কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ৯২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৯২৪
সালাম ফিরানোর পর যা বলা হয়
৯২৪। আবু বকর ইবন আবু শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবন 'আব্দুল মালিক ইবন আবু শাওয়ারিব (রাহঃ)... 'আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন সালাম ফিরাতেন, তখন নীচের দু'আটি পাঠ করার সময় পরিমাণ বসতেনঃ اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ

"হে আল্লাহ! আপনি সালাম এবং আপনার থেকেই শান্তি বর্ষিত হয়। আপনি বরকতময়, হে মহিমান্বিত ও গৌরবময় সত্ত্বা!"
بَاب مَا يُقَالُ بَعْدَ التَّسْلِيمِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِذَا سَلَّمَ لَمْ يَقْعُدْ إِلاَّ مِقْدَارَ مَا يَقُولُ ‏ "‏ اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ ‏"‏ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ফরয নামাযের পর ছুন্নাত আদায়ে এতটুকু দেরি করা যাবে, যতটুকু সময় হাদীসে বর্ণিত দুআ পড়তে লাগে। উপরিউক্ত দুআ ছাড়াও হাদীসে আরো অনেক দুআর কথা বর্ণিত আছে যা থেকে রসূল স. ফরযের পরে যে কোনটা পড়তেন। অতএব, ফরযের পরে ছুন্নাত শুরু করতে এতটুকু দেরি করা যায় উপরিউক্ত যে কোন দুআ বা তার সমপরিমাণ কোন দুআ পড়তে যতটুকু সময় লাগে। এর চেয়ে বেশী সময় দেরি করা ছুন্নাতের খেলাফ হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৫৩০)
ফরয নামাযের পরে যে সকল দুআ-দুরূদ এবং তাসবীহ-তাহলীল পড়ার ফযীলত সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে তা বাহ্যিকভাবে এ হাদীসের পরিপন্থী। উভয় শ্রেণীর হাদীসের মধ্যে এভাবে সমন্বয় হতে পারে যে, যে সকল ফরয নামাযের পরে ছুন্নাত নেই সে সকল নামাযের পরেই তা পাঠ করবে। আর যে সকল ফরয নামাযের পরে ছুন্নাত আছে সে সকল নামাযের পরে প্রথমে ছুন্নাত পড়ে নিয়ে তারপর উক্ত দুআ-দুরূদ পাঠ করবে। কেননা দুআ-দুরূদ পড়ার হাদীসসমূহে বর্ণিত دُبُرُ الصَّلَاةِ অর্থাৎ নামাযের পরে শব্দের মধ্যে সময় নির্দিষ্ট করা নেই। বরং এ শব্দটি অনির্দিষ্ট সময় বুঝায়। তাই এর মাঝে খানিকটা দেরি করার অবকাশ রয়েছে। ছুন্নতের পরে দুআ-দুরূদ পড়লেও উক্ত হাদীসসমূহের উপর আমল পরিত্যাগ হবে না। পক্ষান্তরে হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, রসূল স. ফরযের পরে اللهمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ... দুআ’র চেয়ে বেশী দেরি করতেন না। আর দুআ-দুরূদ পাঠ করতে এর চেয়ে বেশী সময় পার হওয়াটাই স্বাভাবিক সুতরাং উপরিউক্ত পদ্ধতিতে উভয় শ্রেণীর হাদীসের মাঝে সমন্বয় করে আমল করা উত্তম হবে।
উল্লেখ্য, যে সকল ফরয নামাযের পরে ছুন্নাত রয়েছে সে সকল নামাযের পরে একাকী বা সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করলে তা এতটা সংক্ষিপ্ত করা উচিত যাতে ছুন্নাত নামায আদায় করতে হাদীসে বর্ণিত সময়ের চেয়ে দেরি না হয়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন