কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
২৭. পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৫৪
একজনের খাবার দুইজনের জন্য যথেষ্ট
৩২৫৪। মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ রাক্কী (রাহঃ)...... জাবির ইবন আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ একজনের খাবার দুইজনের জন্য যথেষ্ট। আর দুইজনে খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট এবং চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট।
بَاب طَعَامِ الْوَاحِدِ يَكْفِي الِاثْنَيْنِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زِيَادٍ الأَسَدِيُّ، أَنْبَأَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَنْبَأَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " طَعَامُ الْوَاحِدِ يَكْفِي الاِثْنَيْنِ وَطَعَامُ الاِثْنَيْنِ يَكْفِي الأَرْبَعَةَ وَطَعَامُ الأَرْبَعَةِ يَكْفِي الثَّمَانِيَةَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
খাবার সম্পর্কে এধরনের বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কোন হাদীছে বলা হয়েছে, দু'জনের খাবার তিনজনের জন্য এবং তিনজনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট। কোন হাদীছে বলা হয়েছে, একজনের খাবার দু'জনের জন্য, দু'জনের খাবার চারজনের জন্য এবং চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট। বাহ্যদৃষ্টিতে বিরোধপূর্ণ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। মূলত সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। বোঝানো উদ্দেশ্য, যে খাবার দ্বারা অল্প লোকের পেট ভরে যায়, তা দ্বারা বেশি লোকের ক্ষুধা মিটে যায়। এতে খাদ্যের পরিমাণ আহারকারীদের অবস্থাভেদে পার্থক্য হতে পারে। সেই হিসেবে কখনও দু'জনের খাবার তিনজনের জন্য যথেষ্ট হয়, আবার কখনও দু'জনের খাবার চারজনের জন্যও যথেষ্ট হতে পারে।
হাদীছ দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য, কেউ যেন নিজ খাবারে অন্যকে শরীক করতে দ্বিধাবোধ না করে। এমন মনে না করে যে, অন্যকে সঙ্গে নিলে তার খাবারে কম পড়ে যাবে। বরং সহমর্মিতার পরিচয় দেওয়া চাই। নিজে পেট ভরে খাবে, আরেকজন ক্ষুধার্ত থাকবে, এটা প্রকৃত মুমিনের কাজ হতে পারে না। মুমিন ব্যক্তি যখন খেতে বসবে, তখন কাউকে না কাউকে সঙ্গে নিয়ে নেবে। একা খাবে না। দু'-চারজন হলে সঙ্গে অতিরিক্ত আরও লোক নিয়ে নেবে। লোক যত বেশি হবে, বরকতও ততো বেশি হবে। এক হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
كُلُوْا جَمِيعًا ، وَلَا تَفَرَّقُوْا، فَإِنَّ الْبَرَكَةَ مَعَ الْجَمَاعَةِ
তোমরা একত্রে খাবে, বিচ্ছিন্নভাবে নয়। কেননা জামাতের সঙ্গেই বরকত থাকে।(সুনানে ইবন মাজাহ ৩২৮৭; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৭৪৪৪)
إسناده ضعيف، لكن له شواهد، ينظر: مصباح الزجاجة و تعليق الشيخ شعيب على سنن ابن ماجه. (المحرر)
অর্থাৎ মিলেমিশে খাওয়ার দ্বারা সহমর্মিতা প্রকাশ পায়। আর সহমর্মিতা প্রকাশ দ্বারা বরকত লাভ হয়। তখন অল্প খাবারেও অনেকের ক্ষুধা মিটে যায়।
অনেক সময় খাবার কম হলে মানুষ অন্যকে শরীক করতে দ্বিধাবোধ করে। সে মনে করে, এ সামান্য খাবারে আমারই তো হবে না, অন্যকে সঙ্গে নেব কী? কিন্তু এটা ভুল ধারণা। অন্যকে সঙ্গে নিলে হয়তো তার পেট ভরবে না, কিন্তু ক্ষুধা তো মিটবে! ক্ষুধা মেটানোই আসল। পেট ভরা মুখ্য নয়। বরং পেট ভরে খাওয়াটা অনেক সময় ক্ষতিরও কারণ হয়। অন্যকে শরীক করার দ্বারা সে ক্ষতি থেকেও বাঁচা যায় এবং অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের মহানুভবতাও দেখানো হয়। তাই খাবারের পরিমাণ অল্প হওয়াটা অন্যকে সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে বাধা হওয়া উচিত নয়।
আবূ হাযিম রহ. বলেন, তোমার জন্য যা যথেষ্ট তাতে যদি তুমি খুশি থাকতে না পার, তবে দুনিয়ার কোনওকিছুই তোমাকে খুশি করতে পারবে না।
জনৈক বুযুর্গ বলেছেন, নিজেকে অল্পতে খুশি রাখো। অন্যথায় তোমার মন তোমার কাছে কামনা করবে যা যথেষ্ট হয় তারচে’ বেশি।
হযরত উমর রাযি. বলতেন, কেউ তার প্রয়োজনীয় খাদ্যের অর্ধেক খেলে তাতে মরে যায় না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও খাবার একা খেতে নেই; অন্যদের সঙ্গে মিলেমিশে খাওয়া উচিত।
খ. খাবারে যত বেশি হাত লাগে, ততো বেশি বরকত হয়।
গ. নিজ খাবার দ্বারা অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করা উচিত।
ঘ. খাবারের পরিমাণ অল্প হওয়াটা অন্যকে সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে বাধা হওয়া উচিত নয়।
ঙ. খাবারে উদরপূর্তি নয়; ক্ষুধা মেটানোই লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত।
হাদীছ দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য, কেউ যেন নিজ খাবারে অন্যকে শরীক করতে দ্বিধাবোধ না করে। এমন মনে না করে যে, অন্যকে সঙ্গে নিলে তার খাবারে কম পড়ে যাবে। বরং সহমর্মিতার পরিচয় দেওয়া চাই। নিজে পেট ভরে খাবে, আরেকজন ক্ষুধার্ত থাকবে, এটা প্রকৃত মুমিনের কাজ হতে পারে না। মুমিন ব্যক্তি যখন খেতে বসবে, তখন কাউকে না কাউকে সঙ্গে নিয়ে নেবে। একা খাবে না। দু'-চারজন হলে সঙ্গে অতিরিক্ত আরও লোক নিয়ে নেবে। লোক যত বেশি হবে, বরকতও ততো বেশি হবে। এক হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
كُلُوْا جَمِيعًا ، وَلَا تَفَرَّقُوْا، فَإِنَّ الْبَرَكَةَ مَعَ الْجَمَاعَةِ
তোমরা একত্রে খাবে, বিচ্ছিন্নভাবে নয়। কেননা জামাতের সঙ্গেই বরকত থাকে।(সুনানে ইবন মাজাহ ৩২৮৭; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৭৪৪৪)
إسناده ضعيف، لكن له شواهد، ينظر: مصباح الزجاجة و تعليق الشيخ شعيب على سنن ابن ماجه. (المحرر)
অর্থাৎ মিলেমিশে খাওয়ার দ্বারা সহমর্মিতা প্রকাশ পায়। আর সহমর্মিতা প্রকাশ দ্বারা বরকত লাভ হয়। তখন অল্প খাবারেও অনেকের ক্ষুধা মিটে যায়।
অনেক সময় খাবার কম হলে মানুষ অন্যকে শরীক করতে দ্বিধাবোধ করে। সে মনে করে, এ সামান্য খাবারে আমারই তো হবে না, অন্যকে সঙ্গে নেব কী? কিন্তু এটা ভুল ধারণা। অন্যকে সঙ্গে নিলে হয়তো তার পেট ভরবে না, কিন্তু ক্ষুধা তো মিটবে! ক্ষুধা মেটানোই আসল। পেট ভরা মুখ্য নয়। বরং পেট ভরে খাওয়াটা অনেক সময় ক্ষতিরও কারণ হয়। অন্যকে শরীক করার দ্বারা সে ক্ষতি থেকেও বাঁচা যায় এবং অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের মহানুভবতাও দেখানো হয়। তাই খাবারের পরিমাণ অল্প হওয়াটা অন্যকে সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে বাধা হওয়া উচিত নয়।
আবূ হাযিম রহ. বলেন, তোমার জন্য যা যথেষ্ট তাতে যদি তুমি খুশি থাকতে না পার, তবে দুনিয়ার কোনওকিছুই তোমাকে খুশি করতে পারবে না।
জনৈক বুযুর্গ বলেছেন, নিজেকে অল্পতে খুশি রাখো। অন্যথায় তোমার মন তোমার কাছে কামনা করবে যা যথেষ্ট হয় তারচে’ বেশি।
হযরত উমর রাযি. বলতেন, কেউ তার প্রয়োজনীয় খাদ্যের অর্ধেক খেলে তাতে মরে যায় না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও খাবার একা খেতে নেই; অন্যদের সঙ্গে মিলেমিশে খাওয়া উচিত।
খ. খাবারে যত বেশি হাত লাগে, ততো বেশি বরকত হয়।
গ. নিজ খাবার দ্বারা অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করা উচিত।
ঘ. খাবারের পরিমাণ অল্প হওয়াটা অন্যকে সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে বাধা হওয়া উচিত নয়।
ঙ. খাবারে উদরপূর্তি নয়; ক্ষুধা মেটানোই লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
