আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৪- শর্তাবলীর বিধান সংক্রান্ত অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ২৭১৮
১৬৯০. নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত সওয়ারীর পিঠে চড়ে যাওয়ার শর্তে পশু বিক্রি করা জায়েয
২৫৩৫। আবু নুআইম (রাহঃ) .... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর এক উটের উপর সওয়ার হয়ে ভ্রমন করছিলেন, সেটি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। তিনি বললেন, নবী (ﷺ) আমার পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন এবং উটটিকে (চলার জন্য) আঘাত করে সেটির জন্য দুআ করলেন। ফলে উটটি এত দ্রুত চলতে লাগলো যে, কখনো তেমন দ্রুত চলেনি। তারপর তিনি বললেন, ‘এক উকিয়ার বিনিময়ে এটি আমার কাছে বিক্রি কর।’ আমি বললাম, না। তিনি বললেন, ‘এটি আমার কাছে এক উকিয়ার বিনিময়ে বিক্রি কর।’ তখন আমি সেটি বিক্রি করলাম। কিন্তু আমার স্বজনের কাছে পৌঁছা পর্যন্ত সওয়ার (আরোহণের) হওয়ার অধিকার রেখে দিলাম। তারপর উট নিয়ে আমি তার কাছে গেলাম। তিনি আমাকে এর নগদ মূল্য দিলেন। তারপর আমি চলে গেলাম। তখন আমার পেছনে লোক পাঠালেন। পরে বললেন, ‘তোমার উট নেয়ার ইচ্ছা আমার ছিল না। তোমার এ উট তুমি নিয়ে যাও এটি তোমারই মাল।’
শু’বা (রাহঃ) জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উটটির পেছনে মদীনা পর্যন্ত আমাকে সওয়ার হতে দিলেন। ইসহাক (রাহঃ) জারীর (রাহঃ) সূত্রে মুগীরা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, আমি সেটি এ শর্তে বিক্রি করলাম যে, মদীনা পৌঁছা পর্যন্ত তার পিঠে সওয়ার হবার অধিকার আমার থাকবে। আতা (রাহঃ) প্রমুখ বলেন, (রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছিলেন) মদীনা পর্যন্ত সওয়ার হওয়ার অধিকার তাতে তোমার থাকবে। ইবনে মুনকাদির (রাহঃ) জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি মদীনা পর্যন্ত এর পিঠে সওয়ার হওয়ার শর্ত করেছেন। যায়দ ইবনে আসলাম (রাযিঃ) জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তোমার প্রত্যাবর্তন করা পর্যন্ত এর পিঠে সওয়ার হতে পারবে। আবু যুবাইর (রাহঃ) জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তোমাকে মদীনা পর্যন্ত এর পিঠে সওয়ার হতে দিলাম। আমাশ (রাহঃ) সলিম (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এর উপর সওয়ার হয়ে তুমি পরিজনের কাছে পৌঁছবে। উবাইদুল্লাহ ও ইবনে ইসহাক (রাহঃ) ওয়াহাব (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (ﷺ) এক উকিয়ার বিনিময়ে সেটি খরীদ করেছিলেন।
জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে যায়দ ইবনে আসলাম (রাহঃ) ওয়াহাব (রাহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। ইবনে জুরাইজ (রাহঃ) আতা (রাহঃ) প্রমুখ সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, (রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন) আমি এটাকে চার দিনারের বিনিময়ে নিলাম। দশ দিরহামে এক দিনার হিসাবে তাতে এক উকিয়াই হয়। মুগীরা (রাহঃ) শাবী (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে এবং ইবনে মুনকাদির ও আবু যুবাইর (রাহঃ) জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনায় মূল্য উল্লেখ করেননি।
আমাশ (রাহঃ) সলিম (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনায় এক উকিয়া স্বর্ণ উল্লেখ করেছেন। সালিম (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে আবু ইসহাকের বর্ণনায় রয়েছে দ’শ দিরহামের বিনিময়ে। উবাইদুল্লাহ ইবনে মিকসাম (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে দাউদ ইবনে কায়স (রাহঃ) এর বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি সেটি তাবুকের পথে খরীদ করেন। রাবী বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছেন, চার উকিয়ার বিনিময়ে। আবু নযরা (রাযিঃ) জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি সেটি বিশ দীনারে খরীদ করেছেন। তবে শাবী (রাহঃ) কর্তৃক বর্ণিত এক উকিয়াই অধিক বর্ণিত। আবু আব্দুল্লাহ (রাহঃ) বলেন, (রিওয়ায়াতে বিভিন্ন রকমের হলেও) শর্ত আরোপ কৃত রিওয়ায়াতই অধিক সূত্রে বর্ণিত এবং আমার মতে এটাই অধিক সহীহ।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ২৫৩৫ | মুসলিম বাংলা