কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
১৯. দু' ঈদের নামাযের বর্ণনা
হাদীস নং: ১৫৬০
আন্তর্জাতিক নং: ১৫৬০
উভয় ঈদের সাজ-সজ্জা
১৫৬৩। সুলাইমান ইবনে দাউদ (রাহঃ) ......... সালিমের পিতা [আব্দুল্লাহ (রাযিঃ)] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) একবার বাজারে এক জোড়া মোটা রেশমী পোশাক পেলেন। তিনি তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সমীপে নিয়ে আসলেন এবং বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এটা ক্রয় করে নিন, যাতে ঈদে এবং কোন প্রতিনিধি দল আসলে আপনি তা পরিধান করতে পারেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, রেশমী পোশাক তাদেরই পোশাক যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই অথবা (তিনি বলেছেন) রেশমী পোশাক তারাই পরিধান করবে, যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই।
উমর (রাযিঃ) আল্লাহ তাআলার যতদিন ইচ্ছা ছিল অপেক্ষা করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদিন উমর (রাযিঃ) এর কাছে একটি রেশমী জুব্বা পাঠালেন। তিনি তা গ্রহণ করলেন, এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি বলেছিলেন, রেশমী পোশাক তাদেরই পোশাক যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই। তা-ই আবার আমার কাছে পাঠালেন? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি তা বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয় লব্ধ অর্থ দ্বারা স্বীয় প্রয়োজন মিটাও।
উমর (রাযিঃ) আল্লাহ তাআলার যতদিন ইচ্ছা ছিল অপেক্ষা করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদিন উমর (রাযিঃ) এর কাছে একটি রেশমী জুব্বা পাঠালেন। তিনি তা গ্রহণ করলেন, এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি বলেছিলেন, রেশমী পোশাক তাদেরই পোশাক যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই। তা-ই আবার আমার কাছে পাঠালেন? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি তা বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয় লব্ধ অর্থ দ্বারা স্বীয় প্রয়োজন মিটাও।
باب الزِّينَةِ لِلْعِيدَيْنِ
أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، وَعَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ وَجَدَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ - رضى الله تعالى عنه - حُلَّةً مِنْ إِسْتَبْرَقٍ بِالسُّوقِ فَأَخَذَهَا فَأَتَى بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ابْتَعْ هَذِهِ فَتَجَمَّلْ بِهَا لِلْعِيدِ وَالْوَفْدِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ أَوْ إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ " . فَلَبِثَ عُمَرُ مَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِجُبَّةِ دِيبَاجٍ فَأَقْبَلَ بِهَا حَتَّى جَاءَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قُلْتَ " إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ " . ثُمَّ أَرْسَلْتَ إِلَىَّ بِهَذِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " بِعْهَا وَتُصِبْ بِهَا حَاجَتَكَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীছে জানানো হয়েছে, রেশমী পোশাক পরে এমন ব্যক্তি, আখিরাতে যার কোনও অংশ নেই। অর্থাৎ যে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। তার মানে এটা অমুসলিমদের পোশাক। অন্য হাদীছে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরে, সে আখিরাতে রেশমী পোশাক পরবে না। আর এ কারণে মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে। সারমর্ম হল- রেশমি পোশাক দুনিয়ায় অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিম ব্যক্তির জন্য দুনিয়ায়। এটা পরা জায়েয নয়। তা সত্ত্বেও কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি রেশমী পোশাক পরে, তবে আখিরাতে সে এ পোশাক পরতে পারবে না। অর্থাৎ এ হুকুম অমান্য করার কারণে সে শুরুতে জান্নাতে যেতে পারবে না। জান্নাতের পোশাক রেশমী পোশাক। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
‘সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের’ (সূরা ফাতির, আয়াত ৩৩)
কাজেই 'দুনিয়ায় যে মুমিন রেশমী পোশাক পরে, আখিরাতে সে তা পরবে না' দ্বারা বোঝানো হয়েছে সে প্রথমে জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথমে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঈমানের বদৌলতে সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভ করার পর জান্নাতের অপরাপর নি'আমতের মতো রেশমী পোশাকও সে পাবে। কেউ কেউ বলেন, দুনিয়ায় যে মুমিন ব্যক্তি রেশমী পোশাক পরবে, সে জান্নাত লাভ করলেও জান্নাতের অন্যান্য নি'আমত ঠিকই পাবে, কিন্তু রেশমী পোশাক পাবে না।
প্রশ্ন দাঁড়ায়, তবে তো তার মনে রেশমী পোশাক না পাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে, অথচ জান্নাত কষ্টের জায়গা নয়?
এর উত্তর হল, জান্নাতে এমন ব্যক্তির অন্তর থেকে রেশমী পোশাকের চাহিদাই দূর করে দেওয়া হবে। অন্তরে যখন এ পোশাকের চাহিদা থাকবে না, তখন না পাওয়ার দরুন কোনও কষ্টও সে পাবে না, যেমন সাধারণ স্তরের জান্নাতীগণ উচ্চস্তরের জান্নাতবাসীগণের মতো মর্যাদা না পাওয়ার কারণে কোনও কষ্ট বোধ করবে না।
হাদীছের মূল বার্তা হল মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক সম্পর্কে সতর্ক করা, যাতে তারা এটা না পরে। কেননা এটা পরলে শরী'আতের হুকুম অমান্য করা হবে। পরিণামে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যদি না আল্লাহ তা'আলা মাফ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিমদেরকে অবশ্যই এ পোশাক পরিধান করা হতে বিরত থাকতে হবে।
খ. রেশমী পোশাক পরিধান করলে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরিধান করলে জান্নাতে এ নি'আমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।
وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
‘সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের’ (সূরা ফাতির, আয়াত ৩৩)
কাজেই 'দুনিয়ায় যে মুমিন রেশমী পোশাক পরে, আখিরাতে সে তা পরবে না' দ্বারা বোঝানো হয়েছে সে প্রথমে জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথমে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঈমানের বদৌলতে সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভ করার পর জান্নাতের অপরাপর নি'আমতের মতো রেশমী পোশাকও সে পাবে। কেউ কেউ বলেন, দুনিয়ায় যে মুমিন ব্যক্তি রেশমী পোশাক পরবে, সে জান্নাত লাভ করলেও জান্নাতের অন্যান্য নি'আমত ঠিকই পাবে, কিন্তু রেশমী পোশাক পাবে না।
প্রশ্ন দাঁড়ায়, তবে তো তার মনে রেশমী পোশাক না পাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে, অথচ জান্নাত কষ্টের জায়গা নয়?
এর উত্তর হল, জান্নাতে এমন ব্যক্তির অন্তর থেকে রেশমী পোশাকের চাহিদাই দূর করে দেওয়া হবে। অন্তরে যখন এ পোশাকের চাহিদা থাকবে না, তখন না পাওয়ার দরুন কোনও কষ্টও সে পাবে না, যেমন সাধারণ স্তরের জান্নাতীগণ উচ্চস্তরের জান্নাতবাসীগণের মতো মর্যাদা না পাওয়ার কারণে কোনও কষ্ট বোধ করবে না।
হাদীছের মূল বার্তা হল মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক সম্পর্কে সতর্ক করা, যাতে তারা এটা না পরে। কেননা এটা পরলে শরী'আতের হুকুম অমান্য করা হবে। পরিণামে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যদি না আল্লাহ তা'আলা মাফ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিমদেরকে অবশ্যই এ পোশাক পরিধান করা হতে বিরত থাকতে হবে।
খ. রেশমী পোশাক পরিধান করলে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরিধান করলে জান্নাতে এ নি'আমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
