কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৬. জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬২৮
আন্তর্জাতিক নং: ১৬২৮
নবী (ﷺ)-এর ওফাত ও তাঁর দাফন প্রসঙ্গে
১৬২৮। নসর ইবন 'আলী জাহযামী (রাহঃ).... ইব্‌ন 'আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সাহাবায়ে কিরাম যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য কবর খননের ইচ্ছা করলেন, তখন তাঁরা আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ (রাযিঃ) এর নিকট লোক পাঠালেন। তিনি মক্কাবাসীদের কবর খননের ন্যায় কবর খনন করতেন। আর তাঁরা আবু তালহা (রাযিঃ) এর নিকটও লোক পাঠালেন। তিনি মদীনাবাসীদের জন্য লাহাদ আকৃতির কবর খনন করতেন। তাঁরা এ দু'জনের কাছেই লোক পাঠালেন, আর তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনার রাসূলের জন্য আপনি যা পছন্দ করেন, তাই করুন।

তাঁরা আবু তালহা (রাযিঃ) কে পেলে তাঁকে নিয়ে আসা হলো। পক্ষান্তরে তাঁরা আবু উবায়দা (রাযিঃ)-কে পেলেন না। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য লাহাদ কবর খনন করেন। রাবী বলেনঃ মঙ্গলবারে তাঁরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাফনের কাজ সম্পন্ন করেন এবং তাঁকে তাঁর ঘরে খাটের উপর রাখা হয়। এরপর লোকেরা দলে দলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট প্রবেশ করেন এবং তাঁর জন্য দু'আ করেন। এমনকি পুরুষদের পালা শেষ হলে মহিলারা প্রবেশ করেন। অবশেষে তাদের পালা শেষ হলে বালকরা প্রবেশ করলো। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর জন্য এ দু'আয় কেউ ইমামতি করেননি।

তাঁর কবর কোথায় খনন করা হবে, এ নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। কতেক বলেনঃ তাঁকে তাঁর মসজিদে দাফন করা হবে। আর কতেক বলেনঃ তাঁকে তাঁর সাহাবীদের সঙ্গে কবরস্থানে দাফন করা হবে। তখন আবু বকর (রাযিঃ) বলেনঃ “আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যে স্থানে নবীর ইন্তিকাল হয়, সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।" রাযী বলেনঃ যে বিছানায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর ইন্তিকাল হয়, তাঁরা তা সরিয়ে নেন এবং তাঁর জন্য সেখানে কবর খনন করেন। এরপর তাঁকে বুধবার মধ্যরাতে দাফন করা হয়। 'আলী ইবন আবু তালিব, ফযল ইবন 'আব্বাস, তাঁর ভাই কুসাম এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর আযাদকৃত গোলাম শুকরান (রাযিঃ) তাঁর কবরে অবতরণ করেন।

আওস ইব্‌ন খাওলী, যিনি আবু লায়লা নামে পরিচিত ছিলেন, আলী ইবন্ আবু তালিব (রাযিঃ) কে বলেনঃ আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর ব্যাপারে আমাদেরও অংশ রয়েছে। 'আলী (রাযিঃ) তাকে বললেনঃ তুমিও অবতরণ কর। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আযাদকৃত গোলাম শুকরান (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পরিহিত চাদর নিয়েছিলেন। তিনি তাও কবরে দাফন করেন আর বলেনঃ আল্লাহর কসম! আপনার পরে তা আর কেউ পরিধান করবে না। কাজেই তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সঙ্গে দাফন করা হলো।
بَاب ذِكْرِ وَفَاتِهِ وَدَفْنِهِ ﷺ
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ أَنْبَأَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَقَ حَدَّثَنِي حُسَيْنُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لَمَّا أَرَادُوا أَنْ يَحْفِرُوا لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثُوا إِلَى أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ وَكَانَ يَضْرَحُ كَضَرِيحِ أَهْلِ مَكَّةَ وَبَعَثُوا إِلَى أَبِي طَلْحَةَ وَكَانَ هُوَ الَّذِي يَحْفِرُ لِأَهْلِ الْمَدِينَةِ وَكَانَ يَلْحَدُ فَبَعَثُوا إِلَيْهِمَا رَسُولَيْنِ وَقَالُوا اللّٰهُمَّ خِرْ لِرَسُولِكَ فَوَجَدُوا أَبَا طَلْحَةَ فَجِيءَ بِهِ وَلَمْ يُوجَدْ أَبُو عُبَيْدَةَ فَلَحَدَ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَلَمَّا فَرَغُوا مِنْ جِهَازِهِ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ وُضِعَ عَلَى سَرِيرِهِ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ دَخَلَ النَّاسُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسَالًا يُصَلُّونَ عَلَيْهِ حَتَّى إِذَا فَرَغُوا أَدْخَلُوا النِّسَاءَ حَتَّى إِذَا فَرَغُوا أَدْخَلُوا الصِّبْيَانَ وَلَمْ يَؤُمَّ النَّاسَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَدٌ لَقَدْ اخْتَلَفَ الْمُسْلِمُونَ فِي الْمَكَانِ الَّذِي يُحْفَرُ لَهُ فَقَالَ قَائِلُونَ يُدْفَنُ فِي مَسْجِدِهِ وَقَالَ قَائِلُونَ يُدْفَنُ مَعَ أَصْحَابِهِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ’مَا قُبِضَ نَبِيٌّ إِلَّا دُفِنَ حَيْثُ يُقْبَضُ قَالَ فَرَفَعُوا فِرَاشَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي تُوُفِّيَ عَلَيْهِ فَحَفَرُوا لَهُ ثُمَّ دُفِنَ صلى الله عليه وسلم وَسَطَ اللَّيْلِ مِنْ لَيْلَةِ الْأَرْبِعَاءِ وَنَزَلَ فِي حُفْرَتِهِ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ وَالْفَضْلُ بْنُ الْعَبَّاسِ وَقُثَمُ أَخُوهُ وَشُقْرَانُ مَوْلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ أَوْسُ بْنُ خَوْلِيٍّ وَهُوَ أَبُو لَيْلَى لِعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَنْشُدُكَ اللهَ وَحَظَّنَا مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ عَلِيٌّ انْزِلْ وَكَانَ شُقْرَانُ مَوْلَاهُ أَخَذَ قَطِيفَةً كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَلْبَسُهَا فَدَفَنَهَا فِي الْقَبْرِ وَقَالَ وَاللهِ لَا يَلْبَسُهَا أَحَدٌ بَعْدَكَ أَبَدًا فَدُفِنَتْ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم’.
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ১৬২৮ | মুসলিম বাংলা