কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ১৪১২
আন্তর্জাতিক নং: ১৪১২
মসজিদে কূবায় সালাত আদায় প্রসঙ্গে
১৪১২। হিশাম ইবন 'আম্মার (রাহঃ) …… সাহল ইবন হুনায়ফ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের ঘরে পবিত্রতা হাসিল করার পর মসজিদে কুবায় এসে সালাত আদায় করে, তার জন্য রয়েছে একটা 'উমরার সওয়াব।
بَاب مَا جَاءَ فِي الصَّلَاةِ فِي مَسْجِدِ قُبَاءَ
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، وَعِيسَى بْنُ يُونُسَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْكِرْمَانِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ بْنَ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، يَقُولُ قَالَ سَهْلُ بْنُ حُنَيْفٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ مَنْ تَطَهَّرَ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ أَتَى مَسْجِدَ قُبَاءٍ فَصَلَّى فِيهِ صَلاَةً كَانَ لَهُ كَأَجْرِ عُمْرَةٍ ‏"‏ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কুবা মদীনা মুনাউওয়ারা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শহর। এক কালে এখানে একটি কুয়া ছিল। কুয়াটির নাম ছিল কুবা। সে নামেই জনপদটির নামকরণ করা হয়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা মুকারামা থেকে হিজরত করে প্রথমে ১৪ দিন এ জনপদেই অবস্থান করেন। তিনি এখানে পৌঁছেছিলেন ১৩ নববী বর্ষের ৮ রবীউল আউওয়াল সোমবার মোতাবেক ২৩ ডিসেম্বর ৬২২ খ্রীষ্টাব্দে। তিনি আমর ইবন আওফ গোত্রের নেতা কুলছুম ইবন হাদম রাযি.-এর বাড়িতে উঠেছিলেন।

যেসকল সাহাবী প্রথমে হিজরত করে এসেছিলেন, তারা কুবায় অবস্থানকালে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও কুবায় পৌঁছে এ মসজিদেই নামায আদায় করতে থাকেন। এ মসজিদটির অপর নাম মাসজিদুত্‌-তাকওয়া। এ মসজিদ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-

لَمَسْجِدٌ أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَى مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ أَحَقُّ أَنْ تَقُومَ فِيهِ فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ

যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে, সেটাই তোমার দাঁড়ানোর বেশি উপযুক্ত। তাতে এমন লোক আছে, যারা পাক-পবিত্রতাকে বেশি পসন্দ করে। আল্লাহ পাক-পবিত্র লোকদের পসন্দ করেন।'২৬৫

হযরত উছমান রাযি., হযরত উমর ইবন আব্দুল আযীয রহ., উছমানী খলীফা সুলতান মাহমূদ খান ও বাদশা ফয়সাল যথাক্রমে মসজিদটির সম্প্রসারণের কাজ করেন। ১৫ হাজার বর্গমিটারের বিশাল এ মসজিদে বর্তমানে একসঙ্গে ১০ হাজার মুসল্লী নামায পড়তে পারে।

হাদীসে আছে যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি শনিবারে এ মসজিদে এসে দু'রাকআত নামায পড়তেন। কখনও পায়ে হেঁটে আসতেন এবং কখনও সওয়ার হয়ে।
এ মসজিদের অনেক ফযীলত। প্রতি শনিবারে এ মসজিদে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনই এর ফযীলতের জন্য যথেষ্ট।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

খ. কুবা মসজিদে প্রতি শনিবার সকাল বেলা যাওয়া ও নফল নামায পড়া মুস্তাহাব।

খ. এ হাদীছ দ্বারা মুবারক ও পবিত্র স্থানসমূহ যিয়ারতের প্রতি উৎসাহ পাওয়া যায়।

২৬৫. সূরা তাওবা (৯), আয়াত ১০৮

২৬৬. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩২৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৪১১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা, হাদীছ নং ৭৫২৯; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৫৯
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ১৪১২ | মুসলিম বাংলা