কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
৩১. আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৬৬৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬৮
পিতার সদাচরণ ও ইহসান কন্যাদের প্রতি
৩৬৬৮। আবু বাকর ইবন আবু শায়বা (রাহঃ) ........ আহনাফের চাচা সা'সা' (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আয়েশা (রাযিঃ) এর কাছে এক মহিলা এলো, তার সাথে ছিল তার দু'টি কন্যা, তিনি তাকে তিনটি খেজুর দিলেন, মহিলা উভয় মেয়েকে একটি করে খেজুর দিল। অতঃপর তৃতীয়টাকে দু'টুকরো করে উভয়ের মাঝে বন্টন করে দিল। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এরপর নবী (ﷺ) আসলে আমি তাঁর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেন, তুমি অবাক হচ্ছো? সে তো এর দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করেছে।
بَاب بِرِّ الْوَالِدِ وَالْإِحْسَانِ إِلَى الْبَنَاتِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، عَنْ مِسْعَرٍ، أَخْبَرَنِي سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ صَعْصَعَةَ، عَمِّ الأَحْنَفِ قَالَ دَخَلَتْ عَلَى عَائِشَةَ امْرَأَةٌ مَعَهَا ابْنَتَانِ لَهَا فَأَعْطَتْهَا ثَلاَثَ تَمَرَاتٍ فَأَعْطَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا تَمْرَةً ثُمَّ صَدَعَتِ الْبَاقِيَةَ بَيْنَهُمَا . قَالَتْ فَأَتَى النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَحَدَّثْتُهُ فَقَالَ " مَا عَجَبُكِ لَقَدْ دَخَلَتْ بِهِ الْجَنَّةَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ঘটনাটি সহীহ মুসলিমে এভাবে আছে, কোনও এক মিসকীন মহিলা তার দু'টি মেয়ে নিয়ে আসলে তিনি তাকে তিনটি খেজুর দিলেন। সে তা থেকে দু'টি তার দুই মেয়েকে দিল এবং একটি নিজে খাওয়ার জন্য মুখের কাছে তুলল। সে যখন খেজুরটি খেতে যাচ্ছিল, তখন মেয়েদু'টি তার কাছে আবার খাবার চাইল। তখন সে নিজে যেটি খেতে চেয়েছিল সেটি দু'ভাগ করে দুই মেয়েকে দিয়ে দিল, নিজে কিছুই খেল না। আমরা যারা দিবারাত্র তিন-চার-পাঁচবার খাই তাদের কাছে এ ঘটনা বিশেষ কিছু মনে হবে না। কিন্তু আম্মাজান আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. আশ্চর্য হয়ে গেছেন। ক্ষুধার কষ্ট তাঁর জানা ছিল। তাঁর চুলায় দিনের পর দিন আগুন জ্বলত না। এমন বহু দিন গেছে, যখন খাওয়ার জন্য একটি খেজুরও মিলত না। ওই মা'ও সেরকমই ছিল। না হয় তার মেয়েদের নিয়ে খাবার চাইতে আসবে কেন? কে জানে কত বেলা তার না খেয়ে কেটেছে! এ অবস্থায় কথা তো ছিল দু'টি খেজুর নিজে খাবেন আর একটি দুই ভাগ করে দুই মেয়েকে দেবেন। তা না করে তিনটি খেজুর সমান তিন ভাগ করে তিনজনে নিয়েছেন। তারপরও মেয়েদু'টি আবারও চাইলে নিজের খেজুরটিও তাদের দিয়ে দিলেন। মুখের কাছে নিয়েও সেটি খেলেন না। এ হচ্ছে মাতৃমমতা। আম্মাজান মুগ্ধ ও অভিভূত দৃষ্টিতে তা দেখছিলেন। সে মুগ্ধতা লুকিয়ে রাখতে পারেননি। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে আসলে তাঁকে তা জানালেন।
তিনি তা শুনে সুসংবাদ দিলেন এ ত্যাগ ও মায়ার পুরস্কারস্বরূপ আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে জান্নাতে দাখিল করবেন।
অর্থাৎ সন্তানের প্রতি ওই মা যে মমত্ব দেখিয়েছে তা বৃথা যাবে না। সে নিজে অভুক্ত থেকেছে, নিজ ক্ষুধার কথা ভুলে সন্তানের ক্ষুধাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এটা দয়ামায়ার পুরস্কার। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
الرَّاحِمُوْنَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمنُ، اِرْحَمُوْا أَهْلَ الْأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ
‘যারা দয়ামায়াওয়ালা, দয়াময় আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। যারা পৃথিবীতে আছে তাদের প্রতি দয়া কর, তাহলে যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।৩০৪
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর বদান্যতার পরিচয় পাওয়া গেল, মাতৃমমতা সম্পর্কে ধারণা লাভ হল এবং জানা গেল- যে মা তার সন্তানদের জন্য এরূপ ত্যাগ স্বীকার করে, তার জন্য জান্নাত নিশ্চিত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মায়েদের মর্যাদা বোঝার তাওফীক দান করুন।
৩০৪. সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৯৪১; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৪৯৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৭৯০৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫৩৭
তিনি তা শুনে সুসংবাদ দিলেন এ ত্যাগ ও মায়ার পুরস্কারস্বরূপ আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে জান্নাতে দাখিল করবেন।
অর্থাৎ সন্তানের প্রতি ওই মা যে মমত্ব দেখিয়েছে তা বৃথা যাবে না। সে নিজে অভুক্ত থেকেছে, নিজ ক্ষুধার কথা ভুলে সন্তানের ক্ষুধাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এটা দয়ামায়ার পুরস্কার। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
الرَّاحِمُوْنَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمنُ، اِرْحَمُوْا أَهْلَ الْأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ
‘যারা দয়ামায়াওয়ালা, দয়াময় আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। যারা পৃথিবীতে আছে তাদের প্রতি দয়া কর, তাহলে যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।৩০৪
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর বদান্যতার পরিচয় পাওয়া গেল, মাতৃমমতা সম্পর্কে ধারণা লাভ হল এবং জানা গেল- যে মা তার সন্তানদের জন্য এরূপ ত্যাগ স্বীকার করে, তার জন্য জান্নাত নিশ্চিত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মায়েদের মর্যাদা বোঝার তাওফীক দান করুন।
৩০৪. সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৯৪১; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৪৯৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৭৯০৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫৩৭
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
