কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

২২. রোযার অধ্যায়

হাদীস নং: ২৩৩২
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৩২
এ প্রসঙ্গে হাফসা (রাযিঃ) এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে বর্ণনা পার্থক্যের উল্লেখ
২৩৩৪। আব্দুল মালিক ইবনে শুআয়ব (রাহঃ) ......... হাফসা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রাত্রে ফজরের পূর্বেই রোযার নিয়ত (দৃঢ় ইচ্ছা) না করে তার রোযা পালন হবে না।
باب ذِكْرِ اخْتِلاَفِ النَّاقِلِينَ لِخَبَرِ حَفْصَةَ فِي ذَلِكَ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ لَمْ يُبَيِّتِ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ فَلاَ صِيَامَ لَهُ " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রোযার নিয়ত করা ফরয। নিয়ত অর্থ সংকল্প। যেমন মনে মনে এ সংকল্প করবে, আমি আল্লাহর সন'ষ্টির উদ্দেশ্যে আগামী কালের রোযা রাখছি। মুখে বলা জরুরি নয়। হাদীস শরীফে আছে, ‘সকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।’- সহীহ বুখারী ১/২
ফরয রোযার নিয়ত রাত বাকি থাকতেই করা উত্তম। উম্মুল মুমিনীন হাফসা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- من لم يجمع الصيام قبل الفجر فلا صيام له.যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোযা রাখার নিয়ত করবে না তার রোযা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না।-সুনানে আবু দাউদ ১/৩৩৩
রাতে নিয়ত করতে না পারলে দিনে সূর্য ঢলার আগে নিয়ত করলেও রোযা হয়ে যাবে। সালামা ইবনুল আকওয়া রা. বলেন, (আশুরার রোযা যখন ফরয ছিল তখন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আসলাম’ গোত্রের একজন ব্যক্তিকে ঘোষণা করতে বললেন, ‘যে সকাল থেকে কিছু খায়নি সে বাকি দিন রোযা রাখবে। আর যে খেয়েছে সেও বাকি দিন রোযা রাখবে। কারণ আজ আশুরা-দিবস।’-সহীহ বুখারী ২০০৭
আবদুল করীম জাযারী বলেন, কিছু লোক সকালে চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিল। তখন উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ. বললেন, ‘যে ব্যক্তি (ইতিমধ্যে কিছু) খেয়েছে সে বাকি দিন খাওয়া থেকে বিরত থাকবে। আর যে খায়নি সে বাকি দিন রোযা রাখবে।’-মুহাল্লা ৪/২৯৩
পুরো রমযানের জন্য একত্রে নিয়ত করা যথেষ্ট নয়; বরং প্রত্যেক রোযার নিয়ত পৃথক পৃথকভাবে করতে হবে। কারণ প্রতিটি রোযা ভিন্ন ভিন্ন আমল (ইবাদত)। আর প্রতিটি আমলের জন্যই নিয়ত করা জরুরি। হাদীস শরীফে আছে, ‘সকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।’-সহীহ বুখারী ১/২
আরো দেখুন : আলমুহাল্লা ৪/২৮৫
রাতে রোযার নিয়ত করলেও সুবহে সাদিক পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী-মিলনের অবকাশ থাকে। এতে নিয়তের কোনো ক্ষতি হবে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
احل لكم ليلة الصيام الرفث الى نسائكم
তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে রমযানের রাতে স্বীয় স্ত্রীর সাথে প্রবৃত্ত হওয়া।-সূরা বাকারা : ১৮৭
নিয়তের সময় শুরু হয় পূর্বের দিনের সূর্যাস্তের পর থেকে। যেমন-মঙ্গলবারের রোযার নিয়ত সোমবার দিবাগত রাত তথা সূর্যাস্তের পর থেকে করা যায় সোমবার সূর্যাস্তের পূর্বে সঙ্গলবারের রোযার নিয়ত করা যথেষ্ট নয়। কেননা, হাদীস শরীফে রাতে নিয়ত করার কথা বলা হয়েছে।

#সংগৃহীত
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে নাসায়ী - হাদীস নং ২৩৩২ | মুসলিম বাংলা