কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
২১. (হালাল-হারাম) পানীয়ের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৬৮২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৭২৪
৪৪৬. জানোয়ারের মত পানিতে মুখ লাগিয়ে পান করা।
৩৬৮২. উসমান ইবনে আবী শায়বা (রাহঃ) ..... জাবির ইবনে আব্দিল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নবী (ﷺ) জনৈক সাহাবীর সঙ্গে একজন আনসারের নিকট গমন করেন, যিনি তাঁর বাগানে পানি দিচ্ছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ যদি তোমার কাছে পুরাতন সূরাহীতে রাতের ঠাণ্ডা পানি থাকে (তবে ভাল), নয়তো আমি মুখ লাগিয়ে নহরের পানি পান করবো। তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আমার কাছে পুরাতন সূরাহীতে রাতের পানি আছে।
باب فِي الْكَرْعِ
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنِي فُلَيْحٌ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ دَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَرَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ وَهُوَ يُحَوِّلُ الْمَاءَ فِي حَائِطِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنْ كَانَ عِنْدَكَ مَاءٌ بَاتَ هَذِهِ اللَّيْلَةَ فِي شَنٍّ وَإِلاَّ كَرَعْنَا " . قَالَ بَلْ عِنْدِي مَاءٌ بَاتَ فِي شَنٍّ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এখানে হাদীছটি সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। বিস্তারিত বর্ণনা দ্বারা জানা যায় প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারীর কাছে গেলেন। সঙ্গে ছিলেন হযরত আবূ বকর রাযি.। সেই সাহাবী তখন তাঁর খেজুর বাগানে পানির সেচ দিচ্ছিলেন। তিনি নালা দিয়ে পানি এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিচ্ছিলেন।
হাদীছটিতে আছে- دَخَلَ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারী ব্যক্তির কাছে প্রবেশ করলেন। তার মানে তিনি সেই আনসারী সাহাবীর বাগানে প্রবেশ করলেন। তাঁর তখন ঠাণ্ডা পানি পান করার ইচ্ছা ছিল। সময়টা ছিল প্রচণ্ড গরমের। তিনি সাহাবীকে বললেন, তোমার ঘরে মশকে রাতের বাসি পানি থাকলে আমাদের পান করাও। রাতের বাসি পানি চাইলেন এ কারণে যে, রাতে গরম কম থাকায় মশকে ভরা পানি ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে রাতের বাসি পানি আছে। আমার সঙ্গে মাচায় চলুন। তাঁরা দু'জন তাঁর সঙ্গে মাচায় গেলেন। আনসারী ব্যক্তি একটা পেয়ালায় পানি ঢাললেন। তারপর তাতে ছাগলের দুধ দোওয়ালেন। তিনি সেই দুধ তাঁদের পান করতে দিলেন। প্রথমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করলেন, তারপর হযরত আবু বকর রাযি.।
ওই সাহাবী দুধে ঠাণ্ডা পানি মিশিয়েছিলেন দোওয়ানো দুধ ঠাণ্ডা করার জন্য। দুধ যখন দোওয়ানো হয়, তখন তা বেশ উষ্ণ থাকে। গরমের সময় সে দুধ তৃপ্তিকর হয় না। কিছুটা ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে নিলে তৃপ্তির সঙ্গে পান করা যায়। তবে এভাবে পানি মেশানো মেহমানকে আপ্যায়িত করার জন্য তো ঠিক আছে। বিক্রির বেলায় তা কিছুতেই জায়েয নয়।
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা গেল পিপাসা নিবারণ বা ক্ষুধা নিবারণের জন্য স্বেচ্ছায় কোনও প্রিয়জনের বাড়ি যাওয়া যেতে পারে। যদি জানা থাকে সে ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হবে না, তবে সঙ্গে অতিরিক্ত লোকও নেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ঠাণ্ডা পানি অনেক বড় নি'আমত। এটা বিশেষভাবে বোঝা যায় গরমের সময়। দুপুরের খরতাপে যখন তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে যায়, তখন দেহমন জুড়ানোর জন্য এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানির বিকল্প আর কী হতে পারে? এরূপ অবস্থায় ঠাণ্ডা পানি পান করলে তার সজীবতায় শরীরের প্রতিটি পশম সিক্ত হয়ে ওঠে। হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহ.-কে বলতেন, মিঞা মৌলভী আশরাফ আলী! ঠাণ্ডা পানি খুব পান করবে। তাতে প্রতিটি পশম থেকে আল্লাহ তা'আলার শোকরের অনুভূতি হয়। হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة أن يقال له ألم أصحّ لك جسمك وأروك من الماء البارد
‘কিয়ামতের দিন বান্দার সর্বপ্রথম যে জিনিসের হিসাব নেওয়া হবে তা এই যে, তাকে বলা হবে, আমি কি তোমার শরীর সুস্থ রাখিনি? তোমাকে ঠাণ্ডা পানি দ্বারা সজীবতা দান করিনি?’ (তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৬২; মুসনাদুল বাযযার: ৯৪০৮; হাকিম, আল মুস্তাদরাক : ৭২০৩; ফাওয়াইদু তাম্মাম: ২১৭; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান: ৪২৮৭)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. চামড়ার মশক বা অন্য যে-কোনও পাত্র ব্যবহার করা জায়েয।
খ. তৃষ্ণা বা ক্ষুধা নিবারণের জন্য কোনও প্রিয়জনের বাড়িতে যাওয়া দোষের নয়।
গ. ঠাণ্ডা পানি অনেক বড় নি'আমত।
হাদীছটিতে আছে- دَخَلَ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারী ব্যক্তির কাছে প্রবেশ করলেন। তার মানে তিনি সেই আনসারী সাহাবীর বাগানে প্রবেশ করলেন। তাঁর তখন ঠাণ্ডা পানি পান করার ইচ্ছা ছিল। সময়টা ছিল প্রচণ্ড গরমের। তিনি সাহাবীকে বললেন, তোমার ঘরে মশকে রাতের বাসি পানি থাকলে আমাদের পান করাও। রাতের বাসি পানি চাইলেন এ কারণে যে, রাতে গরম কম থাকায় মশকে ভরা পানি ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে রাতের বাসি পানি আছে। আমার সঙ্গে মাচায় চলুন। তাঁরা দু'জন তাঁর সঙ্গে মাচায় গেলেন। আনসারী ব্যক্তি একটা পেয়ালায় পানি ঢাললেন। তারপর তাতে ছাগলের দুধ দোওয়ালেন। তিনি সেই দুধ তাঁদের পান করতে দিলেন। প্রথমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করলেন, তারপর হযরত আবু বকর রাযি.।
ওই সাহাবী দুধে ঠাণ্ডা পানি মিশিয়েছিলেন দোওয়ানো দুধ ঠাণ্ডা করার জন্য। দুধ যখন দোওয়ানো হয়, তখন তা বেশ উষ্ণ থাকে। গরমের সময় সে দুধ তৃপ্তিকর হয় না। কিছুটা ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে নিলে তৃপ্তির সঙ্গে পান করা যায়। তবে এভাবে পানি মেশানো মেহমানকে আপ্যায়িত করার জন্য তো ঠিক আছে। বিক্রির বেলায় তা কিছুতেই জায়েয নয়।
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা গেল পিপাসা নিবারণ বা ক্ষুধা নিবারণের জন্য স্বেচ্ছায় কোনও প্রিয়জনের বাড়ি যাওয়া যেতে পারে। যদি জানা থাকে সে ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হবে না, তবে সঙ্গে অতিরিক্ত লোকও নেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ঠাণ্ডা পানি অনেক বড় নি'আমত। এটা বিশেষভাবে বোঝা যায় গরমের সময়। দুপুরের খরতাপে যখন তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে যায়, তখন দেহমন জুড়ানোর জন্য এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানির বিকল্প আর কী হতে পারে? এরূপ অবস্থায় ঠাণ্ডা পানি পান করলে তার সজীবতায় শরীরের প্রতিটি পশম সিক্ত হয়ে ওঠে। হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহ.-কে বলতেন, মিঞা মৌলভী আশরাফ আলী! ঠাণ্ডা পানি খুব পান করবে। তাতে প্রতিটি পশম থেকে আল্লাহ তা'আলার শোকরের অনুভূতি হয়। হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة أن يقال له ألم أصحّ لك جسمك وأروك من الماء البارد
‘কিয়ামতের দিন বান্দার সর্বপ্রথম যে জিনিসের হিসাব নেওয়া হবে তা এই যে, তাকে বলা হবে, আমি কি তোমার শরীর সুস্থ রাখিনি? তোমাকে ঠাণ্ডা পানি দ্বারা সজীবতা দান করিনি?’ (তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৬২; মুসনাদুল বাযযার: ৯৪০৮; হাকিম, আল মুস্তাদরাক : ৭২০৩; ফাওয়াইদু তাম্মাম: ২১৭; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান: ৪২৮৭)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. চামড়ার মশক বা অন্য যে-কোনও পাত্র ব্যবহার করা জায়েয।
খ. তৃষ্ণা বা ক্ষুধা নিবারণের জন্য কোনও প্রিয়জনের বাড়িতে যাওয়া দোষের নয়।
গ. ঠাণ্ডা পানি অনেক বড় নি'আমত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
