আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪১- হিবা তথা উপহার প্রদান, এর ফযীলত ও এতে উৎসাহ প্রদান
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ২৬১২
১৬৩০. উটের পিঠে আরোহী কোন ব্যক্তিকে সেই উটটি দান করা জায়েয।
হুমায়দী (রাহঃ) ....ইবনে উমর(রাযিঃ)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী(ﷺ) এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম আর আমি (আমার পিতার) একটি অবাধ্য উটের উপর সওয়ার ছিলাম। তখন নবী(ﷺ)উমরকে বললেন, এটা আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তিনি তা বিক্রি করলেন। এরপর নবী(ﷺ)তাকে বললেন, হে আব্দুল্লাহ, এটা তোমার।
পরিচ্ছেদঃ ১৬৩১. এমন কিছু হাদিয়া করা, যা পরিধান করা অপছন্দনীয়
হুমায়দী (রাহঃ) ....ইবনে উমর(রাযিঃ)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী(ﷺ) এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম আর আমি (আমার পিতার) একটি অবাধ্য উটের উপর সওয়ার ছিলাম। তখন নবী(ﷺ)উমরকে বললেন, এটা আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তিনি তা বিক্রি করলেন। এরপর নবী(ﷺ)তাকে বললেন, হে আব্দুল্লাহ, এটা তোমার।
পরিচ্ছেদঃ ১৬৩১. এমন কিছু হাদিয়া করা, যা পরিধান করা অপছন্দনীয়
২৪৩৭। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাযিঃ) মসজিদের দ্বার প্রান্তে একজোড়া রেশমী বস্ত্র (বিক্রি হতে) দেখে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! এটা যদি আপনি খরিদ করে নেন এবং তা জুমআর দিনে ও প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ে পরিধান করতেন। তখন তিনি বললেন, এ তো সেই পরিধান করে, আখিরাতে যার কোন হিসসা নেই। পরে (কোন এক সময়) কিছু রেশমী জোড়া আসলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেখান থেকে উমর (রাযিঃ) কে এক জোড়া দান করলেন। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন আপনি এটা আমাকে পরিধান করতে দিলেন অথচ (কয়েকদিন আগে) রেশমী কাপড় সম্পর্কে আপনি যা বলার বলেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমি তো এটা তোমাকে নিজে পরিধান করার জন্য দেইনি। তখন উমর (রাযিঃ) তা মক্কায় বসবাসকারী তার এক মুশরিক ভাইকে দিয়ে দিলেন।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীছে জানানো হয়েছে, রেশমী পোশাক পরে এমন ব্যক্তি, আখিরাতে যার কোনও অংশ নেই। অর্থাৎ যে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। তার মানে এটা অমুসলিমদের পোশাক। অন্য হাদীছে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরে, সে আখিরাতে রেশমী পোশাক পরবে না। আর এ কারণে মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে। সারমর্ম হল- রেশমি পোশাক দুনিয়ায় অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিম ব্যক্তির জন্য দুনিয়ায়। এটা পরা জায়েয নয়। তা সত্ত্বেও কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি রেশমী পোশাক পরে, তবে আখিরাতে সে এ পোশাক পরতে পারবে না। অর্থাৎ এ হুকুম অমান্য করার কারণে সে শুরুতে জান্নাতে যেতে পারবে না। জান্নাতের পোশাক রেশমী পোশাক। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
‘সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের’ (সূরা ফাতির, আয়াত ৩৩)
কাজেই 'দুনিয়ায় যে মুমিন রেশমী পোশাক পরে, আখিরাতে সে তা পরবে না' দ্বারা বোঝানো হয়েছে সে প্রথমে জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথমে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঈমানের বদৌলতে সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভ করার পর জান্নাতের অপরাপর নি'আমতের মতো রেশমী পোশাকও সে পাবে। কেউ কেউ বলেন, দুনিয়ায় যে মুমিন ব্যক্তি রেশমী পোশাক পরবে, সে জান্নাত লাভ করলেও জান্নাতের অন্যান্য নি'আমত ঠিকই পাবে, কিন্তু রেশমী পোশাক পাবে না।
প্রশ্ন দাঁড়ায়, তবে তো তার মনে রেশমী পোশাক না পাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে, অথচ জান্নাত কষ্টের জায়গা নয়?
এর উত্তর হল, জান্নাতে এমন ব্যক্তির অন্তর থেকে রেশমী পোশাকের চাহিদাই দূর করে দেওয়া হবে। অন্তরে যখন এ পোশাকের চাহিদা থাকবে না, তখন না পাওয়ার দরুন কোনও কষ্টও সে পাবে না, যেমন সাধারণ স্তরের জান্নাতীগণ উচ্চস্তরের জান্নাতবাসীগণের মতো মর্যাদা না পাওয়ার কারণে কোনও কষ্ট বোধ করবে না।
হাদীছের মূল বার্তা হল মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক সম্পর্কে সতর্ক করা, যাতে তারা এটা না পরে। কেননা এটা পরলে শরী'আতের হুকুম অমান্য করা হবে। পরিণামে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যদি না আল্লাহ তা'আলা মাফ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিমদেরকে অবশ্যই এ পোশাক পরিধান করা হতে বিরত থাকতে হবে।
খ. রেশমী পোশাক পরিধান করলে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরিধান করলে জান্নাতে এ নি'আমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।
وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
‘সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের’ (সূরা ফাতির, আয়াত ৩৩)
কাজেই 'দুনিয়ায় যে মুমিন রেশমী পোশাক পরে, আখিরাতে সে তা পরবে না' দ্বারা বোঝানো হয়েছে সে প্রথমে জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথমে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঈমানের বদৌলতে সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভ করার পর জান্নাতের অপরাপর নি'আমতের মতো রেশমী পোশাকও সে পাবে। কেউ কেউ বলেন, দুনিয়ায় যে মুমিন ব্যক্তি রেশমী পোশাক পরবে, সে জান্নাত লাভ করলেও জান্নাতের অন্যান্য নি'আমত ঠিকই পাবে, কিন্তু রেশমী পোশাক পাবে না।
প্রশ্ন দাঁড়ায়, তবে তো তার মনে রেশমী পোশাক না পাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে, অথচ জান্নাত কষ্টের জায়গা নয়?
এর উত্তর হল, জান্নাতে এমন ব্যক্তির অন্তর থেকে রেশমী পোশাকের চাহিদাই দূর করে দেওয়া হবে। অন্তরে যখন এ পোশাকের চাহিদা থাকবে না, তখন না পাওয়ার দরুন কোনও কষ্টও সে পাবে না, যেমন সাধারণ স্তরের জান্নাতীগণ উচ্চস্তরের জান্নাতবাসীগণের মতো মর্যাদা না পাওয়ার কারণে কোনও কষ্ট বোধ করবে না।
হাদীছের মূল বার্তা হল মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক সম্পর্কে সতর্ক করা, যাতে তারা এটা না পরে। কেননা এটা পরলে শরী'আতের হুকুম অমান্য করা হবে। পরিণামে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যদি না আল্লাহ তা'আলা মাফ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিমদেরকে অবশ্যই এ পোশাক পরিধান করা হতে বিরত থাকতে হবে।
খ. রেশমী পোশাক পরিধান করলে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরিধান করলে জান্নাতে এ নি'আমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।
