আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪৬- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
হাদীস নং: ২৮৪২
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৫৯
১৯২১. যদি কোন সম্প্রদায় দারুল হারবে ইসলাম গ্রহণ করে, আর তাদের ধন-সম্পদ ও জমিজামা থাকলে তা তাদেরই থাকবে
২৮৪২। ইসমাঈল (রাহঃ) .... আসমা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, উমর (রাযিঃ) হুনাইয়া নামক তার এক আযাদকৃত গোলামকে সরকারী চারণভূমির তত্ত্বাবধানে নিয়োগ করেন। আর তাকে আদেশ করেন, হে হুনাইয়া! মুসলমানদের সাথে অত্যন্ত বিনয়ী থাকবে, মজলুমের বদ দুআ থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ মজলুমের দুআ কবুল হয়! আর স্বল্প সংখ্যক উট ও স্বল্প সংখ্যক বকরীর মালিককে এ (চারণভূমিতে) প্রবেশ করতে দিবে। আর আব্দুর রহমান ইবনে আওফ ও উসমান ইবনে আফফান (রাযিঃ)-এর পশুর ব্যাপারে সতর্ক থাকবে (প্রবেশ করতে দিবে না)।কেননা, যদি তাদের পশুগুলো ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তারা তাদের কৃষি ক্ষেত ও খেজুর বাগানের প্রতি মনোনিবেশ করবেন।
কিন্তু স্বল্প সংখ্যক উট-বকরীর মালিকদের পশু ধ্বংস হয়ে গেলে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আমার নিকট উপস্থিত হবে। আর বলবে, হে আমীরুল মু'মিনীন! হে আমীরুল মু'মিনীন আমি কি তাদের বঞ্চিত করতে পারব? হে অবুঝ! সুতরাং পানি ও ঘাস দেওয়া আমার পক্ষে সহজ, স্বর্ণ-রৌপ্য দেওয়ার চাইতে। আল্লাহর শপথ! এ সব লোকেরা মনে করবে, আমি তাদের প্রতি যুলুম করেছি। এটা তাদেরই শহর, জাহিলী যুগে তারা এতে যুদ্ধ করেছে, ইসলামের যুগে তারা এতে ইসলাম গ্রহণ করেছে। সে মহান আল্লাহর শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যে সব ঘোড়ার উপর আমি যোদ্ধাগণকে আল্লাহর রাস্তায় আরোহণ করিয়ে থাকি যদি সেগুলো না হতো তবে আমি তাদের দেশের এক বিঘত পরিমাণ জমিও সংরক্ষণ করতাম না।
কিন্তু স্বল্প সংখ্যক উট-বকরীর মালিকদের পশু ধ্বংস হয়ে গেলে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আমার নিকট উপস্থিত হবে। আর বলবে, হে আমীরুল মু'মিনীন! হে আমীরুল মু'মিনীন আমি কি তাদের বঞ্চিত করতে পারব? হে অবুঝ! সুতরাং পানি ও ঘাস দেওয়া আমার পক্ষে সহজ, স্বর্ণ-রৌপ্য দেওয়ার চাইতে। আল্লাহর শপথ! এ সব লোকেরা মনে করবে, আমি তাদের প্রতি যুলুম করেছি। এটা তাদেরই শহর, জাহিলী যুগে তারা এতে যুদ্ধ করেছে, ইসলামের যুগে তারা এতে ইসলাম গ্রহণ করেছে। সে মহান আল্লাহর শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যে সব ঘোড়ার উপর আমি যোদ্ধাগণকে আল্লাহর রাস্তায় আরোহণ করিয়ে থাকি যদি সেগুলো না হতো তবে আমি তাদের দেশের এক বিঘত পরিমাণ জমিও সংরক্ষণ করতাম না।
باب إِذَا أَسْلَمَ قَوْمٌ فِي دَارِ الْحَرْبِ، وَلَهُمْ مَالٌ وَأَرَضُونَ، فَهْىَ لَهُمْ
3059 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: اسْتَعْمَلَ مَوْلًى لَهُ يُدْعَى هُنَيًّا عَلَى الحِمَى، فَقَالَ: " يَا هُنَيُّ اضْمُمْ جَنَاحَكَ عَنِ المُسْلِمِينَ، وَاتَّقِ دَعْوَةَ المَظْلُومِ، فَإِنَّ دَعْوَةَ المَظْلُومِ مُسْتَجَابَةٌ، وَأَدْخِلْ رَبَّ الصُّرَيْمَةِ، وَرَبَّ الغُنَيْمَةِ، وَإِيَّايَ وَنَعَمَ ابْنِ عَوْفٍ، وَنَعَمَ ابْنِ عَفَّانَ، فَإِنَّهُمَا إِنْ تَهْلِكْ مَاشِيَتُهُمَا يَرْجِعَا إِلَى نَخْلٍ وَزَرْعٍ، وَإِنَّ رَبَّ الصُّرَيْمَةِ، وَرَبَّ الغُنَيْمَةِ: إِنْ تَهْلِكْ مَاشِيَتُهُمَا، يَأْتِنِي بِبَنِيهِ "، فَيَقُولُ: يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ؟ أَفَتَارِكُهُمْ أَنَا لاَ أَبَا لَكَ، فَالْمَاءُ وَالكَلَأُ أَيْسَرُ عَلَيَّ مِنَ الذَّهَبِ وَالوَرِقِ، وَايْمُ اللَّهِ إِنَّهُمْ لَيَرَوْنَ أَنِّي قَدْ ظَلَمْتُهُمْ، إِنَّهَا لَبِلاَدُهُمْ فَقَاتَلُوا عَلَيْهَا فِي الجَاهِلِيَّةِ، وَأَسْلَمُوا عَلَيْهَا فِي الإِسْلاَمِ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْلاَ المَالُ الَّذِي أَحْمِلُ عَلَيْهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ [ص:72]، مَا حَمَيْتُ عَلَيْهِمْ مِنْ بِلاَدِهِمْ شِبْرًا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
