কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
২৭. পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
হাদীস নং: ৩৯৮২
আন্তর্জাতিক নং: ৪০২৩
শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ।
৩৯৮২. নাসীর ইবনে ফারাজ (রাহঃ) .... মু’আয ইবনে আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি খাওয়ার পর এ দুআ পাঠ করবেঃ (অর্থ) ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে খাওয়াইছেন এবং আমাকে এ রিযিক দিয়েছেন, আমার চেষ্টা ও শক্তি ব্যতিরেকে।’ তার জীবনের আগের পরের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
আর যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করে এ দুআ পড়বেঃ (অর্থ) সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে পড়িয়েছেন এবং এর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আমার শক্তি ও চেষ্টা ছাড়া” তার আগের ও পরের জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
আর যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করে এ দুআ পড়বেঃ (অর্থ) সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে পড়িয়েছেন এবং এর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আমার শক্তি ও চেষ্টা ছাড়া” তার আগের ও পরের জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
حَدَّثَنَا نُصَيْرُ بْنُ الْفَرَجِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي أَيُّوبَ - عَنْ أَبِي مَرْحُومٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَكَلَ طَعَامًا ثُمَّ قَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا الطَّعَامَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلاَ قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ وَمَنْ لَبِسَ ثَوْبًا فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي هَذَا الثَّوْبَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلاَ قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে খাওয়ার পরে কী দু'আ পড়তে হয় তা শেখানো হয়েছে। সেইসঙ্গে দু'আটির ফযীলতও বলে দেওয়া হয়েছে। ফযীলত হল- দু'আটি পড়লে অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়। অর্থাৎ সগীরা গুনাহ। কবীরা গুনাহ মাফ হয় তাওবার দ্বারা। দু'আটি হল-
الحمدُ للهِ الذي أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ
এতে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও শোকর আদায়ের পাশাপাশি বান্দার পক্ষ থেকে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে যে- أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ (যিনি আমাকে এ খাবার খাওয়ালেন এবং আমাকে রিযিক দিলেন আমার কোনওরূপ চেষ্টা ও ক্ষমতা ছাড়াই)। অর্থাৎ রিযিকের জন্য আল্লাহ তা'আলা চেষ্টা করার হুকুম দিয়েছেন বলে আমি চেষ্টা করি। কিন্তু চেষ্টা করলেই যে আমি পেয়ে যাব তা অনিবার্য নয়। দেওয়াটা সম্পূর্ণই আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা ও তাঁর দয়া। তিনি দয়া করে দেন বলে আমি পাই। না দিলে পেতাম না। কাজেই যারা জীবিকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করে, নিজ সাধ্যমতো সবরকম চেষ্টা করে ও বিদ্যা-বুদ্ধি খাটায়, তাদের এ কথা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, তাদের প্রাপ্ত জীবিকা কেবলই নিজেদের চেষ্টার ফল। বরং সর্বাবস্থায় জীবিকা আল্লাহ তা'আলার দান বলেই বিশ্বাস করতে হবে। বিশেষত এ কারণেও যে, যে যেই চেষ্টার কথা বলে, তাও কি আল্লাহর অনুগ্রহ নয়? এই যে হাত-পা, বিদ্যা-বুদ্ধি, পরিশ্রম করার ক্ষমতা, চাষের জমি, চাষাবাদের উপকরণ এবং যাবতীয় উপার্জনমাধ্যমের আসবাব-উপকরণ আমরা কোথায় পেলাম? সবই আল্লাহ তা'আলারই দেওয়া নয় কি? প্রকৃতপক্ষে 'আমার' বলে কিছুই নেই। সবই আল্লাহর। তাই 'আমার চেষ্টা' বলে বড়াই করার অবকাশ নেই। সবই আল্লাহর দান ও তাঁরই অনুগ্রহ। সুতরাং যে-কোনও রিযিক ও জীবিকা ভোগের পর আমাদেরকে তাঁরই শোকর আদায় করতে হবে। মনেপ্রাণে শোকর আদায় করতে পারলে আখেরে লাভ আমাদেরই। এর বদৌলতে এক তো তিনি রিযিক বৃদ্ধি করে দেবেন, যা দুনিয়ার লাভ। সেইসঙ্গে আমাদের পাপরাশিও ক্ষমা করে দেবেন, যা আখিরাতের লাভ এবং সর্বাপেক্ষা বেশি কাঙ্ক্ষিত লাভ। আল্লাহ তা'আলা কতইনা মহান! সদাসর্বদা তাঁরই দেওয়া নি'আমত ভোগ করি। তারপর ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাঁর অবাধ্যতাও করি। নানারকম গুনাহে লিপ্ত হই। তা সত্ত্বেও সে গুনাহ থেকে যাতে ক্ষমা পাই, তার জন্য সহজ সহজ ব্যবস্থাও তিনি দান করেছেন। খাবার খাও, তারপর শোকর আদায় করো, তিনি তোমার গুনাহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহরই সমস্ত প্রশংসা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. খাবার ও জীবিকাকে কখনও নিজ চেষ্টার ফল মনে করতে নেই। আল্লাহর অনুগ্রহের দান বলে বিশ্বাস করতে হবে এবং সেজন্য তাঁর শোকর আদায় করতে হবে।
খ. খাওয়ার পর হাদীছে বর্ণিত এ দু'আটি এই আশায় পাঠ করব, যাতে আল্লাহ তা'আলা আমার অতীতের পাপরাশি ক্ষমা করে দেন।
الحمدُ للهِ الذي أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ
এতে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও শোকর আদায়ের পাশাপাশি বান্দার পক্ষ থেকে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে যে- أطعَمَني هذا ورَزَقَنيه من غيرِ حولٍ مِنِّي ولا قوةٍ (যিনি আমাকে এ খাবার খাওয়ালেন এবং আমাকে রিযিক দিলেন আমার কোনওরূপ চেষ্টা ও ক্ষমতা ছাড়াই)। অর্থাৎ রিযিকের জন্য আল্লাহ তা'আলা চেষ্টা করার হুকুম দিয়েছেন বলে আমি চেষ্টা করি। কিন্তু চেষ্টা করলেই যে আমি পেয়ে যাব তা অনিবার্য নয়। দেওয়াটা সম্পূর্ণই আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা ও তাঁর দয়া। তিনি দয়া করে দেন বলে আমি পাই। না দিলে পেতাম না। কাজেই যারা জীবিকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করে, নিজ সাধ্যমতো সবরকম চেষ্টা করে ও বিদ্যা-বুদ্ধি খাটায়, তাদের এ কথা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, তাদের প্রাপ্ত জীবিকা কেবলই নিজেদের চেষ্টার ফল। বরং সর্বাবস্থায় জীবিকা আল্লাহ তা'আলার দান বলেই বিশ্বাস করতে হবে। বিশেষত এ কারণেও যে, যে যেই চেষ্টার কথা বলে, তাও কি আল্লাহর অনুগ্রহ নয়? এই যে হাত-পা, বিদ্যা-বুদ্ধি, পরিশ্রম করার ক্ষমতা, চাষের জমি, চাষাবাদের উপকরণ এবং যাবতীয় উপার্জনমাধ্যমের আসবাব-উপকরণ আমরা কোথায় পেলাম? সবই আল্লাহ তা'আলারই দেওয়া নয় কি? প্রকৃতপক্ষে 'আমার' বলে কিছুই নেই। সবই আল্লাহর। তাই 'আমার চেষ্টা' বলে বড়াই করার অবকাশ নেই। সবই আল্লাহর দান ও তাঁরই অনুগ্রহ। সুতরাং যে-কোনও রিযিক ও জীবিকা ভোগের পর আমাদেরকে তাঁরই শোকর আদায় করতে হবে। মনেপ্রাণে শোকর আদায় করতে পারলে আখেরে লাভ আমাদেরই। এর বদৌলতে এক তো তিনি রিযিক বৃদ্ধি করে দেবেন, যা দুনিয়ার লাভ। সেইসঙ্গে আমাদের পাপরাশিও ক্ষমা করে দেবেন, যা আখিরাতের লাভ এবং সর্বাপেক্ষা বেশি কাঙ্ক্ষিত লাভ। আল্লাহ তা'আলা কতইনা মহান! সদাসর্বদা তাঁরই দেওয়া নি'আমত ভোগ করি। তারপর ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাঁর অবাধ্যতাও করি। নানারকম গুনাহে লিপ্ত হই। তা সত্ত্বেও সে গুনাহ থেকে যাতে ক্ষমা পাই, তার জন্য সহজ সহজ ব্যবস্থাও তিনি দান করেছেন। খাবার খাও, তারপর শোকর আদায় করো, তিনি তোমার গুনাহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহরই সমস্ত প্রশংসা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. খাবার ও জীবিকাকে কখনও নিজ চেষ্টার ফল মনে করতে নেই। আল্লাহর অনুগ্রহের দান বলে বিশ্বাস করতে হবে এবং সেজন্য তাঁর শোকর আদায় করতে হবে।
খ. খাওয়ার পর হাদীছে বর্ণিত এ দু'আটি এই আশায় পাঠ করব, যাতে আল্লাহ তা'আলা আমার অতীতের পাপরাশি ক্ষমা করে দেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: