কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
৩৩. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৩৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৮১
৯. কোন ব্যক্তি যদি নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে, কিন্তু উহার নাম না বলে - সে সম্পর্কে।
৪৩৩০. মাহমুদ ইবনে খালিদ (রাহঃ) .... আবু উমামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা কোন এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি শাস্তির উপযুক্ত হয়েছি। আপনি আমাকে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করুন। তখন নবী (ﷺ) জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি কি এখানে আমার আগে উযু করেছ? সে ব্যক্তি বলেঃ হ্যাঁ। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি কি আমাদের সাথে নামায আদায় করেছ? সে ব্যক্তি বলেঃ হ্যাঁ। তখন নবী (ﷺ) তাকে বলেনঃ তুমি চলে যাও, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে মাফ করে দিয়েছেন।
باب فِي الرَّجُلِ يَعْتَرِفُ بِحَدٍّ وَلاَ يُسَمِّيهِ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي أَبُو أُمَامَةَ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَىَّ . قَالَ " تَوَضَّأْتَ حِينَ أَقْبَلْتَ " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ " هَلْ صَلَّيْتَ مَعَنَا حِينَ صَلَّيْنَا " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ " اذْهَبْ فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَدْ عَفَا عَنْكَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে যে সাহাবীর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, তিনি এতটাই অস্থির হয়ে পড়েছিলেন যে, নিজ অপরাধকে হদ্দের উপযুক্ত গণ্য করে ফেলেন। হদ্দ বলা হয় শরী'আত প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট শাস্তি, যেমন চুরির ক্ষেত্রে হাত কাটা, ব্যভিচারের ক্ষেত্রে বিবাহিত হলে পাথর মেরে হত্যা করা, অবিবাহিত হলে একশ দোররা মারা। অথচ তিনি এ পর্যায়ের পাপ করেননি।
ইমাম নববী রহ. বলেন, اصبت حدا (আমি হদ্দের উপযুক্ত অপরাধ করেছি)-এর অর্থ এমন অপরাধ, যে কারণে তা'যীর (বিচারকের বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি) আরোপিত হয়। এর দ্বারা প্রকৃত শরী'আতী হদ্দ (সুনির্দিষ্ট শাস্তি) বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। যেমন ব্যভিচারের শাস্তি মদপানের শাস্তি ইত্যাদি। কেননা এসকল শাস্তি নামায দ্বারা রহিত হয় না এবং ইমামের জন্য তা মওকুফ করাও জায়েয হয় না।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু তার উপর হদ্দ জারি করেননি; বরং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, নামায পড়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন, তাই বোঝা যাচ্ছে তার দ্বারা চূড়ান্ত পর্যায়ের গুনাহ হয়নি। তিনি তার কৃত গুনাহকে প্রকৃত অবস্থার চেয়েও কঠিনরূপে দেখেছেন নিজ অনুশোচনার তীব্রতা ও আল্লাহভীতির গভীরতার কারণে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গুনাহ সগীরা হোক বা কবীরা, কোনওটাতেই জড়ানো উচিত নয়। কেননা আল্লাহ তা ঘৃণা করেন। আর এ কারণেই নিজ দয়ায় তিনি তা মোচনের ব্যবস্থা করেছেন।
খ. যে-কোনও পাপকর্ম হয়ে যাওয়ার পর নিশ্চিন্তে বসে থাকতে নেই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অতিদ্রুত লজ্জা ও অনুতাপের সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে যত্নবান থাকা চাই। কেননা এ নামায আমাদের পাপমোচনের ব্যবস্থাও বটে।
ঘ. এ হাদীছ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের আশান্বিত করে।
ইমাম নববী রহ. বলেন, اصبت حدا (আমি হদ্দের উপযুক্ত অপরাধ করেছি)-এর অর্থ এমন অপরাধ, যে কারণে তা'যীর (বিচারকের বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি) আরোপিত হয়। এর দ্বারা প্রকৃত শরী'আতী হদ্দ (সুনির্দিষ্ট শাস্তি) বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। যেমন ব্যভিচারের শাস্তি মদপানের শাস্তি ইত্যাদি। কেননা এসকল শাস্তি নামায দ্বারা রহিত হয় না এবং ইমামের জন্য তা মওকুফ করাও জায়েয হয় না।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু তার উপর হদ্দ জারি করেননি; বরং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, নামায পড়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন, তাই বোঝা যাচ্ছে তার দ্বারা চূড়ান্ত পর্যায়ের গুনাহ হয়নি। তিনি তার কৃত গুনাহকে প্রকৃত অবস্থার চেয়েও কঠিনরূপে দেখেছেন নিজ অনুশোচনার তীব্রতা ও আল্লাহভীতির গভীরতার কারণে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গুনাহ সগীরা হোক বা কবীরা, কোনওটাতেই জড়ানো উচিত নয়। কেননা আল্লাহ তা ঘৃণা করেন। আর এ কারণেই নিজ দয়ায় তিনি তা মোচনের ব্যবস্থা করেছেন।
খ. যে-কোনও পাপকর্ম হয়ে যাওয়ার পর নিশ্চিন্তে বসে থাকতে নেই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অতিদ্রুত লজ্জা ও অনুতাপের সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে যত্নবান থাকা চাই। কেননা এ নামায আমাদের পাপমোচনের ব্যবস্থাও বটে।
ঘ. এ হাদীছ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের আশান্বিত করে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: