কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
২৭. পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৮৫
পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায়
আহার শেষে যে দু'আ পড়তে হয়
৩২৮৫। হারমালা ইবন ইয়াহইয়া (রাহঃ)...... মু'আয ইবন আনাস জুহানী (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আহার করে সে যেন বলেঃ “আল হামদু লিল্লাহিল্লাযী আত’আমানী হাযা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাওলিন মিন্নী ওয়ালা কুওয়্যাতিন" "সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার জন্য যিনি আমাকে আমার শক্তি ও জোর ব্যতীত আহার করিয়েছেন ও রিযিক দান করেছেন।" তাহলে তার পূর্বেকার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
كتاب الأطعمة
بَاب مَا يُقَالُ إِذَا فَرَغَ مِنْ الطَّعَامِ
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي مَرْحُومٍ عَبْدِ الرَّحِيمِ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ أَكَلَ طَعَامًا فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلاَ قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে খাওয়ার পরে কী দু'আ পড়তে হয় তা শেখানো হয়েছে। সেইসঙ্গে দু'আটির ফযীলতও বলে দেওয়া হয়েছে। ফযীলত হল- দু'আটি পড়লে অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়। অর্থাৎ সগীরা গুনাহ। কবীরা গুনাহ মাফ হয় তাওবার দ্বারা। দু'আটি হল-
الحمدُ للهِ الذي أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ
এতে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও শোকর আদায়ের পাশাপাশি বান্দার পক্ষ থেকে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে যে- أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ (যিনি আমাকে এ খাবার খাওয়ালেন এবং আমাকে রিযিক দিলেন আমার কোনওরূপ চেষ্টা ও ক্ষমতা ছাড়াই)। অর্থাৎ রিযিকের জন্য আল্লাহ তা'আলা চেষ্টা করার হুকুম দিয়েছেন বলে আমি চেষ্টা করি। কিন্তু চেষ্টা করলেই যে আমি পেয়ে যাব তা অনিবার্য নয়। দেওয়াটা সম্পূর্ণই আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা ও তাঁর দয়া। তিনি দয়া করে দেন বলে আমি পাই। না দিলে পেতাম না। কাজেই যারা জীবিকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করে, নিজ সাধ্যমতো সবরকম চেষ্টা করে ও বিদ্যা-বুদ্ধি খাটায়, তাদের এ কথা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, তাদের প্রাপ্ত জীবিকা কেবলই নিজেদের চেষ্টার ফল। বরং সর্বাবস্থায় জীবিকা আল্লাহ তা'আলার দান বলেই বিশ্বাস করতে হবে। বিশেষত এ কারণেও যে, যে যেই চেষ্টার কথা বলে, তাও কি আল্লাহর অনুগ্রহ নয়? এই যে হাত-পা, বিদ্যা-বুদ্ধি, পরিশ্রম করার ক্ষমতা, চাষের জমি, চাষাবাদের উপকরণ এবং যাবতীয় উপার্জনমাধ্যমের আসবাব-উপকরণ আমরা কোথায় পেলাম? সবই আল্লাহ তা'আলারই দেওয়া নয় কি? প্রকৃতপক্ষে 'আমার' বলে কিছুই নেই। সবই আল্লাহর। তাই 'আমার চেষ্টা' বলে বড়াই করার অবকাশ নেই। সবই আল্লাহর দান ও তাঁরই অনুগ্রহ। সুতরাং যে-কোনও রিযিক ও জীবিকা ভোগের পর আমাদেরকে তাঁরই শোকর আদায় করতে হবে। মনেপ্রাণে শোকর আদায় করতে পারলে আখেরে লাভ আমাদেরই। এর বদৌলতে এক তো তিনি রিযিক বৃদ্ধি করে দেবেন, যা দুনিয়ার লাভ। সেইসঙ্গে আমাদের পাপরাশিও ক্ষমা করে দেবেন, যা আখিরাতের লাভ এবং সর্বাপেক্ষা বেশি কাঙ্ক্ষিত লাভ। আল্লাহ তা'আলা কতইনা মহান! সদাসর্বদা তাঁরই দেওয়া নি'আমত ভোগ করি। তারপর ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাঁর অবাধ্যতাও করি। নানারকম গুনাহে লিপ্ত হই। তা সত্ত্বেও সে গুনাহ থেকে যাতে ক্ষমা পাই, তার জন্য সহজ সহজ ব্যবস্থাও তিনি দান করেছেন। খাবার খাও, তারপর শোকর আদায় করো, তিনি তোমার গুনাহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহরই সমস্ত প্রশংসা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. খাবার ও জীবিকাকে কখনও নিজ চেষ্টার ফল মনে করতে নেই। আল্লাহর অনুগ্রহের দান বলে বিশ্বাস করতে হবে এবং সেজন্য তাঁর শোকর আদায় করতে হবে।
খ. খাওয়ার পর হাদীছে বর্ণিত এ দু'আটি এই আশায় পাঠ করব, যাতে আল্লাহ তা'আলা আমার অতীতের পাপরাশি ক্ষমা করে দেন।
الحمدُ للهِ الذي أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ
এতে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও শোকর আদায়ের পাশাপাশি বান্দার পক্ষ থেকে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে যে- أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ (যিনি আমাকে এ খাবার খাওয়ালেন এবং আমাকে রিযিক দিলেন আমার কোনওরূপ চেষ্টা ও ক্ষমতা ছাড়াই)। অর্থাৎ রিযিকের জন্য আল্লাহ তা'আলা চেষ্টা করার হুকুম দিয়েছেন বলে আমি চেষ্টা করি। কিন্তু চেষ্টা করলেই যে আমি পেয়ে যাব তা অনিবার্য নয়। দেওয়াটা সম্পূর্ণই আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা ও তাঁর দয়া। তিনি দয়া করে দেন বলে আমি পাই। না দিলে পেতাম না। কাজেই যারা জীবিকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করে, নিজ সাধ্যমতো সবরকম চেষ্টা করে ও বিদ্যা-বুদ্ধি খাটায়, তাদের এ কথা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, তাদের প্রাপ্ত জীবিকা কেবলই নিজেদের চেষ্টার ফল। বরং সর্বাবস্থায় জীবিকা আল্লাহ তা'আলার দান বলেই বিশ্বাস করতে হবে। বিশেষত এ কারণেও যে, যে যেই চেষ্টার কথা বলে, তাও কি আল্লাহর অনুগ্রহ নয়? এই যে হাত-পা, বিদ্যা-বুদ্ধি, পরিশ্রম করার ক্ষমতা, চাষের জমি, চাষাবাদের উপকরণ এবং যাবতীয় উপার্জনমাধ্যমের আসবাব-উপকরণ আমরা কোথায় পেলাম? সবই আল্লাহ তা'আলারই দেওয়া নয় কি? প্রকৃতপক্ষে 'আমার' বলে কিছুই নেই। সবই আল্লাহর। তাই 'আমার চেষ্টা' বলে বড়াই করার অবকাশ নেই। সবই আল্লাহর দান ও তাঁরই অনুগ্রহ। সুতরাং যে-কোনও রিযিক ও জীবিকা ভোগের পর আমাদেরকে তাঁরই শোকর আদায় করতে হবে। মনেপ্রাণে শোকর আদায় করতে পারলে আখেরে লাভ আমাদেরই। এর বদৌলতে এক তো তিনি রিযিক বৃদ্ধি করে দেবেন, যা দুনিয়ার লাভ। সেইসঙ্গে আমাদের পাপরাশিও ক্ষমা করে দেবেন, যা আখিরাতের লাভ এবং সর্বাপেক্ষা বেশি কাঙ্ক্ষিত লাভ। আল্লাহ তা'আলা কতইনা মহান! সদাসর্বদা তাঁরই দেওয়া নি'আমত ভোগ করি। তারপর ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাঁর অবাধ্যতাও করি। নানারকম গুনাহে লিপ্ত হই। তা সত্ত্বেও সে গুনাহ থেকে যাতে ক্ষমা পাই, তার জন্য সহজ সহজ ব্যবস্থাও তিনি দান করেছেন। খাবার খাও, তারপর শোকর আদায় করো, তিনি তোমার গুনাহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহরই সমস্ত প্রশংসা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. খাবার ও জীবিকাকে কখনও নিজ চেষ্টার ফল মনে করতে নেই। আল্লাহর অনুগ্রহের দান বলে বিশ্বাস করতে হবে এবং সেজন্য তাঁর শোকর আদায় করতে হবে।
খ. খাওয়ার পর হাদীছে বর্ণিত এ দু'আটি এই আশায় পাঠ করব, যাতে আল্লাহ তা'আলা আমার অতীতের পাপরাশি ক্ষমা করে দেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
বর্ণনাকারী: