কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
২২. রোযার অধ্যায়
হাদীস নং: ২৪০৯
আন্তর্জাতিক নং: ২৪০৯
মাসে তিন দিন রোযা পালন করা বিষয়ে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসে আলী ইবনে উসমান (রাযিঃ) থেকে বর্ণনার বিভিন্ন রূপ
২৪১১. আলী ইবনে হাসান লানী (রাহঃ) ......... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালন করল সে যেন সারা বছর রোযা পালন করল। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা কুরআনে সত্যই বলেছেন, যে ব্যক্তি একটি ভাল কাজ করবে: তাকে তার দশ গুণ সওয়াব দেওয়া হবে।
باب ذِكْرِ الاِخْتِلاَفِ عَلَى أَبِي عُثْمَانَ فِي حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ فِي صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنَ كُلِّ شَهْرٍ
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ اللَّانِيُّ بِالْكُوفَةِ عَنْ عَبْدِ الرَّحِيمِ وَهُوَ ابْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ عَاصِمٍ الْأَحْوَلِ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَامَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ الشَّهْرِ فَقَدْ صَامَ الدَّهْرَ كُلَّهُ ثُمَّ قَالَ صَدَقَ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বান্দার সৎকর্মের প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলার নীতি
এতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর একটি নীতি বয়ান করেছেন এই যে
(যে ব্যক্তি একটি সৎকর্ম করবে, তার জন্য রয়েছে তার দশগুণ বেশি ছাওয়াব)। অর্থাৎ কেউ একটি সৎকর্ম করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে তার দশগুণ বদলা দেন, এমনকি তা বৃদ্ধি করতে করতে সাতশ' গুণ বরং তারচেও অনেক বেশি দিয়ে থাকেন।
কুরআন মাজীদে এর একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে এভাবে যে-
مَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيْلِ اللهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنُبُلَةٍ مِائَةً
حَبَّةٍ وَاللهُ يُطْعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
যারা আল্লাহর পথে নিজেদের অর্থ ব্যয় করে, তাদের দৃষ্টান্ত এ রকম, যেমন একটি শস্যদানা সাতটি শীষ উদ্গত করে (এবং) প্রতিটি শীর্ষে একশ' দানা জন্মায়। আর আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন (ছাওয়াবে) কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় (এবং) সর্বজ্ঞ।
এক হাদীছে আছে, যখন এ আয়াতটি নাযিল হয়, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজ উম্মতের জন্য আরও বেশি প্রতিদান চাইলেন। তখন আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেন-
مَن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضعِفهُ لَذَ أَضْعَافًا كَثِيرَةٌ وَاللَّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسطُ وَإِلَيْهِ
'কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম পন্থায় ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার কল্যাণে তা বহুগুণ বৃদ্ধি করবেন? আল্লাহই সংকট সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সচ্ছলতা দান করেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।'
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মতকে আরও বেশি দিন। তখন আল্লাহ নাযিল করলেন-
إِنَّمَا يُوَفَّ الصُّبِرُوْنَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
"যারা সবর অবলম্বন করে তাদেরকে তাদের ছাওয়াব দেওয়া হবে অপরিমিত।"
মহান আল্লাহ অতি সহজ সহজ আমলের বিনিময়েও বান্দাকে অপরিমিত ছাওয়াব দিয়ে থাকেন। যেমন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত আছে-
مَنْ دَخَلَ السُّوْقَ، فَقَالَ : لا إله إلا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ
يُحْيِي وَيُمِيتُ، وَهُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ، بِيَدِهِ الْخَيْرُ ، وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، كَتَبَ الله لَهُ أَلْفَ أَلْفِ حَسَنَةٍ، وَمَحَا عَنْهُ أَلْفِ أَلْفِ سَيِّئَةِ، وَرَفَعَ لَهُ أَلْفَ أَلْفِ دَرَجَةٍ
'কোনও ব্যক্তি বাজারে প্রবেশকালে যদি এই দু'আ পাঠ করে-
لا إله إلا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ، وَهُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ، بِيَدِهِ الْخَيْرُ ، وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
(আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনও শরীক নেই। সার্বভৌমত্ব তাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসাও তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। তিনি জীবন্ত, তাঁর মৃত্যু নেই। তাঁরই হাতে সমস্ত কল্যাণ। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান, তবে আল্লাহ তা'আলা তাকে দশ হাজার
নেকী দান করেন এবং তার দশ হাজার গুনাহ মাফ করেন আর তার মর্যাদা দশ হাজার স্তর উন্নীত করেন।
হযরত তামীম দারী রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দশবার পাঠ করে-
أَشْهَدُ أَنْ لا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، إلهَا وَاحِدًا أَحَدًا صَمَدًا، لَمْ يَتَّخِذُ صَاحِبَةً وَلا وَلَدًا، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনও শরীক নেই। তিনি এক অদ্বিতীয় মাবুদ, যিনি কারও মুখাপেক্ষী নন; বরং সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। তাঁর কোনও স্ত্রী নেই এবং কোনও সন্তানও নেই আর তাঁর সমতুল্য নেই কেউ।) আল্লাহ তা'আলা তার জন্য চার লাখ নেকী লিপিবদ্ধ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বান্দার সৎকর্মে আল্লাহ তা'আলা বড়ই খুশি হন। তাই প্রতিদান দেন বহুগুণ বেশি। সুতরাং আমাদের যথাসম্ভব বেশি বেশি সৎকর্মে অগ্রগামী থাকা উচিত।
এতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর একটি নীতি বয়ান করেছেন এই যে
(যে ব্যক্তি একটি সৎকর্ম করবে, তার জন্য রয়েছে তার দশগুণ বেশি ছাওয়াব)। অর্থাৎ কেউ একটি সৎকর্ম করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে তার দশগুণ বদলা দেন, এমনকি তা বৃদ্ধি করতে করতে সাতশ' গুণ বরং তারচেও অনেক বেশি দিয়ে থাকেন।
কুরআন মাজীদে এর একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে এভাবে যে-
مَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيْلِ اللهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنُبُلَةٍ مِائَةً
حَبَّةٍ وَاللهُ يُطْعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
যারা আল্লাহর পথে নিজেদের অর্থ ব্যয় করে, তাদের দৃষ্টান্ত এ রকম, যেমন একটি শস্যদানা সাতটি শীষ উদ্গত করে (এবং) প্রতিটি শীর্ষে একশ' দানা জন্মায়। আর আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন (ছাওয়াবে) কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় (এবং) সর্বজ্ঞ।
এক হাদীছে আছে, যখন এ আয়াতটি নাযিল হয়, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজ উম্মতের জন্য আরও বেশি প্রতিদান চাইলেন। তখন আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেন-
مَن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضعِفهُ لَذَ أَضْعَافًا كَثِيرَةٌ وَاللَّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسطُ وَإِلَيْهِ
'কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম পন্থায় ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার কল্যাণে তা বহুগুণ বৃদ্ধি করবেন? আল্লাহই সংকট সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সচ্ছলতা দান করেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।'
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মতকে আরও বেশি দিন। তখন আল্লাহ নাযিল করলেন-
إِنَّمَا يُوَفَّ الصُّبِرُوْنَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
"যারা সবর অবলম্বন করে তাদেরকে তাদের ছাওয়াব দেওয়া হবে অপরিমিত।"
মহান আল্লাহ অতি সহজ সহজ আমলের বিনিময়েও বান্দাকে অপরিমিত ছাওয়াব দিয়ে থাকেন। যেমন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত আছে-
مَنْ دَخَلَ السُّوْقَ، فَقَالَ : لا إله إلا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ
يُحْيِي وَيُمِيتُ، وَهُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ، بِيَدِهِ الْخَيْرُ ، وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، كَتَبَ الله لَهُ أَلْفَ أَلْفِ حَسَنَةٍ، وَمَحَا عَنْهُ أَلْفِ أَلْفِ سَيِّئَةِ، وَرَفَعَ لَهُ أَلْفَ أَلْفِ دَرَجَةٍ
'কোনও ব্যক্তি বাজারে প্রবেশকালে যদি এই দু'আ পাঠ করে-
لا إله إلا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ، وَهُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ، بِيَدِهِ الْخَيْرُ ، وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
(আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনও শরীক নেই। সার্বভৌমত্ব তাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসাও তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। তিনি জীবন্ত, তাঁর মৃত্যু নেই। তাঁরই হাতে সমস্ত কল্যাণ। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান, তবে আল্লাহ তা'আলা তাকে দশ হাজার
নেকী দান করেন এবং তার দশ হাজার গুনাহ মাফ করেন আর তার মর্যাদা দশ হাজার স্তর উন্নীত করেন।
হযরত তামীম দারী রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দশবার পাঠ করে-
أَشْهَدُ أَنْ لا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، إلهَا وَاحِدًا أَحَدًا صَمَدًا، لَمْ يَتَّخِذُ صَاحِبَةً وَلا وَلَدًا، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনও শরীক নেই। তিনি এক অদ্বিতীয় মাবুদ, যিনি কারও মুখাপেক্ষী নন; বরং সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। তাঁর কোনও স্ত্রী নেই এবং কোনও সন্তানও নেই আর তাঁর সমতুল্য নেই কেউ।) আল্লাহ তা'আলা তার জন্য চার লাখ নেকী লিপিবদ্ধ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বান্দার সৎকর্মে আল্লাহ তা'আলা বড়ই খুশি হন। তাই প্রতিদান দেন বহুগুণ বেশি। সুতরাং আমাদের যথাসম্ভব বেশি বেশি সৎকর্মে অগ্রগামী থাকা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: