কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
২৭. পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৩৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩৫
ময়দা সম্পর্কে
৩৩৩৫। মুহাম্মাদ ইবন সাব্বাহ ও সুওয়াইদ ইবন সাঈদ (রাহঃ)...... আব্দুল আযীয ইবন আবু হাযিম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি সাহল ইবন সা'দ (রাযিঃ)-র নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি ময়দা দেখেছেন? তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর ইন্তিকালের পূর্ব পর্যন্ত ময়দা দেখিনি। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলামঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগে লোকদের কি চালুনি ছিল? তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ইন্তিকালের পূর্ব পর্যন্ত চালুনি দেখিনি। আমি বললামঃ তাহলে আপনারা চালুনি ছাড়া কিভাবে যব খেতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ (আমরা গুড়া করে) তাতে ফুঁ দিতাম এবং যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত, এবং যা অবশিষ্ট থাকিত তা পানিতে ভিজাতাম।
بَاب الْحُوَّارَى
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، سَأَلْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ هَلْ رَأَيْتَ النَّقِيَّ قَالَ مَا رَأَيْتُ النَّقِيَّ حَتَّى قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . فَقُلْتُ فَهَلْ كَانَ لَهُمْ مَنَاخِلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ مَا رَأَيْتُ مُنْخُلاً حَتَّى قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . قُلْتُ فَكَيْفَ كُنْتُمْ تَأْكُلُونَ الشَّعِيرَ غَيْرَ مَنْخُولٍ قَالَ نَعَمْ نَنْفُخُهُ فَيَطِيرُ مِنْهُ مَا طَارَ وَمَا بَقِيَ ثَرَّيْنَاهُ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হযরত সাহল রাযি. বলছেন যে, তারা কখনও চালনি দেখেননি। তার মানে তারা যে আটার রুটি খেতেন তা কখনও চালা হতো না। সাধারণত যবের রুটিই খেতেন। যব ভাঙানোর পর তার দানা গমের আটার মতো মিহি হয় না। সঙ্গে মোটা মোটা ভূসি থেকে যায়। ভুসিসহ সে আটা খাওয়া অনেক কঠিন। তাই প্রশ্ন জাগে, যদি না-ই চালা হয় তবে ভুসিসহ যবের আটা কিভাবে খাওয়া সম্ভব হতো? হযরত সাহল রাযি.-কে সে প্রশ্ন করাও হল। তিনি উত্তরে বললেন-
(আমরা তা পিষতাম, তারপর ফুঁ দিতাম। তাতে যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত। তারপর যা বাকি থাকত তা পানিতে মিশিয়ে খেতাম)। বোঝাই যাচ্ছে চালনি দ্বারা চাললে যেমন সবটা ভূসি আলাদা হয়ে যায়, ফুঁ দেওয়ার দ্বারা তা কখনওই হতো না। আটার সঙ্গে অনেক ভুসি থেকেই যেত। সেই ভুসিযুক্ত যবের আটাই তাঁরা খেতেন। আজ কেউ তা খাবে না। খেলে তা হজমও হবে না। কিন্তু তাঁদের হজম হতো। তাঁরা কষ্টসহিষ্ণুতায় অভ্যস্ত ছিলেন। তাঁদের পক্ষে এসব সম্ভব ছিল। সম্ভব ছিল বলেই যে-কোনও পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে পারতেন। অতি অল্প সময়ের ভেতর রোম, পারস্য, আফ্রিকা, স্পেন জয় করে ফেলার পেছনে সন্দেহ নেই এ কষ্টসহিষ্ণুতারও একটা ভূমিকা ছিল। আজ যে আমাদের দ্বারা তেমন কিছুই হয় না, বিলাসপ্রিয়তাও তার একটা কারণ বৈকি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
পানাহারে কষ্টসহিষ্ণুতা ছিল সাহাবায়ে কেরামের শান। আমাদেরও তা রপ্ত করা উচিত।
(আমরা তা পিষতাম, তারপর ফুঁ দিতাম। তাতে যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত। তারপর যা বাকি থাকত তা পানিতে মিশিয়ে খেতাম)। বোঝাই যাচ্ছে চালনি দ্বারা চাললে যেমন সবটা ভূসি আলাদা হয়ে যায়, ফুঁ দেওয়ার দ্বারা তা কখনওই হতো না। আটার সঙ্গে অনেক ভুসি থেকেই যেত। সেই ভুসিযুক্ত যবের আটাই তাঁরা খেতেন। আজ কেউ তা খাবে না। খেলে তা হজমও হবে না। কিন্তু তাঁদের হজম হতো। তাঁরা কষ্টসহিষ্ণুতায় অভ্যস্ত ছিলেন। তাঁদের পক্ষে এসব সম্ভব ছিল। সম্ভব ছিল বলেই যে-কোনও পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে পারতেন। অতি অল্প সময়ের ভেতর রোম, পারস্য, আফ্রিকা, স্পেন জয় করে ফেলার পেছনে সন্দেহ নেই এ কষ্টসহিষ্ণুতারও একটা ভূমিকা ছিল। আজ যে আমাদের দ্বারা তেমন কিছুই হয় না, বিলাসপ্রিয়তাও তার একটা কারণ বৈকি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
পানাহারে কষ্টসহিষ্ণুতা ছিল সাহাবায়ে কেরামের শান। আমাদেরও তা রপ্ত করা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
