কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
২৮. পানীয় দ্রব্যাদীর বিধান
হাদীস নং: ৩৪৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৩৪
পরিবেশনকারী সবশেষে পান করবে
৩৪৩৪। আহমাদ ইব্ন আব্দাহ্ ও শু'আইব ইবন সাঈদ (রাহঃ)......আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ লোকদের পানীয় পরিবেশনকারী সবশেষে পান করবে।
بَاب سَاقِي الْقَوْمِ آخِرُهُمْ شُرْبًا
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " سَاقِي الْقَوْمِ آخِرُهُمْ شُرْبًا " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটি মুসলিম শরীফে বিস্তারিত আছে। তাতে একটি সফরের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সফরের এক পর্যায়ে পানির সংকট দেখা দেয়। সাহাবায়ে কেরাম পিপাসায় মৃত্যুর আশঙ্কা করলেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে নির্ভয় দিলেন। তারপর তিনি তাঁর ওযূর পাত্র নিয়ে আসতে বললেন। তিনি সে পাত্র থেকে পানি ঢালতে শুরু করলেন আর হযরত আবু কাতাদা রাযি.-কে হুকুম দিলেন সঙ্গীদের মধ্যে তা বিতরণ করতে। পাত্রে পানি দেখা মাত্রই সকলে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে শান্ত হতে বললেন। তারা শান্ত হলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি ঢালতে থাকলেন আর হযরত আবু কাতাদা রাযি. বিতরণ করতে থাকলেন। সকলের পানি পান করা শেষ হল। বাকি থাকলেন শুধু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত আবু কাতাদা রাযি.। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু কাতাদা রাযি.-কে বললেন, এবার তুমি পান করো। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি পান না করা পর্যন্ত আমি পান করব না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকজনের মধ্যে পানি পরিবেশনকারী নিজে পান করবে সকলের শেষে। (সহীহ মুসলিম: ৬৮১; মুসনাদু ইবনিল জা'দ: ৩০৭৫)
এটা একটা ইসলামী আদব যে, যে ব্যক্তি পানি, শরবত, দুধ, চা ইত্যাদি পরিবেশন করবে, সে নিজে পান করবে সকলের শেষে। এমনিভাবে খাদ্যদ্রব্য, ফল-ফলাদি বিতরণেও এ আদব অনুসরণীয়। অর্থাৎ বিতরণকারী নিজে খাবে সবার পরে। ইবনু রাসলান রহ. বলেন, এ হাদীছ দ্বারা ইশারা পাওয়া যায়, যে ব্যক্তি উম্মতের কোনও বিষয়ে দায়িত্বশীল হবে, তার কর্তব্য হবে আগে মানুষের উপকার-অপকারের দিকে লক্ষ রাখা। অর্থাৎ কিসে তাদের উপকার হয় এবং কীভাবে তাদের অনিষ্ট দূর করা যায়, সেটাই হবে তার প্রথম লক্ষ্যবস্তু। সে নিজ স্বার্থের উপর অন্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে। নিজ সুবিধা-অসুবিধা চিন্তা করবে তাদের পরে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মজলিসে যে ব্যক্তি পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করবে, সে নিজে পান করবে সকলের পর।
খ. যে-কোনও বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রথমে অন্যদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। নিজ স্বার্থ চিন্তা করবে সবার পরে।
এটা একটা ইসলামী আদব যে, যে ব্যক্তি পানি, শরবত, দুধ, চা ইত্যাদি পরিবেশন করবে, সে নিজে পান করবে সকলের শেষে। এমনিভাবে খাদ্যদ্রব্য, ফল-ফলাদি বিতরণেও এ আদব অনুসরণীয়। অর্থাৎ বিতরণকারী নিজে খাবে সবার পরে। ইবনু রাসলান রহ. বলেন, এ হাদীছ দ্বারা ইশারা পাওয়া যায়, যে ব্যক্তি উম্মতের কোনও বিষয়ে দায়িত্বশীল হবে, তার কর্তব্য হবে আগে মানুষের উপকার-অপকারের দিকে লক্ষ রাখা। অর্থাৎ কিসে তাদের উপকার হয় এবং কীভাবে তাদের অনিষ্ট দূর করা যায়, সেটাই হবে তার প্রথম লক্ষ্যবস্তু। সে নিজ স্বার্থের উপর অন্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে। নিজ সুবিধা-অসুবিধা চিন্তা করবে তাদের পরে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মজলিসে যে ব্যক্তি পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করবে, সে নিজে পান করবে সকলের পর।
খ. যে-কোনও বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রথমে অন্যদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। নিজ স্বার্থ চিন্তা করবে সবার পরে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
