কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
৩৬. ইসলামী শিষ্টাচারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৯৪৭
আন্তর্জাতিক নং: ৫০৩১
৯৬. কিরূপে হাঁচির জবাব দেবে, সে সম্পর্কে।
৪৯৪৭. উছমান ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) ..... হিলাল ইবনে ইয়াসাফ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা সালিম ইবনে উবাইদ (রাযিঃ)-এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে বলেঃ আস-সালামু আলাইকুম। তখন সালিম (রাযিঃ) বলেনঃ সালাম তোমার প্রতি এবং তোমার মায়ের প্রতি। কিছুক্ষণ পর তিনি বলেনঃ সম্ভবতঃ আমার কথা তোমার কাছে অপ্রিয় মনে হয়েছে। তখন সে ব্যক্তি বলেঃ আমার এটাই পছন্দ যে, আপনি যদি আমার মা সম্পর্কে কিছু না বলতেন (তবে ভাল হতো।) তখন সালিম (রাযিঃ) বলেনঃ আমি তোমাকে সে কথাই বলেছি, যে কথা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছিলেন।
একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে ছিলাম। সে সময় এক ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে বলেঃ আস-সালামু আলাইকুম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ সালাম তোমার প্রতি এবং তোমার মায়ের প্রতি। এরপর তিনি বলেনঃ যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয়, তখন সে যেন বলেঃ আল-হামদু লিল্লাহ! এভাবে তিনি প্রশংসার অন্যান্য পদ্ধতিও বলে দেন। আর হাঁচির সময় পাশে যে থাকে, সে যেন বলেঃ ইয়ারহামুকাল্লাহু। এর জবাবে হাঁচি দাতা যেন বলেঃ ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম; অর্থাৎ আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন!
একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে ছিলাম। সে সময় এক ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে বলেঃ আস-সালামু আলাইকুম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ সালাম তোমার প্রতি এবং তোমার মায়ের প্রতি। এরপর তিনি বলেনঃ যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয়, তখন সে যেন বলেঃ আল-হামদু লিল্লাহ! এভাবে তিনি প্রশংসার অন্যান্য পদ্ধতিও বলে দেন। আর হাঁচির সময় পাশে যে থাকে, সে যেন বলেঃ ইয়ারহামুকাল্লাহু। এর জবাবে হাঁচি দাতা যেন বলেঃ ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম; অর্থাৎ আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন!
باب كَيْفَ تَشْمِيتُ الْعَاطِسِ
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ سَالِمِ بْنِ عُبَيْدٍ فَعَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ . فَقَالَ سَالِمٌ وَعَلَيْكَ وَعَلَى أُمِّكَ . ثُمَّ قَالَ بَعْدُ لَعَلَّكَ وَجَدْتَ مِمَّا قُلْتُ لَكَ قَالَ لَوَدِدْتُ أَنَّكَ لَمْ تَذْكُرْ أُمِّي بِخَيْرٍ وَلاَ بِشَرٍّ قَالَ إِنَّمَا قُلْتُ لَكَ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّا بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ عَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَعَلَيْكَ وَعَلَى أُمِّكَ " . ثُمَّ قَالَ " إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ " . قَالَ فَذَكَرَ بَعْضَ الْمَحَامِدِ " وَلْيَقُلْ لَهُ مَنْ عِنْدَهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ وَلْيَرُدَّ - يَعْنِي عَلَيْهِمْ - يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাঁচিদাতাকে يَرْحَمُكَ اللهُ বলা
تَشمِيت الْعَاطِسِ (হাঁচিদাতাকের يَرْحَمُكَ اللهُ বলা) । تَشمِيت এর মূল অর্থ কল্যাণ ও বরকতের দু'আ করা। শব্দটির উৎপত্তি شمامة থেকে। এর অর্থ অন্যের বিপদে আনন্দিত হওয়া। تَشمِيت অর্থ সেই আনন্দ প্রতিহত করা। এখানে تَشْمِيْت দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য يَرْحَمُكَ الله (তোমার প্রতি আল্লাহর রহমত হোক) বলা। যার প্রতি আল্লাহর রহমত হয় তার বিপদও কেটে যায়। ফলে শত্রুর আনন্দ ঘুচে যায়। যেহেতু এ দু'আটি পরিণামে শত্রুর আনন্দ ঘুচিয়ে দেয়, তাই একে تَشْمِيْت নামে অভিহিত করা হয়েছে।
কারও মতে تَشمِيت এর উৎপত্তি شَوَامِت থেকে। شَوَامِت অর্থ হাত-পা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। সে হিসেবে অর্থ স্থিত ও প্রতিষ্ঠিত রাখা। يَرْحَمُكَ اللهُ বলার দ্বারা হাঁচিদাতার জন্য তাকে দীনের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত রাখার দু'আ করা হয়। তাই এ দু'আকে تشميت নাম দেওয়া হয়েছে।
হাঁচি দেওয়া একটি নি'আমত। এর দ্বারা আলস্য কাটে ও শরীর ঝরঝরে হয়। ফলে কাজকর্মে স্ফুর্তি আসে। তখন ইবাদত-বন্দেগী করতে ভালো লাগে। তাই হাঁচিদাতার কর্তব্য হাঁচি দেওয়ার পর আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা অর্থাৎ বলা। আলহামদুলিল্লাহ শোকর আদায়ের ভাষা। হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ বলার পর যে ব্যক্তি তা শুনবে তার কর্তব্য يرحمك الله বলা। সে يرحمك الله বললে হাঁচিদাতা আবার বলবে: يهديكُمُ اللهُ وَيُصْلِح بالكم (আল্লাহ তোমাদের হিদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা দুরস্ত করে দিন)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁচির বিষয়ে এ তিনটি দু'আ শিক্ষা দিয়েছেন। হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে তিনি ইরশাদ করেন- :
إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَقُلْ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، فَإِذَا قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، قَالَ لَهُ أَخُوهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَإِذَا قِيلَ لَهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ : فَلْيَقُلْ: يَهْدِيكُمُ اللَّهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ
'তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে সে যেন বলে الْحَمْدُ لِلهِ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর)। সে যখন الْحَمْدُ لِلهِ বলবে তখন উপস্থিত ভাই যেন বলে يَرْحَمُكَ اللهُ (আল্লাহ তোমার প্রতি রহমত করুন)। তাকে লক্ষ্য করে يَرْحَمُكَ الله বললে সে যেন বলে يهديكم الله وَيُصْلِحُ بَالْكُمْ (আল্লাহ তোমাদের হিদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা দুরস্ত করে দিন)।
(সহীহ বুখারী: ৬২২৪; সুনানে আবু দাউদ: ৫০৩৩; জামে তিরমিযী: ২৭৩৯; সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৭১৫; মুসনাদে আহমাদ: ৯৭২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা: ২৫৯৯৭; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা: ৯৯৮৯; সহীহ ইবন হিব্বান ৫৯৯)
হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ বললে তার জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা ওয়াজিব। সেখানে একাধিক লোক থাকলে তাদের পক্ষ থেকে যে-কোনও একজন এটা বললে সকলের পক্ষ থেকে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। উপস্থিত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে যখন ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা হবে, তখন আবার হাঁচিদাতার কাজ তাদের জন্য দু'আ করা। সে তাদের জন্য দু'আ করবে- يَهْدِيكُمُ اللهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ (আল্লাহ তোমাদের হেদায়েত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা দুরস্ত করে দিন)।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে তার উত্তরে অবশ্যই يَرْحَمُكَ اللهُ বলতে হবে।
