কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

৩৬. ইসলামী শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫০৬৫
আন্তর্জাতিক নং: ৫১৫৫
১৩১. প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে।
৫০৬৫. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার দুজন প্রতিবেশী আছে, আমি কার সাথে প্রথমে সদ্ব্যবহার করবো? তিনি বলেনঃ যার দরজা তোমার নিকটবর্তী-হবে, তার প্রতি ইহসান করবে।
باب فِي حَقِّ الْجِوَارِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدُ بْنُ مُسَرْهَدٍ، وَسَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَنَّ الْحَارِثَ بْنَ عُبَيْدٍ، حَدَّثَهُمْ عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ طَلْحَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي جَارَيْنِ بِأَيِّهِمَا أَبْدَأُ قَالَ " بِأَدْنَاهُمَا بَابًا " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ شُعْبَةُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ طَلْحَةُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিবেশী কারা, এ নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। কারও মতে ডানে-বামে ও সামনে পেছনের প্রত্যেক দিকের চল্লিশ ঘর প্রতিবেশীর অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ বলেন, প্রত্যেক দিকের দশ ঘর করে সর্বমোট চল্লিশ ঘর। কোনও কোনও বর্ণনা দ্বারাও এর সমর্থন পাওয়া যায়। কেউ বলেন, ফজরের নামাযে মসজিদে যারা একত্র হয় তারা একে অন্যের প্রতিবেশী। কারও মতে আযানের আওয়াজ যারা শুনতে পায় তারা সকলে একে অন্যের প্রতিবেশী।

মূলত এ সবই একটা আনুমানিক ধারণা। প্রতিবেশীর সংখ্যা এর কম-বেশিও হতে পারে। বস্তুত প্রত্যেকের জন্য তার অবস্থানগত বিবেচনায় প্রতিবেশীর পরিমাণ নির্ণিত হবে। কারও প্রতিবেশী এক-দু'জনও হতে পারে, আবার কারও হতে পারে অনেক বেশি। তবে সাধারণভাবে এতটুকু স্পষ্ট যে, প্রতিবেশীর সংখ্যা একাধিকই হয়ে থাকে।

হাদীছে সাধারণভাবে প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারের হুকুম দেওয়া হয়েছে। এখন কেউ যদি প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করতে চায়, তখন অবস্থাবিশেষে এমন হতে পারে যে, তার আশেপাশে যত প্রতিবেশী আছে সকলের মধ্যে তা বিতরণ করার সামর্থ্য তার নেই। এ অবস্থায় সে কী করবে? কাকে রেখে কাকে দেবে? এ অবস্থায় কী করলে প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার দরজা তোমার নিকটবর্তী–হবে, তার প্রতি ইহসান করবে। এর দ্বারা বুঝা যায়, যদি সকলের প্রতি ইহসান করতে না পারে কিন্তু একাধিক জনকে পারে, সে ক্ষেত্রে নৈকট্যের পর্যায়ক্রম অনুযায়ী করবে।

হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বলেন, নিকটপ্রতিবেশীর আগে দূরপ্রতিবেশী থেকে দেওয়ার সূচনা করবে না। বরং আগে নিকটপ্রতিবেশীকে দেবে, তারপর দূর প্রতিবেশীকে। ৪৬

ইমাম আবূ জামরাহ রহ. বলেন, ‘পর্যায়ক্রম’র এ নির্দেশ মুস্তাহাব হিসেবে, ওয়াজিব হিসেবে নয়। কেননা হাদিয়া দেওয়া ওয়াজিব নয়। কাজেই পর্যায়ক্রম রক্ষা করাও ওয়াজিব হবে না।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছ দ্বারা শিক্ষা পাওয়া যায় আমল করার আগে ইলম হাসিল করা চাই।

খ. ইলম হাসিলের একটি পন্থা আলেমকে জিজ্ঞেস করা।

গ. আমলের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা উত্তম পন্থা অবলম্বনের আগ্রহ থাকা চাই ।

৪৬. বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১১০
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন