কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

৩৩. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৩৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪৪৫০
২৪. ইয়াহুদী নারী-পুরুষের রজম সম্পর্কে।
৪৩৯৩. মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইয়াহুদীদের থেকে একজন পুরুষ ও একজন নারী ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। তখন তারা একজন অপর জনকে বলেঃ চল আমরা এদের নিয়ে এই নবীর কাছে যাই; কেননা, তাকে শরীআতের হালকা নির্দেশসহ পাঠানো হয়েছে। কাজেই, তিনি যদি আমাদের ব্যাপারে রজমের চাইতে নীচু পর্যায়ের কোন নির্দেশ দেন, তবে আমরা তা মেনে নেব। আর এটি আমাদের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট একটি উজ্জ্বল নিদর্শনস্বরূপ হবে যে, আমরা তাক (আল্লাহকে) বলবোঃ এতো তোমার নবীদের মধ্য হতে এক নবীর নির্দেশ।

রাবী বলেনঃ তখন তারা নবী করীম (ﷺ) এর নিকট আসে এবং তিনি তাঁর সাহাবীদের সাথে তখন মসজিদে বসেছিলেন। তারা বলেঃ হে আবুল কাসিম! যে সমস্ত নারী-পুরুষ যিনা করে এদের ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তিনি তাদের সাথে কোন কথা না বলে, তাদের এক মাদ্রাসায় গমন করেন এবং এর দরজায় দাঁড়িয়ে বলেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর নামের শপথ দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, যিনি মুসার উপর তাওরাত নাযিল করেছেন; তোমরা যিনা সম্পর্কে তাকে কিরূপ নির্দেশ দেখতে পাও, যদি সে ব্যক্তি বিবাহিত হয়? তখন তারা বলেঃ আমাদের নিকট তার শাস্তি হলোঃ তার মুখে কাল দাগ দেওয়া, অসম্মানিত করা এবং বেত্রাঘাত করা। আর এভাবে অপমান করা যে, যিনাকারীদের গাধার পিঠে, তার পিছনের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসিয়ে দিয়ে, লোকদের মাঝে ঘুরানো।

রাবী বলেনঃ এ সময় ইয়াহুদীদের এক যুবক চুপ করে বসে থাকে। নবী (ﷺ) তাকে চুপ থাকতে দেখে, তাকে আল্লাহর নামের শপথ দিয়ে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। তখন সে যুবক বলেঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি যখন আমাকে আল্লাহর নামের শপথ দিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন, তখন আমি বলতে বাধ্য যে, তাওরাতের মধ্যে যিনার শাস্তি হলো রজম। তখন নবী করীম (ﷺ) জিজ্ঞাসা করে, কিরূপে তা পরিবর্তন করলে? তখন সে বলেঃ আমাদের জনৈক বাদশাহ তার একজন নিকটাত্মীয় যিনা করায়, তিনি তাকে রজম করেন নি।

এরপর একজন সাধারণ লোক যিনা করলে, বাদশাহ তাকে রজম করার ইচ্ছা করেন। তখন সে লোকের সম্প্রদায়ের লোকেরা উপস্থিত হয়ে এরূপ দাবী করে যে, যতক্ষণ না বাদশাহ তার নিকটাত্মীয়কে এনে আমাদের সামনে পাথর মেরে হত্যা করবে; ততক্ষণ আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের লোককে রজম করতে দেব না। যখন তারা এরূপ শাস্তিদানে (মুখে কাল দাগ ইত্যাদি) একমত হয়ে সমস্যার সমাধান করে। তখন নবী করীম (ﷺ) বলেনঃ আমি তোমাদের ব্যাপারে তাওরাতের হুকুম অনুযায়ী ফায়সালা দিচ্ছি। তিনি সে দু’জনের ব্যাপারে রজমের হুকুম দিলে, তা কার্যকর করা হয়।

রাবী যুহরী (রাহঃ) বলেনঃ আমি জানতে পেরেছি যে, এ আয়াত তাদের সম্পর্কে নাযিল হয়ঃ আমি তাওরাত নাযিল করেছি, যাতে হিদায়াত ও নূর আছে। আর ঐ সব নবীরা তাওরাতের নির্দেশ মত ফায়সালা করে থাকে, যারা আল্লাহর অনুগত। নবী করীম (ﷺ)ও ঐ সমস্ত নবীদের অন্যতম ছিলেন।
باب فِي رَجْمِ الْيَهُودِيَّيْنِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنَا رَجُلٌ، مِنْ مُزَيْنَةَ ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمٍ سَمِعْتُ رَجُلاً، مِنْ مُزَيْنَةَ مِمَّنْ يَتَّبِعُ الْعِلْمَ وَيَعِيهِ - ثُمَّ اتَّفَقَا - وَنَحْنُ عِنْدَ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ فَحَدَّثَنَا عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - وَهَذَا حَدِيثُ مَعْمَرٍ وَهُوَ أَتَمُّ - قَالَ زَنَى رَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ وَامْرَأَةٌ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ اذْهَبُوا بِنَا إِلَى هَذَا النَّبِيِّ فَإِنَّهُ نَبِيٌّ بُعِثَ بِالتَّخْفِيفِ فَإِنْ أَفْتَانَا بِفُتْيَا دُونَ الرَّجْمِ قَبِلْنَاهَا وَاحْتَجَجْنَا بِهَا عِنْدَ اللَّهِ قُلْنَا فُتْيَا نَبِيٍّ مِنْ أَنْبِيَائِكَ - قَالَ - فَأَتَوُا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ فِي أَصْحَابِهِ فَقَالُوا يَا أَبَا الْقَاسِمِ مَا تَرَى فِي رَجُلٍ وَامْرَأَةٍ زَنَيَا فَلَمْ يُكَلِّمْهُمْ كَلِمَةً حَتَّى أَتَى بَيْتَ مِدْرَاسِهِمْ فَقَامَ عَلَى الْبَابِ فَقَالَ " أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي أَنْزَلَ التَّوْرَاةَ عَلَى مُوسَى مَا تَجِدُونَ فِي التَّوْرَاةِ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أُحْصِنَ " . قَالُوا يُحَمَّمُ وَيُجَبَّهُ وَيُجْلَدُ - وَالتَّجْبِيَةُ أَنْ يُحْمَلَ الزَّانِيَانِ عَلَى حِمَارٍ وَتُقَابَلَ أَقْفِيَتُهُمَا وَيُطَافَ بِهِمَا - قَالَ وَسَكَتَ شَابٌّ مِنْهُمْ فَلَمَّا رَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَكَتَ أَلَظَّ بِهِ النِّشْدَةَ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِذْ نَشَدْتَنَا فَإِنَّا نَجِدُ فِي التَّوْرَاةِ الرَّجْمَ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " فَمَا أَوَّلُ مَا ارْتَخَصْتُمْ أَمْرَ اللَّهِ " . قَالَ زَنَى ذُو قَرَابَةٍ مَعَ مَلِكٍ مِنْ مُلُوكِنَا فَأَخَّرَ عَنْهُ الرَّجْمَ ثُمَّ زَنَى رَجُلٌ فِي أُسْرَةٍ مِنَ النَّاسِ فَأَرَادَ رَجْمَهُ فَحَالَ قَوْمُهُ دُونَهُ وَقَالُوا لاَ يُرْجَمُ صَاحِبُنَا حَتَّى تَجِيءَ بِصَاحِبِكَ فَتَرْجُمَهُ فَاصْطَلَحُوا عَلَى هَذِهِ الْعُقُوبَةِ بَيْنَهُمْ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " فَإِنِّي أَحْكُمُ بِمَا فِي التَّوْرَاةِ " . فَأَمَرَ بِهِمَا فَرُجِمَا . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَبَلَغَنَا أَنَّ هَذِهِ الآيَةَ نَزَلَتْ فِيهِمْ ( إِنَّا أَنْزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا ) كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ .
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ৪৩৯৩ | মুসলিম বাংলা