কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
২৩. হজ্ব - উমরার অধ্যায়
হাদীস নং: ২৮৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ২৮৯৪
হাজ্বীগণের দুআর ফযীলাত
২৮৯৪। আবু বাকর ইবন আবু শায়বা (রাহঃ)...... উমার (রাযিঃ)-র থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট উমরা আদায় করার অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে অনুমতি দেন এবং বলেনঃ “হে আমার ভাই ! তোমার দোয়ার মধ্যে আমাদেরও শরীক করবে, আমাদের কথা ভুলে যেও না।"
بَاب فَضْلِ دُعَاءِ الْحَاجِّ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ، أَنَّهُ اسْتَأْذَنَ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي الْعُمْرَةِ فَأَذِنَ لَهُ وَقَالَ " يَا أُخَىَّ أَشْرِكْنَا فِي شَىْءٍ مِنْ دُعَائِكَ وَلاَ تَنْسَنَا " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উমরাহ্ অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ একটি ইবাদত। এর দ্বারা গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত হয়। হাদীছে বার বার উমরাহ্ আদায় করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। হযরত উমর রাযি.-এর ইচ্ছা হলো ফযীলতপূর্ণ এ আমলটির উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। কিন্তু তিনি এর জন্য আগে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অনুমতি চাইলেন। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত শিক্ষণীয় একটি বিষয়। এর দ্বারা বোঝা যায়, দূরের সফরে যেতে চাইলে পিতা-মাতা, উস্তায ও শায়খের অনুমতি নিয়ে যাওয়া উচিত। এর দ্বারা এক তো তাদের সন্তুষ্টি লাভ হবে, দ্বিতীয়ত ফিরে না আসা পর্যন্ত সফরকালীন অবস্থায় তাদের দুআও পাওয়া যাবে। যদি তাদের কাছাকাছি থাকা হয় এবং তাদের সঙ্গে বিশেষ কোনও কাজকর্মের সম্পর্কও থাকে, তবে তো অবশ্যই অনুমতি নেওয়া উচিত। কেননা অনুমতি ছাড়া চলে গেলে সে কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া সফরের কথা জানা না থাকলে প্রয়োজনমুহূর্তে তারা খোঁজাখুঁজি করে পেরেশান হবে। অহেতুক কাউকেই পেরেশান করা সমীচীন নয়, বড়দেরকে তো নয়ই।
সমষ্টিগত কোনও কাজে জড়িত থাকা অবস্থায় দায়িত্বশীল ব্যক্তির অনুমতি নিয়ে যাওয়া প্রকৃত ঈমানদারেরও পরিচায়ক। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَإِذَا كَانُوا مَعَهُ عَلَى أَمْرٍ جَامِعٍ لَمْ يَذْهَبُوا حَتَّى يَسْتَأْذِنُوهُ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ أُولَئِكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ
‘মুমিন তো কেবল তারাই, যারা আল্লাহ ও তার রাসূলকে আন্তরিকভাবে মানে এবং যখন রাসূলের সাথে সমষ্টিগত কোনও কাজে শরীক হয়, তখন তার অনুমতি ছাড়া কোথাও যায় না। (হে নবী!) যারা তোমার অনুমতি নেয়, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সত্যিকারভাবে মানে।২৬২
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত উমর রাযি.-কে অনুমতি দিলেন। সেইসঙ্গে তিনি তার কাছে দুআ চাইলেন।
আল্লাহু আকবার! যিনি সায়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, যিনি আল্লাহর হাবীব, যাঁর শাফাআতের মুখাপেক্ষী সমস্ত বনী আদম, যিনি মাকামে মাহমুদের মহামর্যাদায় অভিষিক্ত এবং হাশরের ময়দানে যার সুপারিশের পরেই বিচারকার্য শুরু হবে, তিনি কিনা দুআ চাচ্ছেন তারই একজন সাহাবীর কাছে। এর দ্বারা অন্যের কাছে দুআ চাওয়ার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করা যায়। এর দ্বারা বোঝা যায়, মুসাফিরের কাছে দুআ চাওয়া এবং কল্যাণ ও বরকতপূর্ণ স্থানসমূহে দুআ করার জন্য অসিয়ত করা মুস্তাহাব, যদিও তার তুলনায় দুআপ্রার্থী ব্যক্তি উৎকৃষ্ট হয়, এমনিভাবে যদিও জানা থাকে যে, দুআ না চাইলেও সে তার জন্য দুআ করবে। মুসাফির ব্যক্তির সফর যদি হয় হজ্জ, উমরাহ জিহাদ প্রভৃতি ইবাদতের জন্য, তবে এই দুআ চাওয়ার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। হজ্জ আদায়কারী ব্যক্তি কারও জন্য দুআ করলে তা কবুল হয়ে থাকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজীর জন্য দুআ করেছেন-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْحَاجِّ، وَلِمَنِ اسْتَغْفَرَ لَهُ الْحَاجُّ
‘হে আল্লাহ! হাজীকে ক্ষমা করুন এবং হাজী যার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তাকেও ক্ষমা করুন।২৬৩
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মুকীম ব্যক্তির উচিত মুসাফিরের কাছে দুআ চাওয়া, বিশেষত তার সফর যদি হয় হজ্জ ও উমরাহ্'র।
খ. উত্তম ব্যক্তিও সাধারণ কোনও ব্যক্তির কাছে দুআ চাইতে পারে। তা চাওয়াটা বিনয়ের আলামতও বটে।
গ. হজ্জ ও উমরাহ্ আদায়কারী ব্যক্তির উচিত দুআ কবুলের স্থানসমূহে নিজের জন্য দুআ করার পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের জন্যও দুআ করা।
২৬২. সূরা নূর (২৪), আয়াত ৬২
২৬৩. মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১২৬৫৮; তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৮৫৯৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১০৩৮১; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৩৮১৭
সমষ্টিগত কোনও কাজে জড়িত থাকা অবস্থায় দায়িত্বশীল ব্যক্তির অনুমতি নিয়ে যাওয়া প্রকৃত ঈমানদারেরও পরিচায়ক। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَإِذَا كَانُوا مَعَهُ عَلَى أَمْرٍ جَامِعٍ لَمْ يَذْهَبُوا حَتَّى يَسْتَأْذِنُوهُ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ أُولَئِكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ
‘মুমিন তো কেবল তারাই, যারা আল্লাহ ও তার রাসূলকে আন্তরিকভাবে মানে এবং যখন রাসূলের সাথে সমষ্টিগত কোনও কাজে শরীক হয়, তখন তার অনুমতি ছাড়া কোথাও যায় না। (হে নবী!) যারা তোমার অনুমতি নেয়, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সত্যিকারভাবে মানে।২৬২
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত উমর রাযি.-কে অনুমতি দিলেন। সেইসঙ্গে তিনি তার কাছে দুআ চাইলেন।
আল্লাহু আকবার! যিনি সায়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, যিনি আল্লাহর হাবীব, যাঁর শাফাআতের মুখাপেক্ষী সমস্ত বনী আদম, যিনি মাকামে মাহমুদের মহামর্যাদায় অভিষিক্ত এবং হাশরের ময়দানে যার সুপারিশের পরেই বিচারকার্য শুরু হবে, তিনি কিনা দুআ চাচ্ছেন তারই একজন সাহাবীর কাছে। এর দ্বারা অন্যের কাছে দুআ চাওয়ার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করা যায়। এর দ্বারা বোঝা যায়, মুসাফিরের কাছে দুআ চাওয়া এবং কল্যাণ ও বরকতপূর্ণ স্থানসমূহে দুআ করার জন্য অসিয়ত করা মুস্তাহাব, যদিও তার তুলনায় দুআপ্রার্থী ব্যক্তি উৎকৃষ্ট হয়, এমনিভাবে যদিও জানা থাকে যে, দুআ না চাইলেও সে তার জন্য দুআ করবে। মুসাফির ব্যক্তির সফর যদি হয় হজ্জ, উমরাহ জিহাদ প্রভৃতি ইবাদতের জন্য, তবে এই দুআ চাওয়ার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। হজ্জ আদায়কারী ব্যক্তি কারও জন্য দুআ করলে তা কবুল হয়ে থাকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজীর জন্য দুআ করেছেন-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْحَاجِّ، وَلِمَنِ اسْتَغْفَرَ لَهُ الْحَاجُّ
‘হে আল্লাহ! হাজীকে ক্ষমা করুন এবং হাজী যার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তাকেও ক্ষমা করুন।২৬৩
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মুকীম ব্যক্তির উচিত মুসাফিরের কাছে দুআ চাওয়া, বিশেষত তার সফর যদি হয় হজ্জ ও উমরাহ্'র।
খ. উত্তম ব্যক্তিও সাধারণ কোনও ব্যক্তির কাছে দুআ চাইতে পারে। তা চাওয়াটা বিনয়ের আলামতও বটে।
গ. হজ্জ ও উমরাহ্ আদায়কারী ব্যক্তির উচিত দুআ কবুলের স্থানসমূহে নিজের জন্য দুআ করার পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের জন্যও দুআ করা।
২৬২. সূরা নূর (২৪), আয়াত ৬২
২৬৩. মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১২৬৫৮; তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৮৫৯৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১০৩৮১; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৩৮১৭
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
