কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
৩৫. সুন্নাহের গুরুত্ব ও আকাঈদ অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৬২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৬৯৯
১৭. তাকদীর সম্পর্কে।
৪৬২৬. মুহাম্মাদ ইবনে কাছীর (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ ইবনে দায়লামী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন; একদা আমি উবাই ইবনে কা’ব (রাযিঃ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলিঃ আমার অন্তরে তাকদীরের ব্যাপারে কিছু সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে, আপনি সে সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন, যাতে আল্লাহ আমার অন্তর থেকে তা দূর করে দেন। তিনি বলেনঃ মহান আল্লাহ যদি আসমান ও যমীনের সব মাখলূককে আযাব দেন, তবে এজন্য তাঁকে জালিম বলা যাবে না। আর যদি তিনি সকলের উপর রহম করেন, তবে তাঁর রহমত তাদের জন্য, তাদের আমলের চাইতে উত্তম।
আর যদি তুমি আল্লাহর রাস্তায় উহুদ পরিমাণ সোনা ব্যয় কর, তবে আল্লাহ তাআলা ততক্ষণ তা কবুল করবেন না, যতক্ষণ না তুমি তাকদীরের উপর ঈমান আনবে। আর তুমি বিশেষভাবে মনে রাখবে যে, তোমার যা পাওনা ছিল, তা অবশ্যই পেয়েছ; আর তুমি যা পাওয়ার নও-তা কখনো পাবে না। আর যদি তুমি এরূপ বিশ্বাস ব্যতীত-অন্য বিশ্বাসের উপর মারা যাও, তবে তুমি জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
রাবী বলেনঃ এরপর আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর কাছে আসলে, তিনি বলেনঃ তারপর আমি হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাযিঃ)-এর কাছে গেলে, তিনিও অনুরূপ বর্ণনা করেন। রাবী বলেনঃ পরে আমি যায়দ ইবনে ছাবিত (রাযিঃ)-এর কাছে গেলে, তিনি নবী করীম (ﷺ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
আর যদি তুমি আল্লাহর রাস্তায় উহুদ পরিমাণ সোনা ব্যয় কর, তবে আল্লাহ তাআলা ততক্ষণ তা কবুল করবেন না, যতক্ষণ না তুমি তাকদীরের উপর ঈমান আনবে। আর তুমি বিশেষভাবে মনে রাখবে যে, তোমার যা পাওনা ছিল, তা অবশ্যই পেয়েছ; আর তুমি যা পাওয়ার নও-তা কখনো পাবে না। আর যদি তুমি এরূপ বিশ্বাস ব্যতীত-অন্য বিশ্বাসের উপর মারা যাও, তবে তুমি জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
রাবী বলেনঃ এরপর আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর কাছে আসলে, তিনি বলেনঃ তারপর আমি হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাযিঃ)-এর কাছে গেলে, তিনিও অনুরূপ বর্ণনা করেন। রাবী বলেনঃ পরে আমি যায়দ ইবনে ছাবিত (রাযিঃ)-এর কাছে গেলে, তিনি নবী করীম (ﷺ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
باب فِي الْقَدَرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي سِنَانٍ، عَنْ وَهْبِ بْنِ خَالِدٍ الْحِمْصِيِّ، عَنِ ابْنِ الدَّيْلَمِيِّ، قَالَ أَتَيْتُ أُبَىَّ بْنَ كَعْبٍ فَقُلْتُ لَهُ وَقَعَ فِي نَفْسِي شَىْءٌ مِنَ الْقَدَرِ فَحَدِّثْنِي بِشَىْءٍ لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يُذْهِبَهُ مِنْ قَلْبِي . فَقَالَ لَوْ أَنَّ اللَّهَ عَذَّبَ أَهْلَ سَمَوَاتِهِ وَأَهْلَ أَرْضِهِ عَذَّبَهُمْ وَهُوَ غَيْرُ ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ كَانَتْ رَحْمَتُهُ خَيْرًا لَهُمْ مِنْ أَعْمَالِهِمْ وَلَوْ أَنْفَقْتَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا قَبِلَهُ اللَّهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ وَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ وَلَوْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا لَدَخَلْتَ النَّارَ . قَالَ ثُمَّ أَتَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ - قَالَ - ثُمَّ أَتَيْتُ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ - قَالَ - ثُمَّ أَتَيْتُ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَحَدَّثَنِي عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ ذَلِكَ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
তাকদীরে বিশ্বাসের এ সুফলের প্রতি ইশারা করে বলা হয়েছে যে- জেনে রেখো, যা তোমার হাতছাড়া হয়ে গেছে, তা তুমি কখনও পাওয়ার ছিলে না। আর যা তোমার হস্তগত হয়েছে, তা তোমার কখনও হস্তচ্যুত হওয়ার ছিল না। বস্তুত তাকদীরে বিশ্বাস মানুষকে হতাশা থেকে রক্ষা করে। তাকদীরে বিশ্বাস মানুষের মনে সাহস যোগায়। তাকদীরে বিশ্বাস মানুষের অন্তর থেকে সৃষ্টির ভয়-ভীতি দূর করে। যার অন্তরে তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস থাকে, সে অহংকার-অহমিকার শিকার হওয়া থেকে বেঁচে যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ তাকদীরে বিশ্বাস ও তাওয়াক্কুলেরও শিক্ষা দান করে। তাকদীরে যা লেখা হয়েছে, তার বাইরে কারও কিছু করার ক্ষমতা নেই। তাকদীরের বাইরে না কোনও দুশমন কোনও ক্ষতি করতে পারে, না কোনও বন্ধু কিছু উপকার করতে পারে। সুতরাং মানুষকে ভয় না করে ও মানুষের কাছে আশাবাদী না হয়ে বান্দার কর্তব্য আল্লাহরই উপর নির্ভর করা ও তাকদীরে অবিচল আস্থা রাখা।
খ. তাকদীরের কোনও পরিবর্তন নেই। তা চূড়ান্ত হয়ে আছে। তাতে যা লেখা আছে তাই হবে। তবে বেকার না থেকে কাজকর্ম করতে হবে এবং আসবাব-উপকরণ অবলম্বন করতে হবে, যেহেতু তা করা আল্লাহর হুকুম।
গ. চেষ্টার পর কাঙ্ক্ষিত বিষয় না পেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই, যেহেতু তাকদীরে ছিল না বলে তা পাওয়া যায়নি এবং পাওয়া সম্ভবই ছিল না। এমনিভাবে আশানুরূপ ফল লাভ হলেও দর্পিত ও উল্লসিত হওয়ার সুযোগ নেই, যেহেতু তাকদীরে ছিল বলে তা পাওয়া গেছে এবং পাওয়া যেতই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ তাকদীরে বিশ্বাস ও তাওয়াক্কুলেরও শিক্ষা দান করে। তাকদীরে যা লেখা হয়েছে, তার বাইরে কারও কিছু করার ক্ষমতা নেই। তাকদীরের বাইরে না কোনও দুশমন কোনও ক্ষতি করতে পারে, না কোনও বন্ধু কিছু উপকার করতে পারে। সুতরাং মানুষকে ভয় না করে ও মানুষের কাছে আশাবাদী না হয়ে বান্দার কর্তব্য আল্লাহরই উপর নির্ভর করা ও তাকদীরে অবিচল আস্থা রাখা।
খ. তাকদীরের কোনও পরিবর্তন নেই। তা চূড়ান্ত হয়ে আছে। তাতে যা লেখা আছে তাই হবে। তবে বেকার না থেকে কাজকর্ম করতে হবে এবং আসবাব-উপকরণ অবলম্বন করতে হবে, যেহেতু তা করা আল্লাহর হুকুম।
গ. চেষ্টার পর কাঙ্ক্ষিত বিষয় না পেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই, যেহেতু তাকদীরে ছিল না বলে তা পাওয়া যায়নি এবং পাওয়া সম্ভবই ছিল না। এমনিভাবে আশানুরূপ ফল লাভ হলেও দর্পিত ও উল্লসিত হওয়ার সুযোগ নেই, যেহেতু তাকদীরে ছিল বলে তা পাওয়া গেছে এবং পাওয়া যেতই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: