কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

২৭. তালাক - ডিভোর্স অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৪৭৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৩
তালাক - ডিভোর্স অধ্যায়
লিআন করানোর সময় ইমামের স্বামী-স্ত্রীকে নসীহত করা
৩৪৭৭. আমর ইবনে আলী ও মুহাম্মাদ ইবনে মুছান্না (রাহঃ) ......... সাঈদ ইবনে যুবায়র (রাহঃ) বলেন, ইবনে যুবায়র (রাযিঃ)-এর শাসনামলে এক ব্যক্তি আমার কাছে লি”আনকারীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলোঃ লিআনের পরে ঐ দুইজনের মধ্যে কি পৃথক করে দেয়া হবে? ইবনে যুবায়র (রাযিঃ) বলেনঃ আমি কি উত্তর দেব কিছুই বলতে পারলাম না। এরপর আমি উঠে ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর ঘরে গেলাম এবং আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আবু আব্দুর রহমান! লিআন করার পর কি স্বামী-স্ত্রী উভয়কে পৃথক করে দেয়া হবে? ইবনে উমর (রাযিঃ) বললেনঃ হ্যাঁ, সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি বললেনঃ সর্বপ্রথম এ কথাটি জিজ্ঞাসা করেছেন অমুকের পুত্র অমুক। ইবনে উমর (রাযিঃ) তার নাম উল্লেখ করেন নি। আর সে বলেছিলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি আমাদের কোন ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে তার স্ত্রীর সাথে অশ্লীল কাজ করতে দেখে, যদি সে বলে, তবে তো তা বড় মুসীবতের কথা। আর যদি না বলে, তবে এমন মন্দ কাজের উপর চুপ রইলো, তিনি তাকে কোন উত্তর দিলেন না।

এরপর সে ব্যক্তি আবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললোঃ যে কথা আমি আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমি নিজেই সেই মুসীবতে পড়েছি। তারপর আল্লাহ্ তাআলা সূরা নূরের এ আয়াত নাযিল করেনঃ (وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ) হতে (وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ) অর্থাৎ, আর যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নেই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে, সে আল্লাহর নামে চারবার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী ......... পঞ্চমবারে সে বলেঃ তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব। (সূরা নূরঃ ৬-৯) পর্যন্ত।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ঐ ব্যক্তিকে প্রথমে নসীহত করেন এবং বলেন, পরকালের শাস্তি অপেক্ষা ইহকালের শাস্তি অতি সহজ। সেই ব্যক্তি তাঁর নসীহত শ্ৰবণ করে বলতে লাগলোঃ আল্লাহ্ তাআলার কসম! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, আমি মিথ্যা বলছি না। এরপর তিনি স্ত্রীলোকটিকে নসীহত করলেন এবং তাকে স্মরণ কবিয়ে দিলেন। সেই স্ত্রীলোকটিও বলতে লাগলোঃ আল্লাহ্ তাআলার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, এ ব্যক্তি মিথ্যাবাদী। পুরুষ লোকটি সাক্ষ্য প্রদান আরম্ভ করলো। সে আল্লাহর নাম নিয়ে চারবার সাক্ষ্য প্ৰদান করলো, পঞ্চমবারে সে বললোঃ যদি সে মিথ্যা কথা বলে থাকে, তবে তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত। তারপর স্ত্রীলোকটিও আল্লাহর নামে চারবার সাক্ষ্য দিল, নিশ্চয় সে মিথ্যাবাদী। পঞ্চমবারে সে বললোঃ যদি পুরুষ লোকটি সত্যবাদী হয়, তবে তার নিজের উপর আল্লাহর গযব পড়বে। এরপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের উভয়কে পৃথক করে দেন।
كتاب الطلاق
بَاب عِظَةِ الْإِمَامِ الرَّجُلَ وَالْمَرْأَةَ عِنْدَ اللِّعَانِ
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَا حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ يَقُولُ سُئِلْتُ عَنْ الْمُتَلَاعِنَيْنِ فِي إِمَارَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا فَمَا دَرَيْتُ مَا أَقُولُ فَقُمْتُ مِنْ مَقَامِي إِلَى مَنْزِلِ ابْنِ عُمَرَ فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُتَلَاعِنَيْنِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا قَالَ نَعَمْ سُبْحَانَ اللَّهِ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ وَلَمْ يَقُلْ عَمْرٌو أَرَأَيْتَ الرَّجُلَ مِنَّا يَرَى عَلَى امْرَأَتِهِ فَاحِشَةً إِنْ تَكَلَّمَ فَأَمْرٌ عَظِيمٌ وَقَالَ عَمْرٌو أَتَى أَمْرًا عَظِيمًا وَإِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى مِثْلِ ذَلِكَ فَلَمْ يُجِبْهُ فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَاهُ فَقَالَ إِنَّ الْأَمْرَ الَّذِي سَأَلْتُكَ ابْتُلِيتُ بِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَؤُلَاءِ الْآيَاتِ فِي سُورَةِ النُّورِ وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ حَتَّى بَلَغَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ فَبَدَأَ بِالرَّجُلِ فَوَعَظَهُ وَذَكَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الْآخِرَةِ فَقَالَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا كَذَبْتُ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ فَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا فَقَالَتْ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنَّهُ لَكَاذِبٌ فَبَدَأَ بِالرَّجُلِ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنْ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنْ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنْ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنْ الصَّادِقِينَ فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সুনানে নাসায়ী - হাদীস নং ৩৪৭৩ | মুসলিম বাংলা