কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
১১. নামায শুরু করার অধ্যায়
হাদীস নং: ৮৮৪
আন্তর্জাতিক নং: ৮৮৪
প্রথম তাকবীর ফরয।
৮৮৭। মুহাম্মাদ ইবনে মুসান্না (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে প্রবেশ করলে পরে এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল এবং নামায আদায় করল। তারপর এসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে সালাম করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, ফিরে যাও, আবার নামায আদায় কর (কেননা, তুমি নামায আদায় করনি) সে ব্যক্তি প্রত্যাবর্তন করে যেরূপ নামায আদায় করেছিল সেরূপ নামায আদায় করল। তারপর এসে নবী (ﷺ)-কে সালাম করল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বললেন ওয়া আলাইকাস সালাম। ফিরে যাও নামায আদায় কর। কেননা, তুমি নামায আদায় করনি।
তিনি এরূপ তিনবার করলেন। তারপর সে ব্যক্তি বলল, ঐ সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আমি এর চেয়ে অধিক ভাল নামায আদায় করতে জানি না। অতএব, আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন- যখন নামাযে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে, তারপর কুরআন থেকে যা তোমার পক্ষে সহজ হয় তা পড়বে। তারপর রুকু করবে ধীর-স্থিরভাবে। তারপর মাথা উঠাবে এবং সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীর-স্থিরভাবে। তারপর মাথা উঠিয়ে ধীর-স্থিরভাবে বসে পড়বে। অতঃপর এভাবে তোমার নামায পূর্ণ করবে।
তিনি এরূপ তিনবার করলেন। তারপর সে ব্যক্তি বলল, ঐ সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আমি এর চেয়ে অধিক ভাল নামায আদায় করতে জানি না। অতএব, আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন- যখন নামাযে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে, তারপর কুরআন থেকে যা তোমার পক্ষে সহজ হয় তা পড়বে। তারপর রুকু করবে ধীর-স্থিরভাবে। তারপর মাথা উঠাবে এবং সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীর-স্থিরভাবে। তারপর মাথা উঠিয়ে ধীর-স্থিরভাবে বসে পড়বে। অতঃপর এভাবে তোমার নামায পূর্ণ করবে।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَرَجَعَ فَصَلَّى كَمَا صَلَّى ثُمَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَقَالَ الرَّجُلُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَ هَذَا فَعَلِّمْنِي . قَالَ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا "
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রুকু-সিজদায় স্থির হওয়া ওয়াজিব। রুকু-সিজদায় গিয়ে সর্বনি্ম কতটুকু সময় অপেক্ষা করলে ওয়াজিব আদায় হয় এ ব্যাপারে উপরিউক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ইমাম ত্বহাবী রহ. বলেন, مِقْدَارُ الرُّكُوعِ أَنْ يَرْكَعَ حَتَّى يَسْتَوِيَ رَاكِعًا وَمِقْدَارُ السُّجُودِ أَنْ يَسْجُدَ حَتَّى يَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ، فَهَذَا مِقْدَارُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ الَّذِي لَا بُدَّ مِنْهُ . রুকু এবং সিজদায় যে পরিমাণ দেরি না করলেই নয় তা হলো, রুকু-সিজদায় গিয়ে স্থির হওয়া। (ত্বহাবী শরীফ-১৩৯২ নং হাদীসের আলোচনায়, খ--১, পৃষ্ঠা-১৬৭) ইমাম ত্বহাবীর এ বক্তব্য থেকেও সর্বসাধারণের নিকট ধীরস্থিরের পরিমাণ নির্ধারণ করা কষ্টকর হতে পারে। তাই তাদের জন্য আরো সহজ করে বলা যেতে পারে যে, একবার তাসবীহ পাঠ করা যায় এই পরিমাণ সময় রুকু-সিজদায় অপেক্ষা করলে সেটাকে স্থিরতা বলা যায় এবং এর দ্বারা রুকু-সিজদা পূর্ণ হয়ে যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ৪৬৪) তবে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতে এ ধরণের তাড়াহুড়া কোনক্রমে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করার মতো সময় অপেক্ষা করা উচিত।
