কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৪. মসজিদের আদব ও জামাআত সংক্রান্ত অধ্যায়

হাদীস নং: ৭৪২
আন্তর্জাতিক নং: ৭৪২
মসজিদ নির্মাণের বৈধ স্থান
৭৪২। আলী ইবন মুহাম্মাদ (রাহঃ) ….. আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী (ﷺ)-এর মসজিদের স্থানটি ছিল বানূ নাজ্জার গোত্রের। সেখানে কিছু খেজুর গাছ এবং মুশরিকদের কবর ছিল। নবী (ﷺ) তাদের বললেনঃ তোমরা এই জমিটি আমার কাছে বিক্রি কর। তারা বললেনঃ আমরা কখনো এর বিনিময় মূলা গ্রহণ করবো না। রাবী বলেন তখন নবী (ﷺ) মসজিদ নির্মাণের কাজে হাত দেন এবং তাঁরা [সাহাবায়ে কিরাম (রাযিঃ)] গর্ত করে মাটি ভরাট করছিলেন। এই সময় নবী (ﷺ) এই দু'আ পড়তেনঃ
الا ان العيش عيش الأخرة * فاغفر للأنصار والمهاجرة
জেনে রাখ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। (ইয়া আল্লাহ্!) আপনি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করুন। (রাবী বলেনঃ) এর পূর্বে যেখানে সালাতের সময় উপস্থিত হতো, নবী (ﷺ) সেখানেই সালাত আদায় করতেন।
بَاب أَيْنَ يَجُوزُ بِنَاءُ الْمَسَاجِدِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ الضُّبَعِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ مَوْضِعُ مَسْجِدِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ لِبَنِي النَّجَّارِ وَكَانَ فِيهِ نَخْلٌ وَمَقَابِرُ لِلْمُشْرِكِينَ فَقَالَ لَهُمُ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏"‏ ثَامِنُونِي بِهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا لاَ نَأْخُذُ لَهُ ثَمَنًا أَبَدًا ‏.‏ قَالَ فَكَانَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَبْنِيهِ وَهُمْ يُنَاوِلُونَهُ وَالنَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ‏"‏ أَلاَ إِنَّ الْعَيْشَ عَيْشُ الآخِرَةِ فَاغْفِرْ لِلأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَكَانَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يُصَلِّي قَبْلَ أَنْ يَبْنِيَ الْمَسْجِدَ حَيْثُ أَدْرَكَتْهُ الصَّلاَةُ ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ কথাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিকবার বলেছেন। এর দ্বারা তিনি সাহাবীদের বুঝাচ্ছিলেন যে, দেখ দুনিয়ার কষ্ট স্থায়ী কিছু নয়। দুনিয়া যেমন ক্ষণস্থায়ী, তেমনি এর কষ্ট-ক্লেশও ক্ষণস্থায়ী। তোমরা কষ্ট করছ আল্লাহর জন্য। একদিন কষ্ট থাকবে না। কিন্তু এর পুরস্কারস্বরূপ অনন্ত অসীম আখিরাতে তোমরা অফুরন্ত সুখ-শান্তি ভোগ করতে পারবে।

আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাক্যটির মাধ্যমে যেন উম্মতকে সতর্ক করছেন, দুনিয়ার কোনও সফলতা, সমৃদ্ধি কিংবা অন্য কোনও আনন্দদায়ক বস্তু অর্জিত হয়ে যাওয়ায় তোমরা খুশিতে মেতে যেয়ো না। কারণ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার সবই ক্ষণস্থায়ী। স্থায়ী সুখ ও আনন্দ কেবল আখিরাতেই আছে। তাই আসল লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত আখিরাতের সফলতা। সর্বাবস্থায় সে চিন্তা-চেতনা অন্তরে জাগ্রত রেখো।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

দুনিয়ার সুখ-দুঃখ, আরাম-কষ্ট কোনও অবস্থায়ই আখিরাতের কথা ভুলে যেতে নেই। সর্বাবস্থায় মন-মস্তিষ্কে এ চেতনা জাগ্রত রাখা চাই যে, আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। তাই সে জীবনে মুক্তিলাভ করাই হবে জীবনের আসল লক্ষ্যবস্তু।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ৭৪২ | মুসলিম বাংলা