জুলুম পরিহার ও মজলূমের বদদুআ থেকে বাঁচার হুকুম
ইরশাদ হয়েছেঃ-
'আর মাজলূমদের দুআকে (অর্থাৎ বদদুআকে) ভয় করবে, কেননা মযলুমের দোয়া কবুল হয়।'
উপদেশটি দেওয়া হয়েছে ব্যাপক শব্দে। অর্থাৎ সর্বপ্রকার জুলুমই পরিহার করে চলবে। কারও প্রতি নয়। কেননা তুমি যার প্রতিই জুলুম কর না কেন, সেই তো মাজলূম হবে। আর মাজলূম ব্যক্তি যদি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানায় এবং জালেমের বিরুদ্ধে তাঁর কাছে দু'আ করে, তবে তা অবশ্যই কবূল হয়।
মজলুম ব্যক্তি যেমনই হোক না কেন, তার বদদুআ কবূল হয়-ই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ-
دعوة المظلوم مستجابة وإن كان فاجرا ففجوره على نفسه
'মজলূমের দুআ অবশ্যই কবুল হয়, যদিও সে পাপিষ্ঠ হয়। তার পাপাচারের দায় তার নিজের।' (মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৭৮০। মুসনাদ আবূ দাউদ ওয়ালিসী, হাদীছ নং ২৪৫০)
কেউ প্রশ্ন করতে পারে, আমরা তো অনেক সময় দেখি মজলূম ব্যক্তি বদদু‘আ করছে অথচ জালেমের কিছুই হচ্ছে না?
এর উত্তর এই যে, বান্দা দু'আ করে তার নিজ বুঝ অনুযায়ী আর আল্লাহ তা'আলা তা কবূল করেন নিজ শান অনুযায়ী। সুতরাং বান্দার কল্যাণার্থে কখনও তিনি বান্দা যা চায় তাই দিয়ে দেন, কখনও তা না দিয়ে অন্যকিছু দেন, হয়তো তার থেকে কোনও বিপদ দূর করেন অথবা তা আখিরাতের জন্য সঞ্চিত রাখেন। বান্দা আখিরাতে সেই সঞ্চিত দু'আর প্রতিদান দেখে এই বলে আক্ষেপ করবে যে, আহা, দুনিয়ায় যদি আমার কোনও দু‘আই কবূল না হত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মজলূমের বদদু'আ অবশ্যই কবুল হয়। তাই প্রত্যেকের সতর্ক থাকা উচিত, যাতে তার পক্ষ থেকে কারও প্রতি কোনওভাবেই জুলুম না হয়ে যায়।
ইরশাদ হয়েছেঃ-
'আর মাজলূমদের দুআকে (অর্থাৎ বদদুআকে) ভয় করবে, কেননা মযলুমের দোয়া কবুল হয়।'
উপদেশটি দেওয়া হয়েছে ব্যাপক শব্দে। অর্থাৎ সর্বপ্রকার জুলুমই পরিহার করে চলবে। কারও প্রতি নয়। কেননা তুমি যার প্রতিই জুলুম কর না কেন, সেই তো মাজলূম হবে। আর মাজলূম ব্যক্তি যদি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানায় এবং জালেমের বিরুদ্ধে তাঁর কাছে দু'আ করে, তবে তা অবশ্যই কবূল হয়।
মজলুম ব্যক্তি যেমনই হোক না কেন, তার বদদুআ কবূল হয়-ই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ-
دعوة المظلوم مستجابة وإن كان فاجرا ففجوره على نفسه
'মজলূমের দুআ অবশ্যই কবুল হয়, যদিও সে পাপিষ্ঠ হয়। তার পাপাচারের দায় তার নিজের।' (মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৭৮০। মুসনাদ আবূ দাউদ ওয়ালিসী, হাদীছ নং ২৪৫০)
কেউ প্রশ্ন করতে পারে, আমরা তো অনেক সময় দেখি মজলূম ব্যক্তি বদদু‘আ করছে অথচ জালেমের কিছুই হচ্ছে না?
এর উত্তর এই যে, বান্দা দু'আ করে তার নিজ বুঝ অনুযায়ী আর আল্লাহ তা'আলা তা কবূল করেন নিজ শান অনুযায়ী। সুতরাং বান্দার কল্যাণার্থে কখনও তিনি বান্দা যা চায় তাই দিয়ে দেন, কখনও তা না দিয়ে অন্যকিছু দেন, হয়তো তার থেকে কোনও বিপদ দূর করেন অথবা তা আখিরাতের জন্য সঞ্চিত রাখেন। বান্দা আখিরাতে সেই সঞ্চিত দু'আর প্রতিদান দেখে এই বলে আক্ষেপ করবে যে, আহা, দুনিয়ায় যদি আমার কোনও দু‘আই কবূল না হত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মজলূমের বদদু'আ অবশ্যই কবুল হয়। তাই প্রত্যেকের সতর্ক থাকা উচিত, যাতে তার পক্ষ থেকে কারও প্রতি কোনওভাবেই জুলুম না হয়ে যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
