কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৩৪. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতপূর্ব আলামতের বর্ণনা

হাদীস নং: ৪০০৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪০০৩
নারী জাতির ফিতনা
৪০০৩। মুহাম্মাদ ইবন (রাহঃ)...... আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ হে নারী সমাজ! তেমরা অধিক সাদাকাহ দিবে এবং অধিক পরিমাণে ইতিগফার করবে। কেননা, আমি তোমাদের অধিকাংশকে জাহান্নামের কীট হিসাবে দেখেছি। তখন তাদের থেকে জনৈকা জ্ঞানী মহিলা বললো; হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কি কসূর যে, আমরা জাহান্নামে বেশী সংখ্যক হবো? তিনি বললেনঃ তোমরা অধিক অভিশাপ দিয়ে থাকো এবং স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকো। আমি তো বিবেক বুদ্ধি ও দ্বীনের লোকসানের সাথে সাথে জ্ঞানদীপ্ত পুরুষের জ্ঞান লোপকারী হিসেবে তোমাদের চাইতে অধিকতর পটু কাউকে দেখছি না। সে মহিলাটি বললো, হে আল্লাহর রাসূল। বিবেক বুদ্ধি ও দ্বীনের লোকসান কি করে হয়? তিনি বললেনঃ জ্ঞানের দৈন্যতার পরিচয় হচ্ছে এই যে, দুইজন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান। আর তোমাদের দ্বীনের ক্ষেত্রে কমতির চিহ্ন হচ্ছে এই যে, তোমরা কয়েক দিনরাত্র পর্যন্ত সালাত থেকে বিরত থাকো এবং রমযান মাসের বেশ কয়েকদিন সিয়াম পালন থেকে বঞ্চিত থাকো। এই হচ্ছে তোমাদের দীন সম্পর্কিত লোকসান।
بَاب فِتْنَةِ النِّسَاءِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ ‏"‏ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ وَأَكْثِرْنَ مِنَ الاِسْتِغْفَارِ فَإِنِّي رَأَيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ جَزْلَةٌ وَمَا لَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ قَالَ ‏"‏ تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَغْلَبَ لِذِي لُبٍّ مِنْكُنَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا نُقْصَانُ الْعَقْلِ وَالدِّينِ قَالَ ‏"‏ أَمَّا نُقْصَانُ الْعَقْلِ فَشَهَادَةُ امْرَأَتَيْنِ تَعْدِلُ شَهَادَةَ رَجُلٍ فَهَذَا مِنْ نُقْصَانِ الْعَقْلِ وَتَمْكُثُ اللَّيَالِيَ مَا تُصَلِّي وَتُفْطِرُ فِي رَمَضَانَ فَهَذَا مِنْ نُقْصَانِ الدِّينِ ‏"‏ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা দান-সদাকা করো, কেননা তোমরাই জাহান্নামে বেশি যাবে। তখন সাধারণ স্তরের এক নারী প্রশ্ন করল, তা কী কারণে? তিনি বললেন تكثرن اللعن، وتكفرن العشير 'তোমরা বেশি বেশি লানত কর এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞতা কর।
অন্যান্য পাপ নারী-পুরুষ উভয়ই সাধারণত সমানই করে। কিন্তু লানত করার পাপ তুলনামূলক নারীদের মধ্যে বেশি। আর স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা তো তাদেরই মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ কারণেই প্রথমদিকে জাহান্নামে তাদের সংখ্যা বেশি হবে।
হাদীছটির এরকম ব্যাখ্যাও করা যায় যে, জাহান্নামে তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ার অর্থ পুরুষদের তুলনায় বেশি হওয়া নয়; বরং নারীদের মধ্যেই যারা জাহান্নামে যাবে তাদের একদলের তুলনায় অন্যদলের সংখ্যা বেশি বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ তাদের অনেককেই বিভিন্ন কারণে জাহান্নামে যেতে হবে বটে, কিন্তু লা'নত করা ও স্বামীর অবাধ্যতা করার অপরাধে যারা জাহান্নামে যাবে তাদের সংখ্যা অন্যদের তুলনায় বেশি হবে।
উল্লেখ্য স্বামীর অবাধ্যতা করা যেমন পাপ, তেমনি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর প্রতি জুলুম-নির্যাতন করাও পাপ বৈকি। অনেক স্বামীই এ পাপ করে থাকে। এর থেকে তাদের বিরত হওয়া উচিত। অন্যথায় এ কারণে তাদেরকেও আখেরাতে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকেই জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন