আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪২- সাক্ষ্যপ্রদানের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৪৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৬১
১৬৫৬. এক মহিলা অপর মহিলার সততা সম্পর্কে সাক্ষ্য দান
২৪৮৫। আবু রাবী সুলাইমান ইবনে দাউদ (রাহঃ) .... নবী (ﷺ) এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, মিথ্যা অপবাদকারীরা যখন তার সম্পর্কে অপবাদ রটনা করল এবং আল্লাহ তা থেকে তার পবিত্রতা ঘোষণা করলেন। রাবীগণ বলেন, আয়িশা (রাযিঃ) বলেছেন, রাসূল (ﷺ) সফরে বের হওয়ার ইচ্ছা করলে স্বীয় সহধর্মিণীদের মধ্যে কুর’আ (লটারী) ঢালার মাধ্যমে সফর সংগিণী নির্বাচন করতেন। তাদের মধ্যে যার নাম বেরিয়ে আসত তাকেই তিনি নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতেন। এক যুদ্ধে যাওয়ার সময় তিনি আমাদের মধ্যে কুর’আ (লটারী) ঢাললেন, তাতে আমার নাম বেরিয়ে এলো। তাই আমি তার সঙ্গে (সফরে) বের হলাম। এটা পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পরের ঘটনা।
আমাকে হাওদার ভিতরে সওয়ারীতে উঠানো হতো, আবার হাওদার ভিতরে (থাকা অবস্থায়) নামানো হতো। এভাবেই আমরা সফর করতে থাকলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঐ যুদ্ধ শেষ করে যখন প্রত্যাবর্তন করলেন এবং আমরা মদীনার কাছে পৌছে গেলাম তখন এক রাতে তিনি (কাফেলাকে) মনযিল ত্যাগ করার ঘোষণা দিলেন। উক্ত ঘোষণা দেওয়ার সময় আমি উঠে সেনাদলকে অতিক্রম করে গেলাম এবং নিজের প্রয়োজন সেরে হাওদায় ফিরে এলাম। তখন বুকে হাত দিয়ে দেখি আযফার দেশীয় সাদা কালো পাথরের তৈরী আমার একটা মালা ছিড়ে পড়ে গেছে। তখন আমি আমার মালার সন্ধানে ফিরে গেলাম, এবং সন্ধান কার্য আমাকে দেরী করিয়ে দিলো। ওদিকে যারা আমার হাওদা উঠিয়ে দিতো তারা তা উঠিয়ে যে উটে আমি সওয়ার হতাম, তার পিঠে রেখে দিলো। তাদের ধারণা ছিলো যে, আমি হাওদাতেই আছি। তখনকার মেয়েরা হালকা পাতলা হতো, মোটা সোটা হতো না। কেননা খুব সামান্য খাবার তারা থেতে পেতো। তাই হাওদায় উঠতে গিয়ে ভার তাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হল না।
তদুপরি সে সময় আমি অল্প বয়স্ক কিশোরী ছিলাম এবং তখন তারা হাওদা উঠিয়ে উট হাকিয়ে রওয়ানা হয়ে গেলো। এদিকে সেনাদল চলে যাওয়ার পর আমি আমার মালা পেয়ে গেলাম। কিন্তু তাদের জায়গায় ফিরে এসে দেখি, সেখানে কেউ নেই। তখন আমি আমার জায়গায় এসে বসে থাকাই মনন্থ করলাম। আমার ধারণা ছিল যে, আমাকে না পেয়ে আবার এখানে তারা ফিরে আসবে। বসে থাকা অবস্থায় আমার দু চোখে ঘুম নেমে এলে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। সাফওয়ান ইবনে মুআত্তাল, যিনি প্রথমে সুলামী এবং পরে যাকওয়ানী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, সেনা দলের পিছনে (পরিদর্শক হিসাবে) থেকে গিয়েছিলেন। সকালের দিকে আমার অবস্থান স্থলের কাছাকাছি এসে পৌছলেন এবং একজন ঘুমন্ত মানুষের অবয়ব দেখতে পেয়ে আমার দিকে এগিয়ে এলেন। পর্দার বিধান নাযিলের আগে তিনি আমাকে দেখেছিলেন। সে সময় তিনি উট বসাচ্ছিলেন, সে সময় তার ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ শব্দে আমি জেগে গেলাম। তিনি উটের সামনের পা চেপে ধরলে আমি তাতে সওয়ার হলাম। আর তিনি আমাকে নিয়ে সওয়ারী হাকিয়ে চললেন।
সেনাদল ঠিক দুপুরে যখন অবতরণ করে বিশ্রাম করছিল, তখন আমরা সেনাদলে পৌছলাম। সে সময় যারা ধ্বংস হওয়ার, তারা ধ্বংস হল। অপবাদ রটনায় যে নেতৃত্ব দিয়েছিল, সে হল (মুনাফিকের সরদার) আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুল। আমরা মদীনায় উপনীত হলাম এবং আমি এসেই একমাস অসুস্থতায় ভোগলাম। এদিকে কিছু লোক অপবাদ রটনাকারীদের রটনা নিয়ে চর্চা করতে থাকল। আমার অসুস্থার সময় এ বিষয়টি আমাকে সন্দিহান করে তুললো যে, নবী (ﷺ) এর তরফ থেকে সেই স্নেহ আমি অনুভব করছিলাম না, যা আমার অসুস্থতার সময় সচরাচর আমি অনুভব করতাম। তিনি শুধু ঘরে প্রবেশ করে সালাম দিয়ে বলতেন কেমন আছ? আমি সে বিষয়ের কিছুই জানতাম না। শেষ পর্যন্ত খুব দুর্বল হয়ে পড়লাম।
(একরাতে) আমি ও উম্মু মিসতাহ্ প্রয়োজন সারার উদ্দেশ্যে ময়দানে বের হলাম। আমরা রাতেই শুধু সে দিকে যেতাম। এ আমাদের ঘরগুলোর নিকটবর্তী স্থানে পায়খানা বানানোর আগের নিয়ম। জঙ্গলে কিংবা দুরবর্তী স্থানে প্রয়োজন সারার ব্যাপারে আমাদের অবস্থাটা প্রথম যুগের আরবদের মতই ছিলো। যাই হোক, আমি এবং উম্মু মিসতাহ বিনতে আবু রুহম হেটে চলছিলাম। ইত্যবসরে সে তার চাঁদরে পা জড়িয়ে হোচট খেলো এবং (পড়ে গিয়ে) বললো মিসতাহ এর জন্য দুর্ভোগ। আমি তাকে বললাম, তুমি খুব খারাপ কথা বলেছ। বদর যুদ্ধে শরীক হয়েছে, এমন এক লোককে তুমি অভিশাপ দিচ্ছ! সে বলল, হে সরলমনা! (তোমার সম্পর্কে) যে সব কথা তারা উঠিয়েছে, তা কি তুমি শুনোনি? এরপর অপবাদ রটনাকারীদের সব রটনা সম্পর্কে সে আমাকে অবহিত করলো।
তখন আমার রোগের উপর রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলো। আমি ঘরে ফিরে আসার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, কেমন আছো? আমি বললাম, আমাকে আমার পিতা-মাতার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিন। তিনি (আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, আমি তখন তাদের (পিতা-মাতার) কাছ থেকে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাচ্ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি আমার পিতা-মাতার কাছে গেলাম। তারপর আমি মাকে বললাম, লোকেরা কি বলাবলি করে? তিনি বললেন, বেটি! ব্যাপারটাকে নিজের জন্য হালকাভাবেই গ্রহণ কর। আল্লাহর কসম! এমন সুন্দরী নারী খুব কমই আছে, যাকে তার স্বামী ভালোবাসে আর তার একাধিক সতীনও আছে; অথচ ওরা তাকে উত্ত্যক্ত করে না।
আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ্। লোকেরা সত্যি তবে এসব কথা রটিয়েছে? তিনি (আয়িশা) বলেন, ভোর পর্যন্ত সে রাত আমার এমনভাবে কেটে গেলো যে, চোখের পানি আমার বন্ধ হল না এবং ঘুমের একটু পরশও পেলাম না। এভাবে ভোর হল। পরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ওহীর বিলম্ব দেখে আপন স্ত্রীকে বর্জনের ব্যাপারে ইবনে আবু তালিব ও উসামা ইবনে যায়দকে ডেকে পাঠালেন। যাই হোক; উসামা পরিবারের জন্য তার (নবী (ﷺ)) ভালোবাসার প্রতি লক্ষ্য করে পরামর্শ দিতে গিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর কসম (তার সম্পর্কে) ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমরা জানি না, আর আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কিছুতেই আল্লাহ্ আপনার পথ সংকীর্ণ করেননি। তাকে ছাড়া আরো অনেক মহিলা আছে। আপনি না হয় বাঁদীকে জিজ্ঞাসা করুন সে আপনাকে সত্য কথা বলবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন (বাঁদী) বারীরাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন। হে বারীরা! তুমি কি তার মধ্যে সন্দেহজনক কিছু দেখতে পেয়েছ? বারীরা বলল, আপনাকে যিনি সত্যসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম করে বলছি, না তেমন কিছু দেখিনি এই একটি অবস্থায়ই দেখেছি যে তিনি অল্পবয়স্কা কিশোরী। আর তাই আটা-খামীর করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সেই ফাকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। সে দিনই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (মসজিদে) ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুলের ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচার উপায় জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে যে লোক আমাকে জ্বালাতন করেছে, তার মুকাবিলায় কে প্রতিকার করবে? আল্লাহর কসম, আমি তো আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু জানি না। আর এমন ব্যক্তিকে জড়িয়ে তারা কথা তুলেছে, যার সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমি জানি না আর সে তো আমার সাথে ছাড়া আমার ঘরে কখনও প্রবেশ করত না।
