কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
৩৫. শপথ ও মান্নতের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৭৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৭৯৬
রুটির সাথে তরকারি না খাওয়ার কসম করে সিরকা দিয়ে খেলে
৩৭৯৭. আমর ইবনে আলী (রাহঃ) ......... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সঙ্গে তাঁর ঘরে ঢুকে দেখলাম, রুটির টুকরা এবং সিরকা রাখা হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেনঃ খাও, সিরকা উত্তম তরকারি।
إِذَا حَلَفَ أَنْ لَا يَأْتَدِمَ فَأَكَلَ خُبْزًا بِخَلٍّ
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى قَالَ حَدَّثَنَا الْمُثَنَّى بْنُ سَعِيدٍ قَالَ حَدَّثَنَا طَلْحَةُ بْنُ نَافِعٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْتَهُ فَإِذَا فِلَقٌ وَخَلٌّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلْ فَنِعْمَ الْإِدَامُ الْخَلُّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটি দ্বারা আমরা অনুমান করতে পারি নবী-পরিবারে খাদ্যের কেমন অভাব ছিল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে তাঁর খাওয়ার জন্য রুটি রাখা হয়েছিল, যেমন কোনও কোনও বর্ণনায় আছে। কিন্তু সে রুটি খেতে হলে সঙ্গে কিছু একটা লাগবে তো। তাই তিনি ব্যঞ্জন চাইলেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন জানাল, ব্যঞ্জন বলতে কিছুই ঘরে নেই। না গোশত, না সবজি, না অন্য কিছু। আছে কেবল সিরকা। তিনি সে সিরকাই নিয়ে আসতে বললেন। তা-ই আনা হল। তিনি কি কোনও আক্ষেপ করলেন? তরকারি দেওয়া হল না বলে বিরক্তি প্রকাশ করলেন? মোটেই না। তিনি পরম আনন্দে সিরকা দিয়ে রুটি খেতে শুরু করলেন এবং সিরকার প্রশংসা করে বলতে লাগলেন, সিরকা বেশ ভালো ব্যঞ্জন। এই কৃতজ্ঞতাবোধ, এই গুণগ্রাহিতা, এই মহানুভবতা নবীচরিত্রেরই বিশেষত্ব। সিরকা দিয়ে রুটি খাওয়াকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা নয়। এক উপাদেয় খাবাররূপেই তিনি তা গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তা'আলার প্রতিটি নি'আমত মহামূল্যবান। খাবার, তা যতই সাধারণ হোক না কেন, মানুষের প্রাণরক্ষার উপকরণ। সামান্য একটু সিরকাও মৃতপ্রায় অভুক্তের প্রাণরক্ষার কারণ হতে পারে। তাই প্রকৃতপক্ষে তুচ্ছ নয় কোনও খাবারই। সুতরাং তাচ্ছিল্য করা নয়; বরং মূল্য দিতে হবে প্রতিটি খাবারেরই। সে শিক্ষাই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ আচরণের মধ্যে আমরা পাই। তিনি এর মাধ্যমে আমাদেরকে দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত হওয়ারও তা'লীম দিয়েছেন। দুনিয়ার কোনওকিছুর প্রতি লোভী হয়ো না। দামি খাবারের লোভে সাধারণ খাবারকে হেলা করো না। বরং লোভ সংবরণ করে সাধারণ খাবারো সন্তুষ্ট থাকো। আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যখন যা আসে, পরমানন্দে তাই গ্রহণ করো। ইহজীবনের সুখ এরই মধ্যে নিহিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও খাবারকে হেলা করতে নেই। সবই আল্লাহ তা'আলার নি'আমত। তাই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তা গ্রহণ করা ও তার প্রশংসা করা উচিত।
খ. নিজ গরিবী হালের কারণে আক্ষেপ করতে নেই। আল্লাহ তা'আলা যখন যে অবস্থায় রাখেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকা চাই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও খাবারকে হেলা করতে নেই। সবই আল্লাহ তা'আলার নি'আমত। তাই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তা গ্রহণ করা ও তার প্রশংসা করা উচিত।
খ. নিজ গরিবী হালের কারণে আক্ষেপ করতে নেই। আল্লাহ তা'আলা যখন যে অবস্থায় রাখেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