تَشمِيت الْعَاطِسِ (হাঁচিদাতাকের يَرْحَمُكَ اللهُ বলা) । تَشمِيت এর মূল অর্থ কল্যাণ ও বরকতের দু'আ করা। শব্দটির উৎপত্তি شمامة থেকে। এর অর্থ অন্যের বিপদে আনন্দিত হওয়া। تَشمِيت অর্থ সেই আনন্দ প্রতিহত করা। এখানে تَشْمِيْت দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য يَرْحَمُكَ الله (তোমার প্রতি আল্লাহর রহমত হোক) বলা। যার প্রতি আল্লাহর রহমত হয় তার বিপদও কেটে যায়। ফলে শত্রুর আনন্দ ঘুচে যায়। যেহেতু এ দু'আটি পরিণামে শত্রুর আনন্দ ঘুচিয়ে দেয়, তাই একে تَشْمِيْت নামে অভিহিত করা হয়েছে।
কারও মতে تَشمِيت এর উৎপত্তি شَوَامِت থেকে। شَوَامِت অর্থ হাত-পা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। সে হিসেবে অর্থ স্থিত ও প্রতিষ্ঠিত রাখা। يَرْحَمُكَ اللهُ বলার দ্বারা হাঁচিদাতার জন্য তাকে দীনের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত রাখার দু'আ করা হয়। তাই এ দু'আকে تشميت নাম দেওয়া হয়েছে।
হাঁচি দেওয়া একটি নি'আমত। এর দ্বারা আলস্য কাটে ও শরীর ঝরঝরে হয়। ফলে কাজকর্মে স্ফুর্তি আসে। তখন ইবাদত-বন্দেগী করতে ভালো লাগে। তাই হাঁচিদাতার কর্তব্য হাঁচি দেওয়ার পর আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা অর্থাৎ বলা। আলহামদুলিল্লাহ শোকর আদায়ের ভাষা। হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ বলার পর যে ব্যক্তি তা শুনবে তার কর্তব্য يرحمك الله বলা। সে يرحمك الله বললে হাঁচিদাতা আবার বলবে: يهديكُمُ اللهُ وَيُصْلِح بالكم (আল্লাহ তোমাদের হিদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা দুরস্ত করে দিন)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁচির বিষয়ে এ তিনটি দু'আ শিক্ষা দিয়েছেন। হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে তিনি ইরশাদ করেন- :
إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَقُلْ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، فَإِذَا قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، قَالَ لَهُ أَخُوهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَإِذَا قِيلَ لَهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ : فَلْيَقُلْ: يَهْدِيكُمُ اللَّهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ
'তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে সে যেন বলে الْحَمْدُ لِلهِ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর)। সে যখন الْحَمْدُ لِلهِ বলবে তখন উপস্থিত ভাই যেন বলে يَرْحَمُكَ اللهُ (আল্লাহ তোমার প্রতি রহমত করুন)। তাকে লক্ষ্য করে يَرْحَمُكَ الله বললে সে যেন বলে يهديكم الله وَيُصْلِحُ بَالْكُمْ (আল্লাহ তোমাদের হিদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা দুরস্ত করে দিন)।
(সহীহ বুখারী: ৬২২৪; সুনানে আবু দাউদ: ৫০৩৩; জামে তিরমিযী: ২৭৩৯; সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৭১৫; মুসনাদে আহমাদ: ৯৭২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা: ২৫৯৯৭; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা: ৯৯৮৯; সহীহ ইবন হিব্বান ৫৯৯)
হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ বললে তার জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা ওয়াজিব। সেখানে একাধিক লোক থাকলে তাদের পক্ষ থেকে যে-কোনও একজন এটা বললে সকলের পক্ষ থেকে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। উপস্থিত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে যখন ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা হবে, তখন আবার হাঁচিদাতার কাজ তাদের জন্য দু'আ করা। সে তাদের জন্য দু'আ করবে- يَهْدِيكُمُ اللهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ (আল্লাহ তোমাদের হেদায়েত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা দুরস্ত করে দিন)।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে তার উত্তরে অবশ্যই يَرْحَمُكَ اللهُ বলতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
