কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ
হাদীস নং: ১০৯৭
আন্তর্জাতিক নং: ১০৯৭
 নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ
জুমু'আর দিন উত্তম পোশাক পরিধান সম্পর্কে
১০৯৭।  সাহল ইবন আবু সাহল ও হাওসারা ইবন মুহাম্মাদ (রাহঃ) .......... আবু যার (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমু'আর দিন উত্তমরূপে গোসল করে, উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তার উৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করে এবং আল্লাহ্ তার পরিবারের জন্য যে সুগন্ধির ব্যবস্থা করেছেন, তা শরীরে লাগায়; এরপর জুমু'আর সালাতে আসে, অনর্থক আচরণ না করে এবং দু'জনের মাঝে ফাঁক করে অগ্রসর না হয়, তার এক জুমু'আ থেকে অপর জুমু'আ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
أبواب إقامة الصلوات والسنة فيها
بَاب مَا جَاءَ فِي الزِّينَةِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ
حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ أَبِي سَهْلٍ، وَحَوْثَرَةُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ وَدِيعَةَ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ  " مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَأَحْسَنَ غُسْلَهُ وَتَطَهَّرَ فَأَحْسَنَ طُهُورَهُ وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ وَمَسَّ مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ مِنْ طِيبِ أَهْلِهِ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ وَلَمْ يَلْغُ وَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে জুমআর দিনে গোসল করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা ছুন্নাত ও ফযীলতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (বাদায়েউস সানায়ে’: ১/২৬৯) জুমআর দিন গোসল করা জরুরী বলে যদিও কোন কোন ইমাম মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলামের শুরু যুগে সাহাবায়ে কিরামের আর্থিক দৈন্যতা ছিল চরমে। নিজেরা ক্ষেতে খামারে কাজ করতেন, মোটা কাপড় পরিধান করতেন এবং ঘর্মাক্ত শরীরে জুমার নামাযে আসতেন। ঘামের দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁদের অনটন দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন। তাঁরা উন্নতমানের পাতলা কাপড় পরিধান করেন। কাজের মানুষে তাঁদের কাজ করে। তখন গোসল করার ঐ প্রয়োজনীয়তা থাকেনি যা শুরু যুগে ছিলো। (তহাবী শরীফ-৭০৭) এ হাদীসের আলোকে বলা যেতে পারে যে, রসূল স.-এর বাণী الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ জুমআর দিনের গোসল করা সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়াজিব’ (বুখারী-৮১৬) এটা ইসলামের শুরু দিকের কথা। এর আরো একটি প্রমাণ মেলে مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَة ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ،  যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে অযু করে জুমআর নামাযে যায় এবং চুপ করে মনোযোগ সহকারে (ইমামের খুৎবা) শোনে তার এই জুমআ থেকে পরের জুমআ এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম-১৮৬১) এ হাদীসে জুমআর ফযীলত পাওয়ার জন্য তিনটি আমলের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে গোসলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকেও বুঝা যায় যে, জুমআর জন্য গোসল করা জরুরী নয়। তবে বুখারী: ৮৬৪ নং হাদীস থেকে গোসলের ফযীলত প্রমাণিত হয়েছে। অতএব এটা ছুন্নাত।
বর্ণনাকারী: