কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ১১৬৮
আন্তর্জাতিক নং: ১১৬৮
বিতরের বর্ণনা প্রসঙ্গে
১১৬৮। মুহাম্মাদ ইবন রুমহ্ মিসরী (রাহঃ) .......... খারিজা ইবন হুয়াফা আদাবী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নবী (ﷺ) আমাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেনঃ “আল্লাহ তোমাদের প্রতি একটি সালাত ফরয করেছেন—যা তোমাদের জন্য লাল উটের চাইতেও উত্তম। আর তা হলো 'বিতর। আল্লাহ্ তা তোমাদের জন্য 'ইশার সালাতের পর হতে ফজরের সময় পর্যন্ত নির্ধারণ করেছেন।
بَاب مَا جَاءَ فِي الْوِتْرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ الْمِصْرِيُّ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَاشِدٍ الزَّوْفِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُرَّةَ الزَّوْفِيِّ، عَنْ خَارِجَةَ بْنِ حُذَافَةَ الْعَدَوِيِّ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَمَدَّكُمْ بِصَلاَةٍ لَهِيَ خَيْرٌ لَكُمْ مِنْ حُمُرِ النَّعَمِ الْوِتْرُ جَعَلَهُ اللَّهُ لَكُمْ فِيمَا بَيْنَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ إِلَى أَنْ يَطْلُعَ الْفَجْرُ ‏"‏ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

বিতর নামায আদায় করা ওয়াজিব। ফরজ বা সুন্নত নয়। ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত প্রতিটি আলাদা পরিভাষা। প্রত্যেকটির হুকুম ও আলাদা।

বিতর নামায ওয়াজিব হবার স্বপক্ষের হাদীস সহীহ। আর বিতর নামায ওয়াজিব হবার স্বপক্ষে অনেক দলীল বিদ্যমান রয়েছে। নিচে কয়েকটি দলীল উপস্থাপন করা হল।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «الْوِتْرُ حَقٌّ، فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا، الْوِتْرُ حَقٌّ، فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا، الْوِتْرُ حَقٌّ، فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا

হযরত আব্দুল্লাহ বিন বুরাইদা তার পিতা রাঃ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, বিতর হল হক [সত্য]। সুতরাং যে ব্যক্তি তা আদায় না করবে, সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। বিতর হল হক [সত্য]। সুতরাং যে ব্যক্তি তা আদায় না করবে, সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৪১৯, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৪১৪৯, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-১২৭৮}

ইমাম হাকেম বলেন, এ হাদীসটি সহীহ। {মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-১১৪৬, ১১৪৭}

উক্ত হাদীসে দু’টি বিষয় লক্ষ্যনীয়। প্রথমত বিতর নামাযকে হক বলে আখ্যায়িত করে এটির প্রয়োজনীয়তা অধিক হবার প্রতি পরিস্কার ইংগিত করছে। দ্বিতীয়ত এটি পরিত্যাগকারীকে উম্মতে মুহাম্মদীর অন্তর্ভূক্ত নয় বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। যা পরিস্কারভাবে বিতর নামায ওয়াজিব হবার প্রমাণ বহন করছে।

এছাড়া আরো দেখুন-

عَنْ أَبِي أَيُّوبَ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْوِتْرُ حَقٌّ وَاجِبٌ

হযরত আবু আইয়্যুব রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, বিতর নামায হক ও ওয়াজিব। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৬৪০}

عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: «الْوِتْرُ وَاجِبٌ يُعَادُ إِلَيْهِ إِذَا نُسِيَ»

হযরত তাউস তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, বিতর নামায ওয়াজিব, কাযা হয়ে গেলে তা আদায় করতে হবে। {মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৪৫৮৭}

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ زَادَكُمْ صَلَاةً إِلَى صَلَاتِكُمْ وَهِيَ الْوَتْرُ»

আমর বিন শুয়াইব তার পিতা, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল সাঃ ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের নামাযের মাঝে একটি নামায বৃদ্ধি করে দিয়েছেন, সেটি হল বিতর নামায। {মুসান্না ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৬৮৫৮}

عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ: «الْوَتْرُ حَقٌّ، أَوْ وَاجِبٌ»

হযরত আবু আইয়্যুব আনসারী রাঃ বলেন, বিতর নামায ওয়াজিব। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৬৮৫৯}

মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবায় আরো এরকম অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে যা সাহাবী ও তাবেয়ীগণের বক্তব্য নির্ভর, যা পরিস্কার শব্দে প্রমাণ করে বিতর নামায ওয়াজিব।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ১১৬৮ | মুসলিম বাংলা