তখন সা’দ (ইবনে মু’আয রাযিঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর কসম, আমি তার প্রতিকার করবো। যদি সে আউস গোত্রের কেউ হয়ে থাকে, তাহলে তার গর্দান উড়িয়ে দিব; আর যদি সে আমাদের খাযরাজ গোত্রীয় ভাইদের কেউ হয়, তাহলে আপনি তার ব্যাপারে আমাদের নির্দেশ দিবেন, আমরা আপনার নির্দেশ পালন করব। খাযরাজ গোত্রপতি সা’দ ইবনে উবাদা (রাযিঃ) তখন দাঁড়িয়ে গেলেন। এর আগে তিনি ভালো লোকই ছিলেন। আসলে গোত্রপ্রীতি তাকে পেয়ে বসেছিলো। তিনি বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কসম! তুমি তাকে হত্যা করতে পারনে না, সে শক্তি তোমার নেই। তখনি উসায়িদ ইবনুল হুযাইর (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, তুমিই মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাকে হত্যা করে ছাড়ব। আসলে তুমি একজন মুনাফিক। তাই মুনাফিকদের পক্ষ হয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছ। এরপর আউস ও খাযরাজ উভয় গোত্রই উত্তেজিত হয়ে উঠলো। এমনকি রাসূল (ﷺ) মিম্বরে থাকা অবস্থায়ই তারা (লড়াইয়ে) উদ্যত হল। তখন তিনি নেমে তাদের চুপ করালেন। এতে সবাই শান্ত হল আর তিনিও নীরবতা অবলম্বন করলেন।
আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, সেদিন সারাক্ষণ আমি কাঁদলাম, চোখের পানি আমার শুকালনা এবং ঘুমের সামান্য পরশও পেলাম না। আমার পিতা-মাতা আমার পাশে পাশেই থাকলেন। পুরো রাত দিন আমি কেদেই কাটালাম। আমার মনে হল, কান্না বুঝি আমার কলিজা বিদীর্ণ করে দিবে। তিনি (আয়িশা) বলেন, তারা (পিতা-মাতা) উভয়ে আমার কাছেই বসা ছিলেন, আর আমি কাঁদছিলাম। ইতিমধ্যে এক আনসারী মহিলা ভিতরে আসার অনুমতি চাইল। আমি তাকে অনুমতি দিলাম। সেও আমার সঙ্গে বসে কাঁদতে শুরু করল। আমরা এ অবস্থায় থাকতেই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) প্রবেশ করে (আমার কাছে) বসলেন, অথচ যে দিন থেকে আমার সম্পর্কে অপবাদ রটানো হয়েছে সেদিন থেকে তিনি আমার কাছে বসেননি। এর মধ্যে একমাস কেটে গিয়েছিল। অথচ আমার সম্পর্কে তার কাছে কোন ওহী নাযিল হল না।
তিনি (আয়িশা) বলেন, এরপর হামদ ও সানা পাঠ করে তিনি বললেন, হে আয়িশা! তোমার সম্পর্কে এ ধরনের কথা আমার কাছে পৌছেছে। তুমি নির্দোষ হলে আল্লাহ্ অবশ্যই তোমার নির্দোষিতা ঘোষণা করবেন। আর যদি তুমি কোন গুনাহে জড়িয়ে গিয়ে থাক, তাহলে আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইস্তিগফার কর। কেননা, বান্দা নিজের পাপ স্বীকার করে তওবা করলে আল্লাহ তাওবা কবুল করেন। তিনি যখন তার বক্তব্য শেষ করলেন, তখন আমার অশ্রু বন্ধ হয়ে গেল। এমনকি এক বিন্দু অশ্রুও আমি অনুভব করলাম না। আমার পিতাকে বললাম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে আমার তরফ থেকে জওয়াব দিন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, আমি বুঝে উঠতে পারি না, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে কি বলব? এরপর আমার (মা-কে) বললাম, আমার তরফ থেকে রাসূল (ﷺ) এর কথার জওয়াব দিন। তিনিও বললেন, আল্লাহর কসম! আমি বুঝি উঠতে পারি না, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে কি বলব?
