কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
৩৬. স্ত্রী-পরিবারের সাথে উত্তম আচরণ
হাদীস নং: ৩৯৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৪৪
এক স্ত্রী অপেক্ষা অপর স্ত্রীকে বেশী ভালবাসা
৩৯৪৬. উবায়দুল্লাহ্ ইবনে সা’দ ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর স্ত্রীগণ একদা ফাতেমা (রাযিঃ)-কে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট পাঠালেন। তিনি এসে অনুমতি চাইলেন, সে সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) চাদর গায়ে আমার সাথে শোয়া ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফাতিমা (রাযিঃ)-কে অনুমতি দিলেন। তখন ফাতিমা (রাযিঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীগণ আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। তারা আবু কুহাফার মেয়ের (আয়েশা) বিষয়ে তাদের সাথে ইনসাফ করার অনুরোধ করছেন। আয়েশা (রাযিঃ) বললেনঃ আমি চুপ ছিলাম। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফাতিমা (রাযিঃ)-কে বললেন, যাকে আমি ভালবাসি তাকে কি তুমি ভালবাস না? ফাতিমা (রাযিঃ) বললেন, কেন ভালবাসব না? রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, তাহলে একে ভালবাস।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কথা শোনার পর ফাতিমা (রাযিঃ) উঠে গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর স্ত্রীদের কাছে ফিরে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যা বলেছিলেন তার বর্ণনা দিলেন। তারা বললেন, তোমার দ্বারা আমাদের কোন কাজ হল না। তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে পুনরায় যাও এবং তাঁকে বল, আপনার স্ত্রীগণ আবু কুহাফার মেয়ে [আয়েশা (রাযিঃ)]-এর বিষয়ে ইনসাফের অনুরোধ করছে। ফাতিমা (রাযিঃ) বললেন, এই বিষয়ে আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সাথে আর কখনো কোন কথা বলব না।
আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, এরপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর স্ত্রীগণ যয়নাব বিনতে জাহাশকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে পাঠালেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর স্ত্রীগণের মধ্যে তিনিই একমাত্র রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে মর্যাদার বিষয়ে আমার সমপর্যায়ের ছিলেন। আমি যয়নব (রাযিঃ) অপেক্ষা বেশী দীনদার, আল্লাহর ভয়, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী, সত্যবাদী-দানশীলা যেই কাজে দান-সাদ্কার সওয়াব হয় ও নৈকট্য লাভ করা যায়, সেই কাজে অধিকতর সাধনাকারিণী আর কাউকে দেখিনি। শুধু এতটুকু কথা যে, তিনি হঠাৎ রেগে যেতেন। আবার তার রাগ পড়েও যেত খুব তাড়াতাড়ি। তিনি আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে অনুমতি চাইলেন।
এ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফাতিমা (রাযিঃ) প্রবেশ করার সময় যেই রকম আয়েশা (রাযিঃ)-এর সাথে চাদর আবৃত অবস্থায় ছিলেন, সেই অবস্থায় ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে অনুমতি দিলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে আপনার স্ত্রীগণ পাঠিয়েছেন। তারা আবু কুহাফার মেয়ের (আয়েশা-এর) ব্যাপারে তাদের সাথে ইনসাফ করার অনুরোধ করছেন। এই বলে তিনি আমার সাথে লেগেই গেলেন এবং ভাল-মন্দ বহু কিছু বললেন।
আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর দৃষ্টির দিকে তাকাচ্ছিলাম তিনি আমাকে উত্তর দেয়ার অনুমতি দিচ্ছেন কি না এটা বুঝার জন্য। যয়নব তার অবস্থার মধ্যেই আছেন। শেষে আমি বুঝতে পারলাম যে, আমার উত্তর দেয়াটা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অপছন্দ করবেন না। আমি যখন তার জওয়াব দেওয়া শুরু করলাম, তখন তাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না। শেষ পর্যন্ত আমি তার উপর বিজয়ী হলাম। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, এতো আবু বকরেরই মেয়ে।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কথা শোনার পর ফাতিমা (রাযিঃ) উঠে গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর স্ত্রীদের কাছে ফিরে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যা বলেছিলেন তার বর্ণনা দিলেন। তারা বললেন, তোমার দ্বারা আমাদের কোন কাজ হল না। তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে পুনরায় যাও এবং তাঁকে বল, আপনার স্ত্রীগণ আবু কুহাফার মেয়ে [আয়েশা (রাযিঃ)]-এর বিষয়ে ইনসাফের অনুরোধ করছে। ফাতিমা (রাযিঃ) বললেন, এই বিষয়ে আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সাথে আর কখনো কোন কথা বলব না।
আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, এরপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর স্ত্রীগণ যয়নাব বিনতে জাহাশকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে পাঠালেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর স্ত্রীগণের মধ্যে তিনিই একমাত্র রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে মর্যাদার বিষয়ে আমার সমপর্যায়ের ছিলেন। আমি যয়নব (রাযিঃ) অপেক্ষা বেশী দীনদার, আল্লাহর ভয়, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী, সত্যবাদী-দানশীলা যেই কাজে দান-সাদ্কার সওয়াব হয় ও নৈকট্য লাভ করা যায়, সেই কাজে অধিকতর সাধনাকারিণী আর কাউকে দেখিনি। শুধু এতটুকু কথা যে, তিনি হঠাৎ রেগে যেতেন। আবার তার রাগ পড়েও যেত খুব তাড়াতাড়ি। তিনি আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে অনুমতি চাইলেন।
এ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফাতিমা (রাযিঃ) প্রবেশ করার সময় যেই রকম আয়েশা (রাযিঃ)-এর সাথে চাদর আবৃত অবস্থায় ছিলেন, সেই অবস্থায় ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে অনুমতি দিলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে আপনার স্ত্রীগণ পাঠিয়েছেন। তারা আবু কুহাফার মেয়ের (আয়েশা-এর) ব্যাপারে তাদের সাথে ইনসাফ করার অনুরোধ করছেন। এই বলে তিনি আমার সাথে লেগেই গেলেন এবং ভাল-মন্দ বহু কিছু বললেন।
আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর দৃষ্টির দিকে তাকাচ্ছিলাম তিনি আমাকে উত্তর দেয়ার অনুমতি দিচ্ছেন কি না এটা বুঝার জন্য। যয়নব তার অবস্থার মধ্যেই আছেন। শেষে আমি বুঝতে পারলাম যে, আমার উত্তর দেয়াটা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অপছন্দ করবেন না। আমি যখন তার জওয়াব দেওয়া শুরু করলাম, তখন তাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না। শেষ পর্যন্ত আমি তার উপর বিজয়ী হলাম। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, এতো আবু বকরেরই মেয়ে।
حُبُّ الرَّجُلِ بَعْضَ نِسَائِهِ أَكْثَرَ مِنْ بَعْضٍ
أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ قَالَ حَدَّثَنَا عَمِّي قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ أَرْسَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاسْتَأْذَنَتْ عَلَيْهِ وَهُوَ مُضْطَجِعٌ مَعِي فِي مِرْطِي فَأَذِنَ لَهَا فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَكَ أَرْسَلْنَنِي إِلَيْكَ يَسْأَلْنَكَ الْعَدْلَ فِي ابْنَةِ أَبِي قُحَافَةَ وَأَنَا سَاكِتَةٌ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيْ بُنَيَّةُ أَلَسْتِ تُحِبِّينَ مَنْ أُحِبُّ قَالَتْ بَلَى قَالَ فَأَحِبِّي هَذِهِ فَقَامَتْ فَاطِمَةُ حِينَ سَمِعَتْ ذَلِكَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَجَعَتْ إِلَى أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَتْهُنَّ بِالَّذِي قَالَتْ وَالَّذِي قَالَ لَهَا فَقُلْنَ لَهَا مَا نَرَاكِ أَغْنَيْتِ عَنَّا مِنْ شَيْءٍ فَارْجِعِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُولِي لَهُ إِنَّ أَزْوَاجَكَ يَنْشُدْنَكَ الْعَدْلَ فِي ابْنَةِ أَبِي قُحَافَةَ قَالَتْ فَاطِمَةُ لَا وَاللَّهِ لَا أُكَلِّمُهُ فِيهَا أَبَدًا قَالَتْ عَائِشَةُ فَأَرْسَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِيَ الَّتِي كَانَتْ تُسَامِينِي مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَنْزِلَةِ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ أَرَ امْرَأَةً قَطُّ خَيْرًا فِي الدِّينِ مِنْ زَيْنَبَ وَأَتْقَى لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَأَصْدَقَ حَدِيثًا وَأَوْصَلَ لِلرَّحِمِ وَأَعْظَمَ صَدَقَةً وَأَشَدَّ ابْتِذَالًا لِنَفْسِهَا فِي الْعَمَلِ الَّذِي تَصَدَّقُ بِهِ وَتَقَرَّبُ بِهِ مَا عَدَا سَوْرَةً مِنْ حِدَّةٍ كَانَتْ فِيهَا تُسْرِعُ مِنْهَا الْفَيْئَةَ فَاسْتَأْذَنَتْ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ عَائِشَةَ فِي مِرْطِهَا عَلَى الْحَالِ الَّتِي كَانَتْ دَخَلَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا فَأَذِنَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَكَ أَرْسَلْنَنِي يَسْأَلْنَكَ الْعَدْلَ فِي ابْنَةِ أَبِي قُحَافَةَ وَوَقَعَتْ بِي فَاسْتَطَالَتْ وَأَنَا أَرْقُبُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَرْقُبُ طَرْفَهُ هَلْ أَذِنَ لِي فِيهَا فَلَمْ تَبْرَحْ زَيْنَبُ حَتَّى عَرَفْتُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَكْرَهُ أَنْ أَنْتَصِرَ فَلَمَّا وَقَعْتُ بِهَا لَمْ أَنْشَبْهَا بِشَيْءٍ حَتَّى أَنْحَيْتُ عَلَيْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهَا ابْنَةُ أَبِي بَكْرٍ
