আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৩৬- যুলুম - নির্যাতন ও কিসাসের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৩০৬
আন্তর্জাতিক নং: ২৪৬৮
১৫৪৯. ছাদ ইত্যাদির উপর উঁচু বা নীচু চিলেকোঠা ও কক্ষ নির্মাণ করা
২৩০৬। ইয়াহইযা ইবনে বুকাইর (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ)- এর সহধর্মিণীদের মধ্যে ঐ দু’সহধর্মিণী সম্পর্কে উমর (রাযিঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করতে সব সময় আগ্রহী ছিলাম, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ যদি তোমরা দু’জনে তাওবা কর (তাহলে সেটাই হবে কল্যাণকর)। কেননা তোমাদের অন্তর বাঁকা হয়ে গেছে। একবার আমি তাঁর (উমর (রাযিঃ) এর) সঙ্গে হজ্জে রওয়ানা করলাম। তিনি রাস্তা থেকে সরে গেলেন। আমিও একটি পানির পাত্র নিয়ে তাঁর সঙ্গে গতি পরিবর্তন করলাম। তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ফিরে এলেন। আমি পানির পাত্র থেকে তাঁর দু’হাতে পানি ঢাললাম, তিনি উযু করলেন।
আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! নবী (ﷺ)- এর সহধর্মিণীদের মধ্যে দু’সহধর্মিনী কারা ছিলেন, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ যদি তোমরা দু’জন তাওবা কর (তবে সেটাই হবে তোমাদের জন্য কল্যাণকর) কেননা তোমাদের অন্তর বাঁকা হয়ে গেছে’।
তিনি বললেন, হে ইবনে আব্বাস! এটা তোমার জন্য তাজ্জবের বিষয় যে, তুমি তা জানো না। তারা দু’জন হলেন আয়িশা ও হাফসা (রাযিঃ) (অতঃপর উমর রাযিঃ) পুরো ঘটনা বলতে শুরু করলেন। তিনি বললেন, আমি ও আমার এক আনসারী প্রতিবেশী মদীনার অদূরে বনু উমাইয়া ইবনে যায়দের মহল্লায় বসবাস করতাম। আমরা দু’জন পালাক্রমে নবী (ﷺ) এর নিকট হাযির হতাম। একদিন তিনি যেতেন, আরেকদিন আমি যেতাম, আমি যেদিন যেতাম সে দিনের খবর (ওহী) ইত্যাদি বিষয় তাঁকে অবহিত করতাম। আর তিনি যে দিন যেতেন, তিনিও অনুরূপ করতেন। আর আমরা কুরাইশ গোত্রের লোকেরা মহিলাদের উপর কর্তৃত্ব করতাম। কিন্তু আমরা যখন মদীনায় আনসারদের কাছে আসলাম তখন তাদেরকে এমন পেলাম, যাদের নারীরা তাদের উপর কর্তৃত্ব করে থাকে।
ধীরে ধীরে আমাদের মহিলারাও আনসারী মহিলাদের রীতিনীতি গ্রহণ করতে লাগল। একদিন আমি আমার স্ত্রীকে ধমক দিলাম। সে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিউত্তর করল। তার এই প্রতিউত্তর আমার পছন্দ হল না। তখন সে আমাকে বলল, আমার প্রতিউত্তরে তুমি অসন্তুষ্ট হও কেন? আল্লাহর কসম! নবী (ﷺ) এর সহধর্মিণীরাও তো তাঁর কথার প্রতিউত্তর করে থাকেন এবং তাঁর কোন কোন সহধর্মিণী রাত পর্যন্ত পুরো দিন তাঁর কাছ থেকে আলাদা থাকেন। একথা শুনে আমি ঘাবড়ে গেলাম। বললাম, যিনি এরূপ করেছেন তিনি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তারপর আমি জামা কাপড় পরে (আমার মেয়ে) হাফসা (রাযিঃ)-এর কাছে গিয়ে বললাম, হে হাফসা, তোমাদের কেউ কেউ নাকি রাত পর্যন্ত পুরো দিন রাসূল (ﷺ) কে অসন্তুষ্ট রাখ?
সে বলল, হ্যাঁ। আমি বললাম, তবে তো সে বরবাদ এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তোমার কি ভয় হয় না যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অসন্তুষ্ট হলে আল্লাহও অসন্তুষ্ট হবেন। এর ফলে তুমি বরবাদ হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে বাড়াবাড়ি করো না এবং তাঁর কোন কথার প্রতিউত্তর দিও না এবং তাঁর থেকে পৃথক থেকো না। তোমার কোন কিছুর দরকার হয়ে থাকলে আমাকে বলবে। আর তোমার প্রতিবেশী তোমার চাইতে অধিক সুন্দরী এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর অধিক প্রিয় এ যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে। তিনি উদ্দেশ্য করেছেন আয়িশা (রাযিঃ)-কে।
সে সময় আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছিলো যে, গাসসানের লোকেরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ঘোড়াগুলিকে প্রস্তুত করেছে। একদিন আমার সাথী তার পালার দিন নবী (ﷺ)- এর কাছে গেলেন এবং ইশার সময় এসে আমার দরজায় খুব জোরে করাঘাত করলেন এবং বললেন, তিনি (উমর রাযিঃ) কি ঘুমিয়েছেন? তখন আমি ঘাবড়িয়ে তাঁর কাছে বেরিয়ে এলাম। তিনি বললেন, সাংঘাতিক ঘটনা ঘটে গেছে। আমি বললাম, সেটা কি? গাসসানের লোকেরা কি এসে গেছে? তিনি বললেন, না, বরং তার চাইতেও বড় ঘটনা ও বিরাট ব্যাপার। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সহধর্মিণীদের তালাক দিয়েছেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, তাহলে তো হাফসার সর্বনাশ হয়েছে এবং সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার তো ধারণা ছিল যে, এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে। আমি কাপড় পরে বেরিয়ে এসে নবী (ﷺ) এর সঙ্গে ফজরের নামায আদায় করলাম।
নামায শেষে তিনি (ﷺ) তাঁর কোঠায় প্রবেশ করে একাকী বসে থাকলেন। তখন আমি হাফসা (রাযিঃ) এর কাছে গিয়ে দেখি সে কাঁদছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কাঁদছ কেন? আমি কি তোমাকে আগেই সতর্ক করে দেইনি? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি তোমাদেরকে তালাক দিয়েছেন? সে বলল, আমি জানি না। তিনি তাঁর ঐ কোঠায় আছেন। আমি বের হয়ে মিম্বরের কাছে আসলাম, দেখি যে লোকজন মিম্বরের চারপাশ জুড়ে বসে আছেন এবং কেউ কাঁদছেন। আমি তাঁদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বসলাম। তারপর আমার উদ্যোগ প্রবল হল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে কোঠায় ছিলেন, আমি কোঠার কাছে আসলাম।
আমি তাঁর এক কালো গোলামকে বললাম, উমরের জন্য অনুমতি গ্রহণ কর। সে প্রবেশ করে নবী (ﷺ)- এর সাথে আলাপ করে বেরিয়ে এসে বলল, আমি আপনার কথা তাঁর কাছে উল্লেখ করেছি, কিন্তু তিনি নীরব রইলেন। আমি ফিরে এলাম এবং মিম্বরের পাশে বসা লোকদের কাছে গিয়ে বসে পড়লাম।
কিছুক্ষণ পর আমার আবার উদ্বেগ প্রবল হল। তাই আমি আবার এসে গোলামকে বললাম। সে এসে আগের মতোই বলল। আমি আবার মিম্বরের কাছে উপবিষ্ট লোকদের সাথে গিয়ে বসলাম। তারপর আমার উদ্বেগ আবার প্রবল হল। আমি গোলামের কাছে এসে বললাম, (উমরের জন্য অনুমতি গ্রহণ কর) এবারও সে আগের মতই বলল।
তারপর যখন আমি ফিরে আসছিলাম, গোলাম আমাকে ডেকে বলল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন। এখন আমি তাঁর নিকট প্রবেশ করে দেখি, তিনি খেজুরের পাতায় তৈরী ছোবড়া ভর্তি একটা চামড়ার বালিশে হেলান দিয়ে খালি চাটাই এর উপর কাত হয়ে শুয়ে আছেন। তাঁর শরীর ও চাটাই এর মাঝখানে কোন ফরাশ ছিলো না। ফলে তাঁর শরীরের পার্শ্বে চাটাইয়ের দাগ পড়ে গিয়েছে। আমি তাঁকে সালাম দিলাম এবং দাঁড়িয়েই আবার আরয করলাম আপনি কি আপনার সহধর্মিণীদেরকে তালাক দিয়েছেন? তখন তিনি আমার দিকে চোখ তুলে তাকালেন এবং বললেন, না। তারপর আমি (থমথমে ভাব কাটিয়ে) অনুকূলভাব সৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়ে থেকেই বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দেখুন, আমরা কুরাইশ গোত্রের লোকেরা নারীদের উপর কর্তৃত্ব করতাম। তারপর যখন আমরা এমন একটি সম্প্রদায়ের নিকট এলাম, যাদের উপর তাদের নারীরা কর্তৃত্ব করছে। তিনি এ ব্যাপারে আলোচনা করলেন। এতে নবী (ﷺ) মুচকি হাঁসলেন।
তারপর আমি বললাম, আপনি হয়তো লক্ষ্য করছেন, আমি হাফসার ঘরে গিয়েছি এবং তাকে বলেছি, তোমাকে একথা যেন ধোঁকায় না ফেলে যে, তোমার প্রতিবেশীণী (সতীন) তোমার চাইতে অধিক আকর্ষণীয় এবং নবী (ﷺ)- এর অধিক প্রিয়। এ কথা দ্বারা তিনি আয়িশা (রাযিঃ)- কে বুঝিয়েছেন। নবী (ﷺ) আবার মুচকি হাঁসলেন। তাঁকে একা দেখে আমি বসে পড়লাম। তারপর আমি তাঁর ঘরের ভিতর এদিক সেদিক দৃষ্টি করলাম। কিন্তু তাঁর ঘরে তিনটি কাঁচা চামড়া ব্যতীত দৃষ্টিপাত করার মত আর কিছুই দেখতে পেলাম না, তখন আমি আরয করলাম, আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করুন, তিনি যেন আপনার উম্মতকে পার্থিব স্বচ্ছলতা দান করেন। কেননা পারস্য ও রোমের অধিবাসীদেরেকে স্বচ্ছলতা দান করা হয়েছে এবং তাদেরকে পার্থিব (অনেক প্রাচুর্য) দেওয়া হয়েছে, অথচ তারা আল্লাহর ইবাদত করে না। তিনি তখন হেলান দিয়ে ছিলেন।
তিনি বললেন, হে ইবনে খাত্তাব, তোমার কি এতে সন্দেহ রয়েছে যে, তারা তো এমন এক জাতি, যাদেরকে তাদের ভাল কাজের প্রতিদান দুনিয়ার জীবনেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার জন্য ক্ষমার দুআ করুন। হাফসা (রাযিঃ) আয়িশা (রাযিঃ)- এর কাছে এ কথা প্রকাশ করলেই নবী সহধর্মিণীদের থেকে আলাদা হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আল্লাহর কসম! আমি একমাস তাদের কাছে যাবো না। তাঁদের উপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর ভীষণ রাগের কারণেই তা হয়েছিল। যেহেতু আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
যখন উনত্রিশ রাত কেটে গেলো, তিনি সর্বপ্রথম আয়িশা (রাযিঃ)- এর কাছে এলেন। আয়িশা (রাযিঃ) তাঁকে বললেন, আপনি কসম করেছেন যে, এক মাসের মধ্যে আমাদের কাছে আসবেন না। আর এ পর্যন্ত আমরা উনত্রিশ রাত অতিবাহিত করেছি, যা আমি ঠিক ঠিক গণনা করে রেখেছি। তখন নবী (ﷺ) বললেন, মাস উনত্রিশ দিনেও হয়। আর মূলতঃ এ মাসটি উনত্রিশ দিনেরই ছিল। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, যখন ইখতিয়ারের আয়াত নাযিল হল, তখন তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের মধ্যে সর্বপ্রথম আমার কাছে আসলেন এবং বললেন, আমি তোমাকে একটি কথা বলতে চাই, তবে তোমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ না করে এর জওয়াবে তুমি তাড়াহুড়া করবে না।
আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) এ কথা জানতেন যে, আমার পিতা-মাতা তাঁর থেকে আলাদা হওয়ার পরামর্শ আমাকে কখনো দিবেন না। তারপর নবী (ﷺ) বললেন, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ হে নবী, আপনি আপনার সহধর্মিণীদের বলুন ...... মহা প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। (৩৩ঃ ২৮,২৯)। আমি বললাম, এ ব্যাপারে আমি আমার পিতা-মাতার কাছে কি পরামর্শ নিব? আমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি এবং পরকালীন (সাফল্য) পেতে চাই। তারপর তিনি (ﷺ) তাঁর অন্য সহধর্মিণীদেরকেও ইখতিয়ার দিলেন এবং প্রত্যেকে সে একই জবাব দিলেন, যা আয়িশা (রাযিঃ) দিয়েছিলেন।
باب الْغُرْفَةِ وَالْعُلِّيَّةِ الْمُشْرِفَةِ وَغَيْرِ الْمُشْرِفَةِ فِي السُّطُوحِ وَغَيْرِهَا
2468 - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي ثَوْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: لَمْ أَزَلْ حَرِيصًا عَلَى أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ المَرْأَتَيْنِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللَّتَيْنِ قَالَ اللَّهُ لَهُمَا: {إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا} [التحريم: 4] فَحَجَجْتُ مَعَهُ، فَعَدَلَ وَعَدَلْتُ مَعَهُ بِالْإِدَاوَةِ، فَتَبَرَّزَ حَتَّى جَاءَ، فَسَكَبْتُ عَلَى يَدَيْهِ مِنَ الْإِدَاوَةِ فَتَوَضَّأَ، فَقُلْتُ: يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، مَنِ المَرْأَتَانِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللَّتَانِ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمَا: {إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا} [التحريم: 4] ؟ فَقَالَ: وَاعَجَبِي لَكَ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ، عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ، ثُمَّ اسْتَقْبَلَ عُمَرُ الحَدِيثَ يَسُوقُهُ، فَقَالَ: إِنِّي كُنْتُ وَجَارٌ لِي مِنَ الأَنْصَارِ فِي بَنِي أُمَيَّةَ بْنِ زَيْدٍ، وَهِيَ مِنْ عَوَالِي المَدِينَةِ، وَكُنَّا نَتَنَاوَبُ النُّزُولَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيَنْزِلُ يَوْمًا وَأَنْزِلُ يَوْمًا، فَإِذَا نَزَلْتُ جِئْتُهُ مِنْ خَبَرِ ذَلِكَ اليَوْمِ مِنَ الأَمْرِ وَغَيْرِهِ، وَإِذَا نَزَلَ فَعَلَ مِثْلَهُ، وَكُنَّا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى الأَنْصَارِ إِذَا هُمْ قَوْمٌ تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ، فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَأْخُذْنَ مِنْ أَدَبِ نِسَاءِ الأَنْصَارِ، فَصِحْتُ عَلَى امْرَأَتِي، فَرَاجَعَتْنِي، فَأَنْكَرْتُ أَنْ تُرَاجِعَنِي، فَقَالَتْ: وَلِمَ تُنْكِرُ أَنْ أُرَاجِعَكَ، فَوَاللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ليُرَاجِعْنَهُ، وَإِنَّ إِحْدَاهُنَّ لَتَهْجُرُهُ اليَوْمَ حَتَّى اللَّيْلِ، فَأَفْزَعَنِي، فَقُلْتُ: خَابَتْ مَنْ فَعَلَ مِنْهُنَّ بِعَظِيمٍ، ثُمَّ جَمَعْتُ عَلَيَّ ثِيَابِي، فَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ، فَقُلْتُ: أَيْ حَفْصَةُ أَتُغَاضِبُ إِحْدَاكُنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اليَوْمَ حَتَّى اللَّيْلِ؟ فَقَالَتْ: نَعَمْ، فَقُلْتُ: خَابَتْ وَخَسِرَتْ أَفَتَأْمَنُ أَنْ يَغْضَبَ اللَّهُ لِغَضَبِ رَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَهْلِكِينَ لاَ تَسْتَكْثِرِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلاَ تُرَاجِعِيهِ فِي شَيْءٍ، وَلاَ تَهْجُرِيهِ، وَاسْأَلِينِي مَا بَدَا لَكِ، وَلاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ هِيَ أَوْضَأَ مِنْكِ، وَأَحَبَّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يُرِيدُ عَائِشَةَ - وَكُنَّا تَحَدَّثْنَا أَنَّ [ص:134] غَسَّانَ تُنْعِلُ النِّعَالَ لِغَزْوِنَا، فَنَزَلَ صَاحِبِي يَوْمَ نَوْبَتِهِ فَرَجَعَ عِشَاءً، فَضَرَبَ بَابِي ضَرْبًا شَدِيدًا، وَقَالَ: أَنَائِمٌ هُوَ، فَفَزِعْتُ، فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ، وَقَالَ: حَدَثَ أَمْرٌ عَظِيمٌ، قُلْتُ: مَا هُوَ؟ أَجَاءَتْ غَسَّانُ؟ قَالَ: لاَ، بَلْ أَعْظَمُ مِنْهُ وَأَطْوَلُ طَلَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءَهُ، قَالَ: قَدْ خَابَتْ حَفْصَةُ وَخَسِرَتْ، كُنْتُ أَظُنُّ أَنَّ هَذَا يُوشِكُ أَنْ يَكُونَ، فَجَمَعْتُ عَلَيَّ ثِيَابِي، فَصَلَّيْتُ صَلاَةَ الفَجْرِ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَدَخَلَ مَشْرُبَةً لَهُ، فَاعْتَزَلَ فِيهَا، فَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ، فَإِذَا هِيَ تَبْكِي، قُلْتُ: مَا يُبْكِيكِ؟ أَوَلَمْ أَكُنْ حَذَّرْتُكِ، أَطَلَّقَكُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: لاَ أَدْرِي هُوَ ذَا فِي المَشْرُبَةِ، فَخَرَجْتُ، فَجِئْتُ المِنْبَرَ، فَإِذَا حَوْلَهُ رَهْطٌ يَبْكِي بَعْضُهُمْ، فَجَلَسْتُ مَعَهُمْ قَلِيلًا، ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ، فَجِئْتُ المَشْرُبَةَ الَّتِي هُوَ فِيهَا، فَقُلْتُ لِغُلاَمٍ لَهُ أَسْوَدَ: اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ، فَدَخَلَ، فَكَلَّمَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ خَرَجَ فَقَالَ: ذَكَرْتُكَ لَهُ، فَصَمَتَ، فَانْصَرَفْتُ، حَتَّى جَلَسْتُ مَعَ الرَّهْطِ الَّذِينَ عِنْدَ المِنْبَرِ، ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ، فَجِئْتُ، فَذَكَرَ مِثْلَهُ، فَجَلَسْتُ مَعَ الرَّهْطِ الَّذِينَ عِنْدَ المِنْبَرِ، ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ، فَجِئْتُ الغُلاَمَ فَقُلْتُ: اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ، فَذَكَرَ مِثْلَهُ، فَلَمَّا وَلَّيْتُ مُنْصَرِفًا، فَإِذَا الغُلاَمُ يَدْعُونِي قَالَ: أَذِنَ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ، فَإِذَا هُوَ مُضْطَجِعٌ عَلَى رِمَالِ حَصِيرٍ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ فِرَاشٌ، قَدْ أَثَّرَ الرِّمَالُ بِجَنْبِهِ مُتَّكِئٌ عَلَى وِسَادَةٍ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، ثُمَّ قُلْتُ وَأَنَا قَائِمٌ: طَلَّقْتَ نِسَاءَكَ، فَرَفَعَ بَصَرَهُ إِلَيَّ، فَقَالَ: «لاَ» ، ثُمَّ قُلْتُ وَأَنَا قَائِمٌ: أَسْتَأْنِسُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوْ رَأَيْتَنِي وَكُنَّا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى قَوْمٍ تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ، فَذَكَرَهُ فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ قُلْتُ: لَوْ رَأَيْتَنِي، وَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ، فَقُلْتُ: لاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ هِيَ أَوْضَأَ مِنْكِ، وَأَحَبَّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يُرِيدُ عَائِشَةَ -، فَتَبَسَّمَ أُخْرَى، فَجَلَسْتُ حِينَ رَأَيْتُهُ تَبَسَّمَ، ثُمَّ رَفَعْتُ بَصَرِي فِي بَيْتِهِ، فَوَاللَّهِ مَا رَأَيْتُ فِيهِ شَيْئًا يَرُدُّ البَصَرَ غَيْرَ أَهَبَةٍ ثَلاَثَةٍ، فَقُلْتُ: ادْعُ اللَّهَ فَلْيُوَسِّعْ عَلَى أُمَّتِكَ، فَإِنَّ فَارِسَ وَالرُّومَ وُسِّعَ عَلَيْهِمْ، وَأُعْطُوا الدُّنْيَا وَهُمْ لاَ يَعْبُدُونَ اللَّهَ، وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ: «أَوَفِي شَكٍّ أَنْتَ يَا ابْنَ الخَطَّابِ أُولَئِكَ قَوْمٌ عُجِّلَتْ لَهُمْ طَيِّبَاتُهُمْ فِي الحَيَاةِ الدُّنْيَا» ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، اسْتَغْفِرْ لِي، فَاعْتَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ الحَدِيثِ حِينَ أَفْشَتْهُ حَفْصَةُ إِلَى عَائِشَةَ، وَكَانَ قَدْ قَالَ: «مَا أَنَا بِدَاخِلٍ عَلَيْهِنَّ شَهْرًا مِنْ شِدَّةِ مَوْجِدَتِهِ عَلَيْهِنَّ، حِينَ عَاتَبَهُ اللَّهُ» فَلَمَّا مَضَتْ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ، دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ، فَبَدَأَ بِهَا، فَقَالَتْ لَهُ: عَائِشَةُ إِنَّكَ أَقْسَمْتَ أَنْ لاَ تَدْخُلَ عَلَيْنَا شَهْرًا، وَإِنَّا أَصْبَحْنَا لِتِسْعٍ وَعِشْرِينَ لَيْلَةً أَعُدُّهَا عَدًّا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:135]: «الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ» ، وَكَانَ ذَلِكَ الشَّهْرُ تِسْعًا وَعِشْرِينَ، قَالَتْ عَائِشَةُ: فَأُنْزِلَتْ: آيَةُ التَّخْيِيرِ فَبَدَأَ بِي أَوَّلَ امْرَأَةٍ، فَقَالَ: «إِنِّي ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا، وَلاَ عَلَيْكِ أَنْ لاَ تَعْجَلِي حَتَّى تَسْتَأْمِرِي أَبَوَيْكِ» ، قَالَتْ: قَدْ أَعْلَمُ أَنَّ أَبَوَيَّ لَمْ يَكُونَا يَأْمُرَانِي بِفِرَاقِكَ، ثُمَّ قَالَ: " إِنَّ اللَّهَ قَالَ: {يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ} [الأحزاب: 28] إِلَى قَوْلِهِ {عَظِيمًا} [النساء: 27] "، قُلْتُ: أَفِي هَذَا أَسْتَأْمِرُ أَبَوَيَّ، فَإِنِّي أُرِيدُ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالدَّارَ الآخِرَةَ، ثُمَّ خَيَّرَ نِسَاءَهُ، فَقُلْنَ مِثْلَ مَا قَالَتْ عَائِشَةُ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ২৩০৬ | মুসলিম বাংলা