কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
৩. আযানের অধ্যায় ও তার সুন্নাতসমূহ
হাদীস নং: ৭০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৭০৮
আযানে তারজী'র বর্ণনা
৭০৮। মুহাম্মাদ ইবন বাশশার ও মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া (রাহঃ)....... 'আব্দুল্লাহ ইবন মুহায়রীয (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইয়াতীম হিসাবে আবু মাহযূরা ইবন মি'য়ার (রাযিঃ)-এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। যখন তিনি তাঁকে সিরিয়া অভিমুখে পাঠান, তখন আমি আবু মাহমুরা (রাযিঃ)-কে বললামঃ হে চাচাজান! আমি সিরিয়ায় যাচ্ছি। আমি আপনাকে আপনার আযান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছি। তখন তিনি আমাকে জানালেন যে, আবু মাহযূরা বলেছেনঃ আমি একটি দলের সাথে বের হয়েছিলাম এবং আমরা কোন এক রাস্তায় ছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মুয়াযযিন তাঁর উপস্থিতিতে সালাতের জন্য আযান দিলেন। আমরা মুয়াযযিনের আযানের ধ্বনি শুনলাম। আযান অপছন্দ হওয়ার কারণে, আমরা তার শব্দাবলীর প্রতিশব্দ উচ্চস্বরে উচ্চারণ করছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শব্দ শুনে আমাদের নিকট একদল লোক পাঠান, যারা আমাদের নিয়ে গিয়ে তাঁর সামনে বসিয়ে দিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মাঝে ঐ ব্যক্তি কে যার উঁচু আওয়াজ আমি শ্রবণ করেছি? সে সময় কাওমের সব লোকেরা ইশারা করে আমাকে দেখিয়ে দিল। তিনি সকলকে ছেড়ে দিলেন এবং আমাকে আটকে রাখলেন। আর তিনি আমাকে বললেনঃ দাঁড়াও এবং আযান দাও। তখন আমি দাঁড়ালাম। আর এ সময় আমার কাছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তিনি যে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন, তার চাইতে অধিকতর অপ্রিয় কোন কিছুই ছিল না। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সামনে দাঁড়ালাম আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) স্বয়ং আমাকে আযান শিক্ষা দিচ্ছিলেন; এবং তিনি বললেন, বলঃ
الله أكبر ، الله أكبر، الله أكبر، الله أالله ، أشهد أن لا اله الا الله ، أشهد أن لا اله الا الله ، أشهد أن محمدا رسول الله ، أشهد أن محمدا رسول الله ،
“আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই; আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল; আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল। এরপর তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি আরো উঁচু আওয়াজে বলঃ
أشهد أن لا اله الا الله ، أشهد أن لا اله الا لله ، أشهد أن محمدا رسول الله ، أشهد أن محمدا رسول الله ، حي على الصلوة ، حي على الصلوة ، حي على الفلاح - حي على الفلاح - الله اكبر الله أكبر - لا اله الا الله
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই (২ বার); আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল (২ বার), সালাতের দিকে এসো, (২ বার); কল্যাণের দিকে এসো, (২ বার); আল্লাহ মহান, (২ বার); আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, (১বার)।
যখন আমি আযান শেষ করলাম, তখন তিনি আমাকে কাছে ডাকলেন এবং রূপাভর্তি একটি থলে আমাকে দান করলেন। এরপর নবী (ﷺ) তাঁর হাত আবু মাহযূরার কপালে রাখেন, অতঃপর তা তাঁর চেহারায় বুলিয়ে দেন। এরপর নবী (ﷺ) তাঁর হাত তাঁর বুকে বুলিয়ে নিলেন, এমন কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাত আবু মাহযূরার নাভীস্থল পর্যন্ত পৌঁছলো। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন এবং তোমার উপর বরকত বর্ষিত হোক। তখন আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমাকে মক্কা মুয়াযযমায় আযান দেওয়ার অনুমতি দিবেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আমি তোমাকে অনুমতি দিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সম্পর্কে আমার যা কিছু অপছন্দনীয় ছিল, সব দূর হয়ে গেল এবং তদস্থলে তাঁর প্রতি অকুণ্ঠ ভালবাসা স্থান পেল। এরপর আমি মক্কা মুয়াযযমায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিয়োগকৃত গভর্ণর আত্তাব ইবন আমীদ (রাযিঃ)-এর কাছে উপনীত হলাম। তখন আমি তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট থেকে প্রাপ্ত অনুমতিক্রমে সালাতের আযান দিলাম।
রাবী বলেনঃ 'আব্দুল্লাহ ইবন মুহায়রীয (রাযিঃ)-এর মতই এই হাদীসটি আমাকে আবু মাহযূরার সাথে সাক্ষাতকারিগণ বর্ণনা করেছেন।
الله أكبر ، الله أكبر، الله أكبر، الله أالله ، أشهد أن لا اله الا الله ، أشهد أن لا اله الا الله ، أشهد أن محمدا رسول الله ، أشهد أن محمدا رسول الله ،
“আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই; আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল; আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল। এরপর তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি আরো উঁচু আওয়াজে বলঃ
أشهد أن لا اله الا الله ، أشهد أن لا اله الا لله ، أشهد أن محمدا رسول الله ، أشهد أن محمدا رسول الله ، حي على الصلوة ، حي على الصلوة ، حي على الفلاح - حي على الفلاح - الله اكبر الله أكبر - لا اله الا الله
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই (২ বার); আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল (২ বার), সালাতের দিকে এসো, (২ বার); কল্যাণের দিকে এসো, (২ বার); আল্লাহ মহান, (২ বার); আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, (১বার)।
যখন আমি আযান শেষ করলাম, তখন তিনি আমাকে কাছে ডাকলেন এবং রূপাভর্তি একটি থলে আমাকে দান করলেন। এরপর নবী (ﷺ) তাঁর হাত আবু মাহযূরার কপালে রাখেন, অতঃপর তা তাঁর চেহারায় বুলিয়ে দেন। এরপর নবী (ﷺ) তাঁর হাত তাঁর বুকে বুলিয়ে নিলেন, এমন কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাত আবু মাহযূরার নাভীস্থল পর্যন্ত পৌঁছলো। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন এবং তোমার উপর বরকত বর্ষিত হোক। তখন আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমাকে মক্কা মুয়াযযমায় আযান দেওয়ার অনুমতি দিবেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আমি তোমাকে অনুমতি দিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সম্পর্কে আমার যা কিছু অপছন্দনীয় ছিল, সব দূর হয়ে গেল এবং তদস্থলে তাঁর প্রতি অকুণ্ঠ ভালবাসা স্থান পেল। এরপর আমি মক্কা মুয়াযযমায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিয়োগকৃত গভর্ণর আত্তাব ইবন আমীদ (রাযিঃ)-এর কাছে উপনীত হলাম। তখন আমি তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট থেকে প্রাপ্ত অনুমতিক্রমে সালাতের আযান দিলাম।
রাবী বলেনঃ 'আব্দুল্লাহ ইবন মুহায়রীয (রাযিঃ)-এর মতই এই হাদীসটি আমাকে আবু মাহযূরার সাথে সাক্ষাতকারিগণ বর্ণনা করেছেন।
بَاب التَّرْجِيعِ فِي الْأَذَانِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، أَنْبَأَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَيْرِيزٍ، - وَكَانَ يَتِيمًا فِي حِجْرِ أَبِي مَحْذُورَةَ بْنِ مِعْيَرٍ حِينَ جَهَّزَهُ إِلَى الشَّامِ - فَقُلْتُ لأَبِي مَحْذُورَةَ أَىْ عَمِّ إِنِّي خَارِجٌ إِلَى الشَّامِ وَإِنِّي أُسْأَلُ عَنْ تَأْذِينِكَ فَأَخْبَرَنِي أَنَّ أَبَا مَحْذُورَةَ قَالَ خَرَجْتُ فِي نَفَرٍ فَكُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيقِ فَأَذَّنَ مُؤَذِّنُ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِالصَّلاَةِ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَسَمِعْنَا صَوْتَ الْمُؤَذِّنِ وَنَحْنُ عَنْهُ مُتَنَكِّبُونَ فَصَرَخْنَا نَحْكِيهِ نَهْزَأُ بِهِ فَسَمِعَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَأَرْسَلَ إِلَيْنَا قَوْمًا فَأَقْعَدُونَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ " أَيُّكُمُ الَّذِي سَمِعْتُ صَوْتَهُ قَدِ ارْتَفَعَ " . فَأَشَارَ إِلَىَّ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ وَصَدَقُوا فَأَرْسَلَ كُلَّهُمْ وَحَبَسَنِي وَقَالَ لِي " قُمْ فَأَذِّنْ " . فَقُمْتُ وَلاَ شَىْءَ أَكْرَهُ إِلَىَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَلاَ مِمَّا يَأْمُرُنِي بِهِ فَقُمْتُ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَأَلْقَى عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ التَّأْذِينَ هُوَ بِنَفْسِهِ فَقَالَ " قُلِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ " . ثُمَّ قَالَ لِي " ارْجِعْ فَمُدَّ مِنْ صَوْتِكَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . ثُمَّ دَعَانِي حِينَ قَضَيْتُ التَّأْذِينَ فَأَعْطَانِي صُرَّةً فِيهَا شَىْءٌ مِنْ فِضَّةٍ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ عَلَى نَاصِيَةِ أَبِي مَحْذُورَةَ ثُمَّ أَمَرَّهَا عَلَى وَجْهِهِ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ ثُمَّ عَلَى كَبِدِهِ ثُمَّ بَلَغَتْ يَدُ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سُرَّةَ أَبِي مَحْذُورَةَ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " بَارَكَ اللَّهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمَرْتَنِي بِالتَّأْذِينِ بِمَكَّةَ قَالَ " نَعَمْ قَدْ أَمَرْتُكَ " . فَذَهَبَ كُلُّ شَىْءٍ كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مِنْ كَرَاهِيَةٍ وَعَادَ ذَلِكَ كُلُّهُ مَحَبَّةً لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَدِمْتُ عَلَى عَتَّابِ بْنِ أَسِيدٍ عَامِلِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِمَكَّةَ فَأَذَّنْتُ مَعَهُ بِالصَّلاَةِ عَلَى أَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . قَالَ وَأَخْبَرَنِي ذَلِكَ مَنْ أَدْرَكَ أَبَا مَحْذُورَةَ عَلَى مَا أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَيْرِيزٍ .


বর্ণনাকারী: