কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
১৪. জুমআ'র অধ্যায়
হাদীস নং: ১৪০৩
আন্তর্জাতিক নং: ১৪০৩
জুমআর দিনে চুপ থাকা এবং অনর্থক কাজ পরিহার করার ফযীলত
১৪০৬। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... সালমান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যেকোন ব্যক্তি জুমআর দিনে পবিত্রতা গ্রহণ করে যেভাবে তাকে আদেশ করা হয়েছে। তারপর তার ঘর থেকে বের হয়ে জুম’আয় পৌঁছে যায় এবং নামায সমাপন না করা পর্যন্ত চুপ থাকে তার জন্য এ আমল জুমআর পূর্ববর্তী সমুদয় গুনাহর কাফফারা হয়ে যায়।
باب فضل الإنصات وترك اللغو يوم الجمعة
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَنْبَأَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ، زِيَادِ بْنِ كُلَيْبٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنِ الْقَرْثَعِ الضَّبِّيِّ، - وَكَانَ مِنَ الْقُرَّاءِ الأَوَّلِينَ - عَنْ سَلْمَانَ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ رَجُلٍ يَتَطَهَّرُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ كَمَا أُمِرَ ثُمَّ يَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهِ حَتَّى يَأْتِيَ الْجُمُعَةَ وَيُنْصِتُ حَتَّى يَقْضِيَ صَلاَتَهُ إِلاَّ كَانَ كَفَّارَةً لِمَا قَبْلَهُ مِنَ الْجُمُعَةِ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে জুমআর দিনে গোসল করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা ছুন্নাত ও ফযীলতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (বাদায়েউস সানায়ে’: ১/২৬৯) জুমআর দিন গোসল করা জরুরী বলে যদিও কোন কোন ইমাম মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলামের শুরু যুগে সাহাবায়ে কিরামের আর্থিক দৈন্যতা ছিল চরমে। নিজেরা ক্ষেতে খামারে কাজ করতেন, মোটা কাপড় পরিধান করতেন এবং ঘর্মাক্ত শরীরে জুমার নামাযে আসতেন। ঘামের দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁদের অনটন দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন। তাঁরা উন্নতমানের পাতলা কাপড় পরিধান করেন। কাজের মানুষে তাঁদের কাজ করে। তখন গোসল করার ঐ প্রয়োজনীয়তা থাকেনি যা শুরু যুগে ছিলো। (তহাবী শরীফ-৭০৭) এ হাদীসের আলোকে বলা যেতে পারে যে, রসূল স.-এর বাণী الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ জুমআর দিনের গোসল করা সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়াজিব’ (বুখারী-৮১৬) এটা ইসলামের শুরু দিকের কথা। এর আরো একটি প্রমাণ মেলে مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَة ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে অযু করে জুমআর নামাযে যায় এবং চুপ করে মনোযোগ সহকারে (ইমামের খুৎবা) শোনে তার এই জুমআ থেকে পরের জুমআ এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম-১৮৬১) এ হাদীসে জুমআর ফযীলত পাওয়ার জন্য তিনটি আমলের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে গোসলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকেও বুঝা যায় যে, জুমআর জন্য গোসল করা জরুরী নয়। তবে বুখারী: ৮৬৪ নং হাদীস থেকে গোসলের ফযীলত প্রমাণিত হয়েছে। অতএব এটা ছুন্নাত।


বর্ণনাকারী: