কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ১২৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ১২৩৩
রাসূলুল্লাহ এর অস্তিম রোগে সময়ে সালাত প্রসঙ্গে
১২৩৩। আবু বকর ইবন আবু শায়বা (রাহঃ) ….. 'আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) রোগাক্রান্ত থাকাকালে আবু বকর (রাযিঃ)-কে লোকদের নিয়ে সালাতের ইমামতি করার নির্দেশ দিলেন, তিনি লোকদের নিয়ে সালাতের ইমামতি শুরু করলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একটু সুস্থ বোধ করলেন। তখন নবী (ﷺ) বের হলেন, এ সময় আবু বকর (রাযিঃ) লোকদের নিয়ে সালাতের ইমামতি করছিলেন। আবু বকর (রাযিঃ) যখন নবী (ﷺ)-কে দেখতে পেলেন, তখন তিনি পেছনে হটতে উদ্যত হলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে ইশারায় বললেনঃ যেমন আছ তেমন থাক। এরপর নবী (ﷺ) আবু বকর (রাযিঃ)-এর পাশে, তাঁর বরাবর বসে পড়লেন। এরপর আবু বকর (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ইকতিদা করে সালাত আদায় করলেন, আর লোকেরা আবু বকর (রাযিঃ)-এর ইকতিদা করে সালাত আদায় করলো।
بَاب مَا جَاءَ فِي صَلَاةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ فِي مَرَضِهِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فِي مَرَضِهِ فَكَانَ يُصَلِّي بِهِمْ فَوَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ خِفَّةً فَخَرَجَ وَإِذَا أَبُو بَكْرٍ يَؤُمُّ النَّاسَ فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ اسْتَأْخَرَ فَأَشَارَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَىْ كَمَا أَنْتَ فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ حِذَاءَ أَبِي بَكْرٍ إِلَى جَنْبِهِ فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلاَةِ أَبِي بَكْرٍ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় অসুস্থতার কারণে ইমাম বসে নামায পড়ালেও পেছনের সুস্থ মুক্তাদীগণ দাঁড়িয়ে ইক্তিদা করবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৫৮৮)
এর বিপরীতে বুখারী-মুসলিমের বেশ কিছু হাদীসে বর্ণিত আছে যে, وَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا وَإِذَا صَلَّى قَاعِدًا فَصَلُّوا قُعُودًا أَجْمَعُونَ ইমাম দাঁড়িয়ে নামায পড়লে তোমরাও দাঁড়িয়ে নামায পড়বে। আর ইমাম বসে নামায পড়লে তোমরাও সকলে বসে নামায পড়বে। (বুখারী-৬৫৫, মুসলিম-৮০৬) ইমাম বুখারী রহ. হযরত আনাস রা. থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করার পরে বলেন, قَالَ الْحُمَيْدِيُّ قَوْلُهُ إِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا هُوَ فِي مَرَضِهِ الْقَدِيمِ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ النَّبِيُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا وَالنَّاسُ خَلْفَهُ قِيَامًا لَمْ يَأْمُرْهُمْ بِالْقُعُودِ وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ بِالْآخِرِ فَالْآخِرِ مِنْ فِعْلِ النَّبِيِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘আল্লামা হুমাইদী বলেন, ইমাম বসে নামায পড়লে তোমরাও বসে নামায পড়বে’ এটা নবী কারীম স.-এর পূর্বেকার অসুস্থতার সময়ের কথা। পরবর্তীতে নবী কারীম স. নামায পড়েছেন বসে আর তাঁর পেছনের মুক্তাদীগণ পড়েছেন দাঁড়িয়ে। রসূল স. তাদেরকে বসতে বলেননি। আর রাসূল সা. এর সর্বশেষ আমলই গ্রহণীয়। (বুখারী-৬৫৫) এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমাম বসে নামায পড়ালে তাঁর পেছনের সুস্থ মুক্তাদীগণ দাঁড়িয়ে ইক্তিদা করবে। এ আমলটি রসূল স.-এর শেষ আমল এবং এটাই বহাল। আর বসে ইক্তিদা করার আমলটি পূর্বের যা রহিত হয়ে গেছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ১২৩৩ | মুসলিম বাংলা