কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

৯. ক্বিবলা সম্পর্কিত

হাদীস নং: ৭৬২
আন্তর্জাতিক নং: ৭৬২
মুসল্লী এবং ইমামের মাঝে আড়াল।
৭৬৩। কুতায়বা (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর একখানা মাদুর ছিল। তিনি দিনের বেলা তা বিছাতেন এবং রাতের বেলায় তা দ্বারা কুঠুরীর মতো বানাতেন এবং তার ভেতর নামায আদায় করতেন। লোক তা জানতে পেরে তাঁর সঙ্গে নামাযে শরীক হতেন, তখন তাঁর মধ্যে এবং তাদের মধ্যে থাকত ঐ মাদুর। তিনি বললেন, যতক্ষণ সামর্থ্য হয়, খুশিমনে আমল করতে থাকা তোমরা যতক্ষণ ক্লান্ত না হও ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলাও তোমাদের থেকে অনূগ্রহের ধারা বন্ধ করেন না। আর আল্লাহর নিকট ঐ আমলই সবচেয়ে অধিক পছন্দনীয় যা স্থায়ীভাবে করা হয়। যদিও তা স্বল্প হয়। তারপর তিনি তাঁর এই নামাযের স্থান ত্যাগ করলেন। আল্লাহ তাআলা তাকে তুলে নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি আর সেখানে ফিরে আসেন নি। তিনি যখন কোন কাজ আরম্ভ করতেন, তা সব সময় আদায় করতেন।
المصلي يكون بينه وبين الإمام سترة
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَصِيرَةٌ يَبْسُطُهَا بِالنَّهَارِ وَيَحْتَجِرُهَا بِاللَّيْلِ فَيُصَلِّي فِيهَا فَفَطِنَ لَهُ النَّاسُ فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ وَبَيْنَهُ وَبَيْنَهُمُ الْحَصِيرَةُ فَقَالَ " اكْلَفُوا مِنَ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لاَ يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا وَإِنَّ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ أَدْوَمُهُ وَإِنْ قَلَّ " . ثُمَّ تَرَكَ مُصَلاَّهُ ذَلِكَ فَمَا عَادَ لَهُ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَكَانَ إِذَا عَمِلَ عَمَلاً أَثْبَتَهُ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে একটি মূলনীতি হিসেবে বলেন যে, আল্লাহ তা'আলার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তাই, যা আমলকারী নিয়মিতভাবে করে। কেননা যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে আমল করে সে ওই ব্যক্তির মত, যে বাদশার দরবারে নিয়মিতভাবে আসা-যাওয়া করে। যে ব্যক্তি কখনও হাজির হয় আবার কখনও গরহাজির থাকে, সে বাদশার অতটা প্রিয় হতে পারে না, যতটা নিয়মিত হাজিরাদাতা হয়ে থাকে। অনুরূপ যে ব্যক্তি নিয়মিত ইবাদত বন্দেগী চালিয়ে যায়, সে যেন মাওলার দরবারের একজন নিয়মিত হাজিরাদাতা। স্বাভাবিকভাবেই সে আল্লাহর বেশি প্রিয়ভাজন হবে। তাছাড়া কোনও ইবাদত কিছুদিন করার পর ছেড়ে দেওয়াটা গরহাজির হয়ে পড়ার মত। এতে কেমন যেন বিমুখতা ও অনীহা ভাব প্রকাশ পায়, যা একরকম বেআদবীও বটে। অনুপস্থিতির সে বেআদবী যাতে না হয়ে যায় এবং ছাওয়াব পাওয়ার সিলসিলা যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য উচিত যতটুকু পরিমাণ আমল নিয়মিত করা যাবে অতটুকুই গ্রহণ করা, তা অল্পই হোক না কেন। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছেঃ-

أحب الأعمال إلى الله أدومها وإن قل

“আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তা-ই, যা স্থায়ী হয়, যদিও সে আমল অল্প পরিমাণ হয়। " সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫৮৬১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৭৮২। সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ নং ১৩৬৮; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৮৫৬; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৭৬২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৪০. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৬৩০৮

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

আল্লাহর কাছে যেহেতু স্থায়ী আমলই বেশি পসন্দনীয়, তাই নফল ইবাদত এতটুকু পরিমাণেই শুরু করা উচিত, যা নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন