আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
২৬- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ২১১৮
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বাণিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস (রাযিঃ) বলেন আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাযিঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয় গাফেল করে রেখেছে।
১৯৮৬. মুহাম্মাদ ইবনে সাব্বাহ (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, (পরবর্তী যামানায়) একদল সৈন্য কাবা (ধ্বংসের উদ্দেশ্যে) অভিযান চালাবে। যখন তারা বায়দা নামক স্থানে পৌঁছবে, তখন তাদের আগের-পিছের সকলকে যমীনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাদের অগ্রবাহিনী ও পশ্চাৎবাহিনী সকলকে কীভাবে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে, অথচ সে সেনাবাহিনীতে তাদের বাজারের (পণ্য-সামগ্রী বহনকারী) লোকও থাকবে এবং এমন লোকও থাকবে যারা তাদের দলভুক্ত নয়। তিনি বললেন, তাদের আগের-পিছের সকলকে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। তারপরে (কিয়ামতের দিবসে) তাদের নিজেদের নিয়ত অনুযায়ী উত্থান করা হবে।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এটি একটি ভবিষ্যদ্বাণী। এতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাচ্ছেন, কিয়ামতের আগে একটা সময় আসবে যখন মানুষের ঈমান-আমলের ব্যাপক অবক্ষয় দেখা দেবে। মানুষ 'সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ'-এর দায়িত্ব পালনে চরম শৈথিল্য প্রদর্শন করবে। সেই সময় কোনও এক জালেম রাজা তার সেনাবাহিনী নিয়ে পবিত্র কা'বা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য অভিযান চালাবে। কিন্তু সে তার এ দুরভিসন্ধিতে সফল হবে না। পবিত্র কা'বায় পৌঁছার আগেই এক তরুলতাহীন প্রান্তরে আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে মাটির ভেতর ধ্বসিয়ে দেবেন। তাদের মধ্যে এমন কিছু লোকও থাকবে, যারা মূল বাহিনীর সদস্য নয়। তারা কেবল মালামাল বেচার জন্য তাদের সঙ্গী হবে। আরেকদল লোক কেবলই তাদের পথের সহযাত্রী হবে। হয়তো বাহিনীর লোক তাদের সঙ্গে যেতে বাধ্য করবে। কিন্তু সকলেই যেহেতু একসঙ্গেই থাকবে, তাই সাধারণভাবে সকলেই আযাবের কবলে পড়ে যাবে। তবে আখিরাতের ব্যাপারটা হবে আলাদা। সেখানে প্রত্যেকের সংগে তার নিয়ত অনুযায়ী আচরণ করা হবে। যাদের নিয়ত থাকবে পবিত্র কা'বাঘরের ক্ষতি করা, তারা দুনিয়ার শাস্তির সাথে আখিরাতের আযাবও ভোগ করবে। আর যাদেরকে জোরপূর্বক তাদের সংগে যেতে বাধ্য করা হবে, তারা আখিরাতে শাস্তির সম্মুখীন হবে না। অবশ্য যারা স্বেচ্ছায় তাদের সংগে যোগদান করবে, তা বেচাকেনার উদ্দেশ্যে হোক বা অন্য কোনও উদ্দেশ্যে, তাদের কারণে যেহেতু অপরাধীদের দল ভারী হবে এবং দেখতে তাদেরকে একটি বড় বাহিনী মনে হবে, সেহেতু তারাও অপরাধীদের দলে গণ্য হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারাও নিয়তের গুরুত্ব বোঝা গেল। নিয়ত দ্বারাই কাজের ভালোমন্দ নির্ণিত হবে এবং সে অনুযায়ী আখিরাতে বদলা দেওয়া হবে।
খ. যাদের দ্বারা অপরাধকারীদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে, অপরাধকারীদের অনুরূপ শাস্তি তাদের জন্যও প্রযোজ্য হয়।
গ. যারা অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত থাকে তাদের সংগে চলাফেরা ও উঠাবসা করার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে এ হাদীছে কঠিন সতর্কবাণী। সুতরাং এর থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মু'মিনের অবশ্যকর্তব্য। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ : এবং সেই বিপর্যয়কে ভয় কর, যা বিশেষভাবে তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করে কেবল তাদেরকেই আক্রান্ত করবে না। জেনে রেখ, আল্লাহর আযাব সুকঠিন। - আনফালঃ ২৫
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারাও নিয়তের গুরুত্ব বোঝা গেল। নিয়ত দ্বারাই কাজের ভালোমন্দ নির্ণিত হবে এবং সে অনুযায়ী আখিরাতে বদলা দেওয়া হবে।
খ. যাদের দ্বারা অপরাধকারীদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে, অপরাধকারীদের অনুরূপ শাস্তি তাদের জন্যও প্রযোজ্য হয়।
গ. যারা অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত থাকে তাদের সংগে চলাফেরা ও উঠাবসা করার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে এ হাদীছে কঠিন সতর্কবাণী। সুতরাং এর থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মু'মিনের অবশ্যকর্তব্য। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ : এবং সেই বিপর্যয়কে ভয় কর, যা বিশেষভাবে তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করে কেবল তাদেরকেই আক্রান্ত করবে না। জেনে রেখ, আল্লাহর আযাব সুকঠিন। - আনফালঃ ২৫
