কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
২৫. জিহাদ-শাহাদাতের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩১০৮
৮. যে পায়ে হেঁটে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে-তার ফযীলত
৩১১২. হান্নান ইন সারি (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করেছে, সে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যে পর্যন্ত না দুধ এর স্তনে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহর রাস্তায় ধূলা এবং জাহান্নামের আগুনের ধোঁয়া একত্রিত হবে না।
فَضْلُ مَنْ عَمِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَلَى قَدَمِهِ
أَخْبَرَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ عَنْ ابْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ الْمَسْعُودِيِّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ تَعَالَى حَتَّى يَعُودَ اللَّبَنُ فِي الضَّرْعِ وَلَا يَجْتَمِعُ غُبَارٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدُخَانُ نَارِ جَهَنَّمَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে দু'টি বিষয়ের ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। ক. আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করা এবং খ. আল্লাহর পথে জিহাদ করা।
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন সম্পর্কে জানানো হয়েছে যে, আল্লাহর ভয়ে যে কাঁদে, সে কিছুতেই জাহান্নামে যাবে না। তার জাহান্নামে যাওয়া কেমন অসম্ভব তা বোঝানোর জন্য দোওয়ানো দুধ ওলানে ফিরে যাওয়ার অসম্ভাব্যতা দ্বারা দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দোওয়ানো দুধ ওলানে ফিরে যাওয়া যেমন অসম্ভব, তেমনি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারী ব্যক্তির জাহান্নামে যাওয়াও অসম্ভব।
উল্লেখ্য, যার অন্তর নরম, সেই আল্লাহর ভয়ে কাঁদে। শক্ত মনে কান্না আসে না। মন শক্ত হওয়াটা দুর্ভাগ্যের লক্ষণ। কুরআন মাজীদে ইরশাদ-
فَوَيْلٌ لِلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ
“সুতরাং ধ্বংস সেই কাঠোর প্রাণদের জন্য, যারা আল্লাহর যিকির থেকে বিমুখ।”
তাই মন নরম করা খুব প্রয়োজন। মন নরম হয় কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত দ্বারা, মৃত্যু ও কবরের চিন্তা করার দ্বারা, হাশরের ময়দানের বিভীষিকা ও জাহান্নামের আযাব সম্পর্কে চিন্তা করার দ্বারা এবং আল্লাহ তাআলার রহমত ও তাঁর আযাব-গযবের ধ্যান করার দ্বারা। ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলালেও মন নরম হয়। আমাদেরকে এসব উপায় অবলম্বন করতে হবে, যাতে মন নরম হয়, ফলে আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে পারি।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করার অর্থ কেবল চোখের পানি ফেলা নয়। চোখের পানি ফেলার অবশ্যই মূল্য আছে। তবে আল্লাহভীতির দাবি পূরণ করাই আসল কথা। সত্যিকারের আল্লাহভীতির দাবি হল আল্লাহ তা'আলার যাবতীয় আদেশ পালন করা এবং তিনি যা-কিছু নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। কেউ যদি বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি, অথচ সে তাঁর আদেশ-নিষেধ পালন করে না, তবে প্রকৃত অর্থে সে আল্লাহ তাআলাকে ভয়ই করে না। ওটা কেবল তার মুখের দাবি। আমরা আল্লাহ তা'আলাকে কে কতটুকু ভয় করি তা নিজেরাই এর দ্বারা পরিমাপ করতে পারি যে, তাঁর আদেশ-নিষেধ পালনে আমরা কতটুকু যত্নবান। আমাদের উচিত এটা অনুধাবন করা এবং সত্যিকার আল্লাহভীরু হওয়ার চেষ্টা করা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।
জিহাদের ফযীলত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শরীরে যে ধুলো লাগে, সে ধুলো ও জাহান্নামের ধোঁয়া কখনও একত্রিত হবে না। অর্থাৎ মুজাহিদ ব্যক্তিকে কখনও জাহান্নামের আগুন তো স্পর্শ করবেই না, এমনকি জাহান্নামের ধোঁয়াও তার গায়ে লাগবে না। সে জাহান্নাম থেকে বহু দূরে থাকবে।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ বলতে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে বোঝায়। এ লড়াই যেমন মুখের দ্বারা হতে পারে, কলমের দ্বারা হতে পারে, তেমনি হতে পারে সশস্ত্র সংগ্রাম। এর প্রত্যেকটির জন্যই সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে। সে নিয়ম-কানুনের অধীনে সংগ্রাম করলেই তা মহান জিহাদ নামে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত হবে, অন্যথায় নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ আমাদেরকে আল্লাহর ভয়ে কাঁদার উৎসাহ যোগায়। তাই আমরা আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে চেষ্টা করব এবং সে লক্ষ্যে মন নরম করার উপায়সমূহ অবলম্বন করব।
খ. জাহান্নাম থেকে বাঁচার লক্ষ্যে আমরা আপন সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর পথে জিহাদে রত থাকব, এমনকি সশস্ত্র সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুত থাকব। এবং যখনই সে অবকাশ আসে, যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ব।
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন সম্পর্কে জানানো হয়েছে যে, আল্লাহর ভয়ে যে কাঁদে, সে কিছুতেই জাহান্নামে যাবে না। তার জাহান্নামে যাওয়া কেমন অসম্ভব তা বোঝানোর জন্য দোওয়ানো দুধ ওলানে ফিরে যাওয়ার অসম্ভাব্যতা দ্বারা দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দোওয়ানো দুধ ওলানে ফিরে যাওয়া যেমন অসম্ভব, তেমনি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারী ব্যক্তির জাহান্নামে যাওয়াও অসম্ভব।
উল্লেখ্য, যার অন্তর নরম, সেই আল্লাহর ভয়ে কাঁদে। শক্ত মনে কান্না আসে না। মন শক্ত হওয়াটা দুর্ভাগ্যের লক্ষণ। কুরআন মাজীদে ইরশাদ-
فَوَيْلٌ لِلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ
“সুতরাং ধ্বংস সেই কাঠোর প্রাণদের জন্য, যারা আল্লাহর যিকির থেকে বিমুখ।”
তাই মন নরম করা খুব প্রয়োজন। মন নরম হয় কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত দ্বারা, মৃত্যু ও কবরের চিন্তা করার দ্বারা, হাশরের ময়দানের বিভীষিকা ও জাহান্নামের আযাব সম্পর্কে চিন্তা করার দ্বারা এবং আল্লাহ তাআলার রহমত ও তাঁর আযাব-গযবের ধ্যান করার দ্বারা। ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলালেও মন নরম হয়। আমাদেরকে এসব উপায় অবলম্বন করতে হবে, যাতে মন নরম হয়, ফলে আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে পারি।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করার অর্থ কেবল চোখের পানি ফেলা নয়। চোখের পানি ফেলার অবশ্যই মূল্য আছে। তবে আল্লাহভীতির দাবি পূরণ করাই আসল কথা। সত্যিকারের আল্লাহভীতির দাবি হল আল্লাহ তা'আলার যাবতীয় আদেশ পালন করা এবং তিনি যা-কিছু নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। কেউ যদি বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি, অথচ সে তাঁর আদেশ-নিষেধ পালন করে না, তবে প্রকৃত অর্থে সে আল্লাহ তাআলাকে ভয়ই করে না। ওটা কেবল তার মুখের দাবি। আমরা আল্লাহ তা'আলাকে কে কতটুকু ভয় করি তা নিজেরাই এর দ্বারা পরিমাপ করতে পারি যে, তাঁর আদেশ-নিষেধ পালনে আমরা কতটুকু যত্নবান। আমাদের উচিত এটা অনুধাবন করা এবং সত্যিকার আল্লাহভীরু হওয়ার চেষ্টা করা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।
জিহাদের ফযীলত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শরীরে যে ধুলো লাগে, সে ধুলো ও জাহান্নামের ধোঁয়া কখনও একত্রিত হবে না। অর্থাৎ মুজাহিদ ব্যক্তিকে কখনও জাহান্নামের আগুন তো স্পর্শ করবেই না, এমনকি জাহান্নামের ধোঁয়াও তার গায়ে লাগবে না। সে জাহান্নাম থেকে বহু দূরে থাকবে।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ বলতে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে বোঝায়। এ লড়াই যেমন মুখের দ্বারা হতে পারে, কলমের দ্বারা হতে পারে, তেমনি হতে পারে সশস্ত্র সংগ্রাম। এর প্রত্যেকটির জন্যই সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে। সে নিয়ম-কানুনের অধীনে সংগ্রাম করলেই তা মহান জিহাদ নামে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত হবে, অন্যথায় নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ আমাদেরকে আল্লাহর ভয়ে কাঁদার উৎসাহ যোগায়। তাই আমরা আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে চেষ্টা করব এবং সে লক্ষ্যে মন নরম করার উপায়সমূহ অবলম্বন করব।
খ. জাহান্নাম থেকে বাঁচার লক্ষ্যে আমরা আপন সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর পথে জিহাদে রত থাকব, এমনকি সশস্ত্র সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুত থাকব। এবং যখনই সে অবকাশ আসে, যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