আমি তখন অল্প বয়স্কা কিশোরী! কুরআনও খুব বেশী পড়িনি। তবুও আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমার জানতে বাকী নেই যে, লোকেরা যা রটাচ্ছে, তা আপনারা শুনতে পেয়েছেন এবং আপনাদের মনে তা বসে গেছে, ফলে আপনারা তা বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এখন যদি আমি আপনাদের বলি যে, আমি নিষ্পাপ আর আল্লাহ জানেন, আমি অবশ্যই নিষ্পাপ, তবু আপনারা আমার সে কথা বিশ্বাস করবেন না। আর যদি আপনাদের কাছে কোন বিষয় আমি স্বীকার করি, অথচ আল্লাহ জানেন আমি নিষ্পাপ তাহলে অবশ্যই আপনারা আমাকে বিশ্বাস করে নিবেন। আল্লাহর কসম, ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর পিতার ঘটনা ছাড়া আমি আপনাদের জন্য কোন দৃষ্টান্ত খুজে পাচ্ছি না। যখন তিনি বলেছিলেন, পূর্ণ ধৈর্যধারণই আমার জন্য শ্রেয়। আর তোমরা যা বলছো সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যকারী।
এরপর আমি আমার বিছানায় পার্শ্ব পরিবর্তন করে নিলাম। এটা আমি অবশ্যই আশা করছিলাম যে, আল্লাহ আমাকে নির্দোষ ঘোষণা করবেন। কিন্তু আল্লাহর কসম! এ আমি ভাবিনি যে, আমার ব্যাপারে কোন ওহী নাযিল হবে। কুরআনে আমার ব্যাপারে কোন কথা বলা হবে, এ বিষয়ে আমি নিজেকে উপযুক্ত মনে করি না। তবে আমি আশা করছিলাম যে, নিদ্রায় আল্লাহর রাসূল এমন কোন স্বপ্ন দেখবেন, যা আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করবে। কিন্তু আল্লাহর কসম! তিনি তার আসন ছেড়ে তখনও উঠে যাননি এবং ঘরের কেউ বেরিয়েও যায়নি, এরই মধ্যে তার উপর ওহী নাযিল হওয়া শুরু হয়ে গেল এবং (ওহী নাযিলের সময়) তিনি যে রূপ কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতেন, সে রূপ অবস্থার সম্মুখীন হন। এমনকি সে মুহুর্তে শীতের দিনেও তার শরীর থেকে মুক্তার ন্যায় ফোটা ফোটা ঘাম ঝরে পড়তো।
যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে ওহীর সে অবস্থা কেটে গেল, তখন তিনি হাসছিলেন। আর প্রথম যে বাক্যটি তিনি উচ্চারণ করলেন তা ছিল এই যে, আমাকে বললেন, হে আয়িশা! আল্লাহর প্রশংসা করো। কেননা, তিনি তোমাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছেন। আমার মাতা তখন আমাকে বললেন, রাসূল (ﷺ) এর কাছে যাও। (কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর) আমি বললাম, না, আল্লাহর কসম! আমি তার কাছে যাবো না এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রশংসাও করব না। আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাযিল করেন إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِنْكُمْ যখন আমার সাফাই সম্পর্কে নাযিল হল তখন আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! নিকটাত্মীয়তার কারণে মিসতাহ্ ইবনে উসাসার জন্য তিনি যা খরচ করতেন, আয়িশা (রাযিঃ) সম্পর্কে এ ধরনের কথা বলার পর মিসতার জন্য আমি আর কখনও খরচ করবো না।
তখন আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাযিল করলেনوَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أن يؤتوا إِلَى قَوْلِهِ غَفُورٌ رَحِيمٌ তোমাদের মধ্যে যারা নিআমতপ্রাপ্ত ও স্বচ্ছল, তারা যেন দান না করার কসম না করে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। তখন আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম। আমি অবশ্যই চাই আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। এরপর তিনি মিসতাহ্ কে যা দিতেন, তা পুনরায় দিতে লাগলেন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যায়নাব বিনতে জাহাশকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি বললেন, হে যায়নাব! (আয়িশা সম্পর্কে) তুমি কি জানো? তুমি কি দেখছো? তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার কান, আমি আমার চোখের হিফাজত করতে চাই আল্লাহর কসম তার সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমি জানি না। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, অথচ তিনিই আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন। কিন্তু পরহেযগারীর কারণে আল্লাহ তার হিফাযত করেছেন।
আবু রাবী (রাহঃ) .... আয়িশা ও আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ফুলাইহ্ (রাহঃ) .... কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
باب تَعْدِيلِ النِّسَاءِ بَعْضِهِنَّ بَعْضًا
2661 - حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، وَأَفْهَمَنِي بَعْضَهُ أَحْمَدُ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، وَسَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، وَعَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ اللَّيْثِيِّ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ قَالَ لَهَا أَهْلُ الإِفْكِ مَا قَالُوا، فَبَرَّأَهَا اللَّهُ مِنْهُ، قَالَ الزُّهْرِيُّ: وَكُلُّهُمْ حَدَّثَنِي طَائِفَةً مِنْ حَدِيثِهَا، وَبَعْضُهُمْ أَوْعَى مِنْ بَعْضٍ، وَأَثْبَتُ لَهُ اقْتِصَاصًا، وَقَدْ وَعَيْتُ عَنْ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمُ الحَدِيثَ الَّذِي حَدَّثَنِي عَنْ عَائِشَةَ، وَبَعْضُ حَدِيثِهِمْ يُصَدِّقُ بَعْضًا زَعَمُوا أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ سَفَرًا أَقْرَعَ بَيْنَ أَزْوَاجِهِ، فَأَيَّتُهُنَّ خَرَجَ سَهْمُهَا، خَرَجَ بِهَا مَعَهُ، فَأَقْرَعَ بَيْنَنَا فِي غَزَاةٍ غَزَاهَا، فَخَرَجَ سَهْمِي، فَخَرَجْتُ مَعَهُ بَعْدَ مَا أُنْزِلَ الحِجَابُ، فَأَنَا أُحْمَلُ فِي هَوْدَجٍ، وَأُنْزَلُ فِيهِ، فَسِرْنَا حَتَّى إِذَا فَرَغَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ غَزْوَتِهِ تِلْكَ [ص:174]، وَقَفَلَ وَدَنَوْنَا مِنَ المَدِينَةِ آذَنَ لَيْلَةً بِالرَّحِيلِ، فَقُمْتُ حِينَ آذَنُوا بِالرَّحِيلِ، فَمَشَيْتُ حَتَّى جَاوَزْتُ الجَيْشَ، فَلَمَّا قَضَيْتُ شَأْنِي أَقْبَلْتُ إِلَى الرَّحْلِ، فَلَمَسْتُ صَدْرِي، فَإِذَا عِقْدٌ لِي مِنْ جَزْعِ أَظْفَارٍ قَدِ انْقَطَعَ، فَرَجَعْتُ، فَالْتَمَسْتُ عِقْدِي، فَحَبَسَنِي ابْتِغَاؤُهُ، فَأَقْبَلَ الَّذِينَ يَرْحَلُونَ لِي، فَاحْتَمَلُوا هَوْدَجِي، فَرَحَلُوهُ عَلَى بَعِيرِي الَّذِي كُنْتُ أَرْكَبُ وَهُمْ يَحْسِبُونَ أَنِّي فِيهِ، وَكَانَ النِّسَاءُ إِذْ ذَاكَ خِفَافًا لَمْ يَثْقُلْنَ وَلَمْ يَغْشَهُنَّ اللَّحْمُ، وَإِنَّمَا يَأْكُلْنَ العُلْقَةَ مِنَ الطَّعَامِ، فَلَمْ يَسْتَنْكِرِ القَوْمُ حِينَ رَفَعُوهُ ثِقَلَ الهَوْدَجِ، فَاحْتَمَلُوهُ وَكُنْتُ جَارِيَةً حَدِيثَةَ السِّنِّ، فَبَعَثُوا الجَمَلَ وَسَارُوا، فَوَجَدْتُ عِقْدِي بَعْدَ مَا اسْتَمَرَّ الجَيْشُ، فَجِئْتُ مَنْزِلَهُمْ وَلَيْسَ فِيهِ أَحَدٌ، فَأَمَمْتُ مَنْزِلِي الَّذِي كُنْتُ بِهِ، فَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ سَيَفْقِدُونَنِي، فَيَرْجِعُونَ إِلَيَّ، فَبَيْنَا أَنَا جَالِسَةٌ غَلَبَتْنِي عَيْنَايَ، فَنِمْتُ وَكَانَ صَفْوَانُ بْنُ المُعَطَّلِ السُّلَمِيُّ ثُمَّ الذَّكْوَانِيُّ مِنْ وَرَاءِ الجَيْشِ، فَأَصْبَحَ عِنْدَ مَنْزِلِي، فَرَأَى سَوَادَ إِنْسَانٍ نَائِمٍ، فَأَتَانِي وَكَانَ يَرَانِي قَبْلَ الحِجَابِ، فَاسْتَيْقَظْتُ بِاسْتِرْجَاعِهِ حِينَ أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ فَوَطِئَ يَدَهَا، فَرَكِبْتُهَا، فَانْطَلَقَ يَقُودُ بِي الرَّاحِلَةَ حَتَّى أَتَيْنَا الجَيْشَ بَعْدَ مَا نَزَلُوا مُعَرِّسِينَ فِي نَحْرِ الظَّهِيرَةِ، فَهَلَكَ مَنْ هَلَكَ، وَكَانَ الَّذِي تَوَلَّى الإِفْكَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُولَ، فَقَدِمْنَا المَدِينَةَ، فَاشْتَكَيْتُ بِهَا شَهْرًا وَالنَّاسُ يُفِيضُونَ مِنْ قَوْلِ أَصْحَابِ الإِفْكِ، وَيَرِيبُنِي فِي وَجَعِي، أَنِّي لاَ أَرَى مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللُّطْفَ الَّذِي كُنْتُ أَرَى مِنْهُ حِينَ أَمْرَضُ، إِنَّمَا يَدْخُلُ فَيُسَلِّمُ، ثُمَّ يَقُولُ: «كَيْفَ تِيكُمْ» ، لاَ أَشْعُرُ بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ حَتَّى نَقَهْتُ، فَخَرَجْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ المَنَاصِعِ مُتَبَرَّزُنَا لاَ نَخْرُجُ إِلَّا لَيْلًا إِلَى لَيْلٍ، وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ نَتَّخِذَ الكُنُفَ قَرِيبًا مِنْ بُيُوتِنَا، وَأَمْرُنَا أَمْرُ العَرَبِ الأُوَلِ فِي البَرِّيَّةِ أَوْ فِي التَّنَزُّهِ، فَأَقْبَلْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ بِنْتُ أَبِي رُهْمٍ نَمْشِي، فَعَثَرَتْ فِي مِرْطِهَا، فَقَالَتْ: تَعِسَ مِسْطَحٌ، فَقُلْتُ لَهَا: بِئْسَ مَا قُلْتِ، أَتَسُبِّينَ رَجُلًا شَهِدَ بَدْرًا، فَقَالَتْ: يَا هَنْتَاهْ، أَلَمْ تَسْمَعِي مَا قَالُوا؟ فَأَخْبَرَتْنِي بِقَوْلِ أَهْلِ الإِفْكِ، فَازْدَدْتُ مَرَضًا عَلَى مَرَضِي، فَلَمَّا رَجَعْتُ إِلَى بَيْتِي دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَلَّمَ فَقَالَ: «كَيْفَ تِيكُمْ» ، فَقُلْتُ: ائْذَنْ لِي إِلَى أَبَوَيَّ، قَالَتْ: وَأَنَا حِينَئِذٍ أُرِيدُ أَنْ أَسْتَيْقِنَ الخَبَرَ مِنْ قِبَلِهِمَا، فَأَذِنَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَتَيْتُ أَبَوَيَّ فَقُلْتُ لِأُمِّي: مَا يَتَحَدَّثُ بِهِ النَّاسُ؟ فَقَالَتْ: يَا بُنَيَّةُ هَوِّنِي عَلَى نَفْسِكِ الشَّأْنَ، فَوَاللَّهِ لَقَلَّمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ قَطُّ وَضِيئَةٌ عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا وَلَهَا ضَرَائِرُ، إِلَّا أَكْثَرْنَ عَلَيْهَا، فَقُلْتُ: سُبْحَانَ اللَّهِ، وَلَقَدْ يَتَحَدَّثُ [ص:175] النَّاسُ بِهَذَا، قَالَتْ: فَبِتُّ تِلْكَ اللَّيْلَةَ حَتَّى أَصْبَحْتُ لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ، وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ، ثُمَّ أَصْبَحْتُ، فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، وَأُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ حِينَ اسْتَلْبَثَ الوَحْيُ، يَسْتَشِيرُهُمَا فِي فِرَاقِ أَهْلِهِ، فَأَمَّا أُسَامَةُ، فَأَشَارَ عَلَيْهِ بِالَّذِي يَعْلَمُ فِي نَفْسِهِ مِنَ الوُدِّ لَهُمْ، فَقَالَ أُسَامَةُ: أَهْلُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَلاَ نَعْلَمُ وَاللَّهِ إِلَّا خَيْرًا، وَأَمَّا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَمْ يُضَيِّقِ اللَّهُ عَلَيْكَ، وَالنِّسَاءُ سِوَاهَا كَثِيرٌ، وَسَلِ الجَارِيَةَ تَصْدُقْكَ، فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَرِيرَةَ، فَقَالَ: «يَا بَرِيرَةُ هَلْ رَأَيْتِ فِيهَا شَيْئًا يَرِيبُكِ؟» ، فَقَالَتْ بَرِيرَةُ: لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ، إِنْ رَأَيْتُ مِنْهَا أَمْرًا أَغْمِصُهُ عَلَيْهَا قَطُّ، أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ، تَنَامُ عَنِ العَجِينِ، فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ يَوْمِهِ، فَاسْتَعْذَرَ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَيٍّ ابْنِ سَلُولَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ يَعْذُرُنِي مِنْ رَجُلٍ بَلَغَنِي أَذَاهُ فِي أَهْلِي، فَوَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِي إِلَّا خَيْرًا، وَقَدْ ذَكَرُوا رَجُلًا مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ إِلَّا خَيْرًا، وَمَا كَانَ يَدْخُلُ عَلَى أَهْلِي إِلَّا مَعِي» ، فَقَامَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَا وَاللَّهِ أَعْذُرُكَ مِنْهُ إِنْ كَانَ مِنَ الأَوْسِ ضَرَبْنَا عُنُقَهُ، وَإِنْ كَانَ مِنْ إِخْوَانِنَا مِنَ الخَزْرَجِ أَمَرْتَنَا، فَفَعَلْنَا فِيهِ أَمْرَكَ، فَقَامَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ - وَهُوَ سَيِّدُ الخَزْرَجِ، وَكَانَ قَبْلَ ذَلِكَ رَجُلًا صَالِحًا وَلَكِنِ احْتَمَلَتْهُ الحَمِيَّةُ - فَقَالَ: كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللَّهِ، لاَ تَقْتُلُهُ، وَلاَ تَقْدِرُ عَلَى ذَلِكَ، فَقَامَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ فَقَالَ: كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللَّهِ، وَاللَّهِ لَنَقْتُلَنَّهُ، فَإِنَّكَ مُنَافِقٌ تُجَادِلُ عَنِ المُنَافِقِينَ، فَثَارَ الحَيَّانِ الأَوْسُ، وَالخَزْرَجُ حَتَّى هَمُّوا، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى المِنْبَرِ، فَنَزَلَ، فَخَفَّضَهُمْ حَتَّى سَكَتُوا، وَسَكَتَ وَبَكَيْتُ يَوْمِي لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ، وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ، فَأَصْبَحَ عِنْدِي أَبَوَايَ، وَقَدْ بَكَيْتُ لَيْلَتَيْنِ وَيَوْمًا حَتَّى أَظُنُّ أَنَّ البُكَاءَ فَالِقٌ كَبِدِي، قَالَتْ: فَبَيْنَا هُمَا جَالِسَانِ عِنْدِي، وَأَنَا أَبْكِي، إِذِ اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ، فَأَذِنْتُ لَهَا، فَجَلَسَتْ تَبْكِي مَعِي، فَبَيْنَا نَحْنُ كَذَلِكَ إِذْ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَلَسَ وَلَمْ يَجْلِسْ عِنْدِي مِنْ يَوْمِ قِيلَ فِيَّ مَا قِيلَ قَبْلَهَا، وَقَدْ مَكَثَ شَهْرًا لاَ يُوحَى إِلَيْهِ فِي شَأْنِي شَيْءٌ، قَالَتْ: فَتَشَهَّدَ ثُمَّ قَالَ: «يَا عَائِشَةُ، فَإِنَّهُ بَلَغَنِي عَنْكِ كَذَا وَكَذَا، فَإِنْ كُنْتِ بَرِيئَةً، فَسَيُبَرِّئُكِ اللَّهُ، وَإِنْ كُنْتِ أَلْمَمْتِ بِذَنْبٍ، فَاسْتَغْفِرِي اللَّهَ وَتُوبِي إِلَيْهِ، فَإِنَّ العَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ بِذَنْبِهِ، ثُمَّ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ» ، فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَقَالَتَهُ، قَلَصَ دَمْعِي حَتَّى مَا أُحِسُّ مِنْهُ قَطْرَةً، وَقُلْتُ لِأَبِي: أَجِبْ عَنِّي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: وَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا أَقُولُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ لِأُمِّي: أَجِيبِي عَنِّي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:176] فِيمَا قَالَ، قَالَتْ: وَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا أَقُولُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: وَأَنَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ، لاَ أَقْرَأُ كَثِيرًا مِنَ القُرْآنِ، فَقُلْتُ: إِنِّي وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُ أَنَّكُمْ سَمِعْتُمْ مَا يَتَحَدَّثُ بِهِ النَّاسُ، وَوَقَرَ فِي أَنْفُسِكُمْ وَصَدَّقْتُمْ بِهِ، وَلَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّي بَرِيئَةٌ، وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنِّي لَبَرِيئَةٌ لاَ تُصَدِّقُونِي بِذَلِكَ، وَلَئِنِ اعْتَرَفْتُ لَكُمْ بِأَمْرٍ، وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنِّي بَرِيئَةٌ لَتُصَدِّقُنِّي، وَاللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلَكُمْ مَثَلًا، إِلَّا أَبَا يُوسُفَ إِذْ قَالَ: {فَصَبْرٌ جَمِيلٌ، وَاللَّهُ المُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ} [يوسف: 18] ، ثُمَّ تَحَوَّلْتُ عَلَى فِرَاشِي وَأَنَا أَرْجُو أَنْ يُبَرِّئَنِي اللَّهُ، وَلَكِنْ وَاللَّهِ مَا ظَنَنْتُ أَنْ يُنْزِلَ فِي شَأْنِي وَحْيًا، وَلَأَنَا أَحْقَرُ فِي نَفْسِي مِنْ أَنْ يُتَكَلَّمَ بِالقُرْآنِ فِي أَمْرِي، وَلَكِنِّي كُنْتُ أَرْجُو أَنْ يَرَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّوْمِ رُؤْيَا يُبَرِّئُنِي اللَّهُ، فَوَاللَّهِ مَا رَامَ مَجْلِسَهُ وَلاَ خَرَجَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ البَيْتِ، حَتَّى أُنْزِلَ عَلَيْهِ الوَحْيُ، فَأَخَذَهُ مَا كَانَ يَأْخُذُهُ مِنَ البُرَحَاءِ، حَتَّى إِنَّهُ لَيَتَحَدَّرُ مِنْهُ مِثْلُ الجُمَانِ مِنَ العَرَقِ فِي يَوْمٍ شَاتٍ، فَلَمَّا سُرِّيَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَضْحَكُ، فَكَانَ أَوَّلَ كَلِمَةٍ تَكَلَّمَ بِهَا، أَنْ قَالَ لِي: «يَا عَائِشَةُ احْمَدِي اللَّهَ، فَقَدْ بَرَّأَكِ اللَّهُ» ، فَقَالَتْ لِي أُمِّي: قُومِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: لاَ وَاللَّهِ، لاَ أَقُومُ إِلَيْهِ، وَلاَ أَحْمَدُ إِلَّا اللَّهَ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: {إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِنْكُمْ} الآيَاتِ، فَلَمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ هَذَا فِي بَرَاءَتِي، قَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحِ بْنِ أُثَاثَةَ لِقَرَابَتِهِ مِنْهُ: وَاللَّهِ لاَ أُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحٍ شَيْئًا أَبَدًا بَعْدَ مَا قَالَ لِعَائِشَةَ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: {وَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يُؤْتُوا} إِلَى قَوْلِهِ {غَفُورٌ رَحِيمٌ} [البقرة: 173] فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: بَلَى وَاللَّهِ إِنِّي لَأُحِبُّ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لِي، فَرَجَعَ إِلَى مِسْطَحٍ الَّذِي كَانَ يُجْرِي عَلَيْهِ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُ زَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ عَنْ أَمْرِي، فَقَالَ: «يَا زَيْنَبُ، مَا عَلِمْتِ مَا رَأَيْتِ» ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَحْمِي سَمْعِي وَبَصَرِي، وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا إِلَّا خَيْرًا، قَالَتْ: وَهِيَ الَّتِي كَانَتْ تُسَامِينِي، فَعَصَمَهَا اللَّهُ بِالوَرَعِ قَالَ: وَحَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ مِثْلَهُ، قَالَ: وَحَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَيَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ مِثْلَهُ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)