কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ১০১১
আন্তর্জাতিক নং: ১০১১
কিবলার বর্ণনা
১০১১। মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া আযদী (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া নিশাপুরী (রাহঃ)..... আবু হুরায়রা (লা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝখানে কিবলা অবস্থিত।
بَاب الْقِبْلَةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى النَّيْسَابُورِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ عَلِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مَعْشَرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قِبْلَةٌ ‏"‏ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কা’বা গৃহ এবং মাসজিদুল হারাম থেকে দূরে অবস্থানকারীদের জন্য কিবলামুখী হওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব হলো, কা’বা যে দিকে অবস্থিত সে দিকে ফিরে নামায পড়া। যেমন, আমাদের দেশ থেকে কা’বা পশ্চিম দিকে অবস্থিত। সুতরাং আমরা পশ্চিম দিকে ফিরে নামায পড়লেই ওটা কিবলামুখী হিসেবে গণ্য হবে। যদিও মানচিত্র, কম্পাস বা অন্য কোন যন্ত্রের সাহায্যে প্রমাণিত হয় যে, আমাদের নামায হুবহু কা’বা বরাবর হয়নি। ইমাম তিরমিযী রহ. হযরত ইবনে উমার রা.-এর বরাতে উপরিউক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন যে, إِذَا جَعَلْتَ المغْرِبَ عَنْ يَمِينِكَ، وَالمشْرِقَ عَنْ يَسَارِكَ فَمَا بَيْنَهُمَا قِبْلَةٌ، إِذَا اسْتَقْبَلْتَ القِبْلَةَ যখন তুমি কিবলামুখী হবে তখন পশ্চিম দিককে তোমার ডানে এবং পূর্ব দিককে তোমার বামে রাখবে এ দুইয়ের মাঝে যা আছে সেটা কিবলা। (এটা মদীনার হিসাব যেখান থেকে কা’বা দক্ষিণে) আমাদের দেশের উদাহরণ হিসেবে পেশ করা যায় যে, কা’বাকে শূন্য ডিগ্রি ধরে তার ডানে-বামে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কা’বার দিক হিসেবে গণ্য। কেননা কুরআন-হাদীসে পৃথিবীর চারটি দিকের কথা আলোচনা করা হয়েছে। তাহলো: পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ। আর পৃথিবীর চতুর্পার্শ্বকে ডিগ্রিতে ভাগ করলে প্রতি ভাগে ৯০ ডিগ্রি করে পড়ে। অতএব, কা’বা থেকে দূরে অবস্থানকারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কা’বা বরাবর থেকে ডানে ৪৫ ডিগ্রি এবং বামে ৪৫ ডিগ্রি মোট ৯০ ডিগ্রি পর্যনত্ম কা’বার দিক হিসেবে গণ্য করা হবে। এ কারণে নামায আদায়ের সময় খুব খিয়াল রাখতে হবে যে, কোন কারণে কিবলার দিক সামান্য পরিবর্তন হলেও যেন এর চেয়ে বেশী সরে না যায়। যে কোন এক দিকে ৪৫ ডিগ্রির চেয়ে বেশী ঘুরে গেলে সেটাকে কা’বার দিক বলে গণ্য করা হবে না। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৪২৮) অবশ্য ঘুরে যাওয়ার সাথে সাথে আবার কিবলামুখী হয়ে গেলে নামায ভঙ্গ হবে না। কেননা এ সামান্য বিষয় থেকে বেঁচে থাকা কঠিন। আর শরীআত এটা থেকে মানুষকে রেহাই দিয়েছে। (ছূরা বাকারা: ২৮৬, ছূরা হজ্ব: ৭৮)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান