কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ১৩৩১
আন্তর্জাতিক নং: ১৩৩১
নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ
রাতের নফল সালাত আদায় প্রসঙ্গে
১৩৩১। মুহাম্মাদ ইবন সাব্বাহ (রাহঃ) …… 'আব্দুল্লাহ্ ইবন 'আমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ তুমি ঐ ব্যক্তির মত হয়ো না, যে রাতে উঠতো (নফল ইবাদত করতো) পরে সে তা ছেড়ে দেয়।
أبواب إقامة الصلوات والسنة فيها
بَاب مَا جَاءَ فِي قِيَامِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، أَنْبَأَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ لاَ تَكُنْ مِثْلَ فُلاَنٍ كَانَ يَقُومُ اللَّيْلَ فَتَرَكَ قِيَامَ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছেরও মূল বিষয়বস্তু 'আমলের ধারাবাহিকতা রক্ষায় উৎসাহ দেওয়া'।হযরত 'আব্দুল্লাহ ইব্ন 'আমর রাযি. অত্যন্ত 'ইবাদতগুযার ও যাহেদ প্রকৃতির সাহাবী ছিলেন। রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়া ও কুরআন তিলাওয়াত করা ছিল তাঁর নিয়মিত অভ্যাস। নিঃসন্দেহে এটি অতি বড় মুবারক এক অভ্যাস। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে এ অভ্যাস ধরে রাখতে উৎসাহ দিচ্ছেন এবংকোনওক্রমেই যাতে ছুটে না যায় তাই সতর্ক করছেন। কেননা কোনও নেক আমল শুরু করার পর তা ছেড়ে দেওয়া পছন্দনীয় নয়। এ অপছন্দনীয় কাজটি কোনও একজনের দ্বারা হয়ে গিয়েছিল। হযরত 'আব্দুল্লাহ ইব্ন 'আমর রাযি. যেন তার মত কাজ না করে বসেন, তাই তাঁকে সতর্ক করে বলছেন- তুমি অমুকের মত হয়ো না।

সে অমুক ব্যক্তি কে তা জানা যায় না। হাফেজ ইব্ন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, এ হাদীছটি বর্ণনার যত সূত্র আছে আমি তার কোনওটিতেই এ ব্যক্তির নাম পাইনি। সম্ভবত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নাম গোপন রাখার উদ্দেশ্যেই এভাবে ইঙ্গিতে কথাটি বলেছেন। এর দ্বারা বোঝা যায়, কারও দ্বারা কোনও ত্রুটিপূর্ণ কাজ হয়ে গেলে তাকে নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করা ও লোকসম্মুখে তাকে নিন্দিত করা উচিত নয়। এরূপ লোকের উদাহরণ টেনে যদি কাউকে বোঝানো উদ্দেশ্য হয়, তবে সে ক্ষেত্রে তার নাম উহ্য রেখে কেবল কাজটিই উল্লেখ করতে হবে। কেননা বোঝানোর উদ্দেশ্য তা দ্বারাই হাসিল হয়ে যায়, সেজন্য ব্যক্তির উল্লেখ জরুরি নয়।ব্যক্তির উল্লেখ দ্বারা লোকসম্মুখে তার নিন্দা করা হয়, যা গীবত ও কঠিন গুনাহ। তা থেকে বিরত থাকা অবশ্যকর্তব্য।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছেরও শিক্ষা হল নফল ইবাদত শুরু করার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা উচিত।

খ. কারও দ্বারা কোনও ত্রুটি না ঘটলেও ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে আগে থেকে তাকে সতর্ক করা যেতে পারে।

গ. কাউকে বোঝানোর জন্য অন্যকে দিয়ে দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে তার নাম উল্লেখ করা হতে বিরত থাকা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)