললোঃ আরবেরা কি করছে? তারা বললোঃ আমরা তো আরব লোক, যাদের কাছে তুমি প্রশ্ন করছো? সে বললোঃ এই ব্যক্তি কি করেছে যে তোমাদের মাঝে আবির্ভূত হয়েছে? (অর্থাৎ সর্বশেষ নবী (ﷺ))। তারা বললোঃ ভাল কাজ করেছে। তিনি কাওমের অবস্থা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ তা'আলা তাঁকে তাদের উপরে সাহায্য করেছেন। আজ তারা একই মতাদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাদের ইলাহ্ এক এবং দীনও এক। সে বললোঃ যুগার নহরের খবর কি? (শাম দেশের একটি গ্রামের নাম।) তারা বললোঃ ভালই আছে। লোকেরা সেখানে থেকে খেত খামারে পানি সিঞ্চন করে এবং সেখান থেকে খাবার পানিও সংগ্রহ করে। সে বললোঃ আম্মান ও বায়সানের (সিরিয়ার দু'টি শহর) মধ্যবর্তী খেজুর বাগানের কি অবস্থা? তারা বললোঃ প্রতি বছর সেই বাগানে প্রচুর ফল ধরে। অতঃপর সে তাবরিয়ার জলাশয়ের অবস্থা কি? তারা বললো, তার উভয় তীর বেয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাবী বলেনঃ এতে সে তিনটি দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপর বললোঃ যদি আমি আমার এই বন্ধীদশা থেকে মুক্তি পাই, তাহলে তাইয়্যেবাহ (মদীনা মুনাওয়ারা) ব্যতিরেকে সর্বত্র আমার এ দু'পায়ে বিচরণ করতাম; কিন্তু সেখানে প্রবেশে করার ক্ষমতা আমার নেই। নবী (ﷺ) বললেনঃ এই কারণেই আমি অধিক আনন্দিত ও উৎফুল্ল হয়েছি। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, এই সেই পবিত্র শহর। মদীনার গলিপথ হোক, কিংবা রাজপথ, নরম স্থান হোক কিংবা কংকরময় স্থান সর্বত্রই একজন ফিরিশতা কিয়ামত পর্যন্ত উলঙ্গ তলোয়ার হাতে মোতায়েন রয়েছে।
بَاب فِتْنَةِ الدَّجَالِ وَخُرُوجِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَخُرُوجِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا إِسْمَعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ عَنْ مُجَالِدٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ قَالَتْ صَلَّى رَسُولُ اللهِ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ وَصَعِدَ الْمِنْبَرَ وَكَانَ لَا يَصْعَدُ عَلَيْهِ قَبْلَ ذَلِكَ إِلَّا يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَاشْتَدَّ ذَلِكَ عَلَى النَّاسِ فَمِنْ بَيْنِ قَائِمٍ وَجَالِسٍ فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ بِيَدِهِ أَنْ اقْعُدُوا فَإِنِّي وَاللهِ مَا قُمْتُ مَقَامِي هَذَا لِأَمْرٍ يَنْفَعُكُمْ لِرَغْبَةٍ وَلَا لِرَهْبَةٍ وَلَكِنَّ تَمِيمًا الدَّارِيَّ أَتَانِي فَأَخْبَرَنِي خَبَرًا مَنَعَنِي الْقَيْلُولَةَ مِنْ الْفَرَحِ وَقُرَّةِ الْعَيْنِ فَأَحْبَبْتُ أَنْ أَنْشُرَ عَلَيْكُمْ فَرَحَ نَبِيِّكُمْ أَلَا إِنَّ ابْنَ عَمٍّ لِتَمِيمٍ الدَّارِيِّ أَخْبَرَنِي أَنَّ الرِّيحَ أَلْجَأَتْهُمْ إِلَى جَزِيرَةٍ لَا يَعْرِفُونَهَا فَقَعَدُوا فِي قَوَارِبِ السَّفِينَةِ فَخَرَجُوا فِيهَا فَإِذَا هُمْ بِشَيْءٍ أَهْدَبَ أَسْوَدَ قَالُوا لَهُ مَا أَنْتَ قَالَ أَنَا الْجَسَّاسَةُ قَالُوا أَخْبِرِينَا قَالَتْ مَا أَنَا بِمُخْبِرَتِكُمْ شَيْئًا وَلَا سَائِلَتِكُمْ وَلَكِنْ هَذَا الدَّيْرُ قَدْ رَمَقْتُمُوهُ فَأْتُوهُ فَإِنَّ فِيهِ رَجُلًا بِالْأَشْوَاقِ إِلَى أَنْ تُخْبِرُوهُ وَيُخْبِرَكُمْ فَأَتَوْهُ فَدَخَلُوا عَلَيْهِ فَإِذَا هُمْ بِشَيْخٍ مُوثَقٍ شَدِيدِ الْوَثَاقِ يُظْهِرُ الْحُزْنَ شَدِيدِ التَّشَكِّي فَقَالَ لَهُمْ مِنْ أَيْنَ قَالُوا مِنْ الشَّامِ قَالَ مَا فَعَلَتْ الْعَرَبُ قَالُوا نَحْنُ قَوْمٌ مِنْ الْعَرَبِ عَمَّ تَسْأَلُ قَالَ مَا فَعَلَ هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي خَرَجَ فِيكُمْ قَالُوا خَيْرًا نَاوَى قَوْمًا فَأَظْهَرَهُ اللهُ عَلَيْهِمْ فَأَمْرُهُمْ الْيَوْمَ جَمِيعٌ إِلَهُهُمْ وَاحِدٌ وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ قَالَ مَا فَعَلَتْ عَيْنُ زُغَرَ قَالُوا خَيْرًا يَسْقُونَ مِنْهَا زُرُوعَهُمْ وَيَسْتَقُونَ مِنْهَا لِسَقْيِهِمْ قَالَ فَمَا فَعَلَ نَخْلٌ بَيْنَ عَمَّانَ وَبَيْسَانَ قَالُوا يُطْعِمُ ثَمَرَهُ كُلَّ عَامٍ قَالَ فَمَا فَعَلَتْ بُحَيْرَةُ الطَّبَرِيَّةِ قَالُوا تَدَفَّقُ جَنَبَاتُهَا مِنْ كَثْرَةِ الْمَاءِ قَالَ فَزَفَرَ ثَلَاثَ زَفَرَاتٍ ثُمَّ قَالَ لَوْ انْفَلَتُّ مِنْ وَثَاقِي هَذَا لَمْ أَدَعْ أَرْضًا إِلَّا وَطِئْتُهَا بِرِجْلَيَّ هَاتَيْنِ إِلَّا طَيْبَةَ لَيْسَ لِي عَلَيْهَا سَبِيلٌ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ إِلَى هَذَا يَنْتَهِي فَرَحِي هَذِهِ طَيْبَةُ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا فِيهَا طَرِيقٌ ضَيِّقٌ وَلَا وَاسِعٌ وَلَا سَهْلٌ وَلَا جَبَلٌ إِلَّا وَعَلَيْهِ مَلَكٌ شَاهِرٌ سَيْفَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ৪০৭৪ | মুসলিম বাংলা