আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
১- ঈমানের অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ১৯
১২. ফিতনা থেকে পলায়ন দ্বীনের অংশ
১৮। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) ......... আবু সা’ঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ সেদিন দূরে নয়, যেদিন মুসলিমের উত্তম সম্পদ হবে কয়েকটি বকরী, যা নিয়ে সে পাহাড়ের চূড়ায় অথবা বৃষ্টিপাতের স্থানে চলে যাবে। ফিতনা থেকে বাঁচতে সে তার দ্বীন নিয়ে পালিয়ে যাবে।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
الفتن শব্দটি الفتنة-এর বহুবচন। এর মূল অর্থ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করা। পরবর্তীতে শব্দটি অপসন্দনীয় ও অপ্রীতিকর বিষয়ের জন্যও ব্যবহৃত হতে থাকে। সুতরাং কখনও শব্দটি 'কুফর' অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
وَالْفِتْنَةُ اكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ
‘আর ফিতনা (কুফর) তো হত্যা অপেক্ষাও গুরুতর।’(সূরা বাকারা (২), আয়াত ২১৭
কখনও ব্যবহার হয় গুনাহ অর্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
الَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُوا
‘ওহে! ফিতনায় (অর্থাৎ গুনাহের মধ্যে) তো তারা পড়েই রয়েছে।(সূরা তাওবা (৯), আয়াত ৪৯)
কখনও ব্যবহার হয় নির্যাতন করা ও আগুন দিয়ে জ্বালানো অর্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
‘নিশ্চয়ই যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে নির্যাতন করেছে (আগুন দিয়ে জ্বালিয়েছে)।’(সূরা বুরূজ (৮৫), আয়াত ১০)
আবার কখনও ব্যবহার হয় এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থার দিকে ফিরিয়ে দেওয়া অর্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
وَإِنْ كَادُوا لَيَفْتِنُونَكَ عَنِ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ لِتَفْتَرِيَ عَلَيْنَا غَيْرَهُ
(হে নবী!) আমি তোমার কাছে যে ওহী পাঠিয়েছি, কাফেরগণ তোমাকে তা থেকে বিচ্যুত করার উপক্রম করছিল, যাতে তুমি এর পরিবর্তে অন্য কোনও কথা রচনা করে আমার নামে পেশ কর।(সূরা বনী ইসরাঈল (১৭), আয়াত ৭৩)
এ হাদীছটিতে 'ফিতনা' দ্বারা উপরিউক্ত প্রতিটি অর্থই বোঝানো হতে পারে। এতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, অচিরেই এমন ফিতনা দেখা দেবে, যদ্দরুন নিজ ঈমান ও আমল রক্ষার্থে মানুষকে লোকসমাজ ছেড়ে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতে হবে আর সে লক্ষ্যে লোকালয় থেকে দূরে কোনও পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে অবস্থান করতে হবে।
বলাবাহুল্য, এটা একটা গায়েবী সংবাদ, যা ভবিষ্যতে ঘটবে। গায়েব সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কেউ জানে না। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে এ সংবাদ দান করেছেন, নিঃসন্দেহে তা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ওহীর মাধ্যমে জেনেই দান করেছেন। তাঁর এ ভবিষ্যদ্বাণী বিভিন্ন সময়ে সত্যেও পরিণত হয়েছে। একেক সময় একেক এলাকায় এমন ভয়াবহ ফিতনা দেখা দিয়েছে, অর্থাৎ কাফের-মুশরিক ও বিভিন্ন গোমরাহ ফেরকা এমন নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, যদ্দরুন প্রকৃত ঈমানদারদের পক্ষে সে এলাকায় বাস করা কঠিন হয়ে গেছে। ফলে তাদেরকে নিজ ঈমান-আমল রক্ষার স্বার্থে সে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে।
একটি ভবিষ্যদ্বাণী হলেও হাদীছটির মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, ফিতনাকালে মুমিনদের কর্তব্য নিজ দীন নিয়ে নিরাপদ স্থানে পলায়ন করা। কেননা যদি ফিতনার স্থানে থাকে এবং ফিতনাকারীদের সঙ্গে মেলামেশা করে, তবে গুনাহ থেকে নিজ দীন ও ঈমান রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে। হয় তাদের সঙ্গে মিলে কোনও নির্দোষ ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে, নয়তো অন্যায়ভাবে কারও মাল গ্রাস করা হবে কিংবা সক্রিয়ভাবে বা পরোক্ষভাবে ফিতনাকারীদের সহযোগিতা করা হবে। এসব গুনাহ থেকে আত্মরক্ষার জন্য নিরাপদ স্থানে পলায়ন করাই শ্রেয়। তাই তো দেখা যায় কুরআন মাজীদের সূরা কাহফে এমন একদল যুবকের প্রশংসা করা হয়েছে, যারা দীন ও ঈমান রক্ষার জন্য পাহাড়ের গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।
একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবী হযরত হুযায়ফা রাযি.-কে ফিতনার বিষয়ে অবগত করলে তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি সেরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হই, তবে আপনি তখন আমাকে কী করতে হুকুম দেন? তিনি বললেন, তখন তুমি মুসলিমদের দল ও তাদের নেতার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখবে। তিনি বললেন, যদি কোনও দল ও নেতা না থাকে? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا ، وَلَوْ أَنْ تَعَض بِأَصْلِ شَجَرَةٍ، حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذلِكَ
তুমি বিবদমান দলসমূহ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে, যদিও কোনও গাছের মূল কামড়ে ধরতে হয়, যাবৎ না এ অবস্থার উপর তোমার মৃত্যু আসে।(সহীহ বুখারী: ৭০৪৮; সহীহ মুসলিম: ১৮৪৭)
অবশ্য যখন ফিতনার পরিস্থিতি না হয়, তখন লোকালয়ে থাকাই উত্তম। সে ক্ষেত্রে ইবাদত-বন্দেগীর উদ্দেশ্যে নির্জন স্থানে চলে যাওয়া ও সেখানে বাস করতে থাকা পসন্দনীয় নয়। এক হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, জনৈক সাহাবী এক উপত্যকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে মিষ্টি পানির ফোয়ারা ছিল। জায়গাটি তাঁর খুব পসন্দ হয়। তিনি মনে মনে বললেন, আমি তো লোকজন ছেড়ে এ উপত্যকায় এসে বাস করতে পারি। পরক্ষণেই বললেন, না, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত এরূপ করব না। সুতরাং তিনি এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাঁকে নিষেধ করে দিলেন।(জামে' তিরমিযী: ১৬৫০)
হাদীছটিতে ফিতনাকালে ছাগলের পালকে মুসলিম ব্যক্তির শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত ছাগল একটি বরকতপূর্ণ পশু। খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। লালন-পালন খুব সহজ। এর পেছনে খরচ কম, কিন্তু লাভ অনেক বেশি। এর দুধ খাওয়া যায়, পশম বিক্রি করা যায়, যা দ্বারা পোশাক তৈরি হয়ে থাকে। দ্রুত বংশবিস্তার হওয়ায় এটি একটি ভালো অর্থকরি সম্পদও বটে। ঘন ঘন এর থেকে উৎপন্ন ছাগল বিক্রি করা যায়। এর গোশতও এক সুস্বাদু খাদ্য। নবী-রাসূলগণের প্রত্যেকেই ছাগল চরিয়েছেন বলে বিভিন্ন হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।
ফিতনাকালে জীবনরক্ষার জন্য ছাগল পালন করাই বেশি সহজ। যে-কোনও স্থানে গিয়ে তা পালন করা যায়। পাহাড়-পর্বতে গরু-মহিষ পালন করা সম্ভব নয়। কিন্তু ছাগল পালনে কোনও সমস্যা নেই। এ কারণেই হাদীছটিতে ছাগলের পালকে মুসলিম ব্যক্তির উত্তম সম্পদরূপে উল্লেখ করা হয়েছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ছাগল একটি উত্তম ও বরকতপূর্ণ সম্পদ।
খ. যে পরিস্থিতিতে ঈমান-আমলের হেফাজত কঠিন হয়ে যায়, তখন লোকালয় ছেড়ে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করাই ভালো।
গ. ভবিষ্যদ্বাণী করা ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি মু'জিযা। তাঁর প্রতিটি ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য।
وَالْفِتْنَةُ اكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ
‘আর ফিতনা (কুফর) তো হত্যা অপেক্ষাও গুরুতর।’(সূরা বাকারা (২), আয়াত ২১৭
কখনও ব্যবহার হয় গুনাহ অর্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
الَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُوا
‘ওহে! ফিতনায় (অর্থাৎ গুনাহের মধ্যে) তো তারা পড়েই রয়েছে।(সূরা তাওবা (৯), আয়াত ৪৯)
কখনও ব্যবহার হয় নির্যাতন করা ও আগুন দিয়ে জ্বালানো অর্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
‘নিশ্চয়ই যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে নির্যাতন করেছে (আগুন দিয়ে জ্বালিয়েছে)।’(সূরা বুরূজ (৮৫), আয়াত ১০)
আবার কখনও ব্যবহার হয় এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থার দিকে ফিরিয়ে দেওয়া অর্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
وَإِنْ كَادُوا لَيَفْتِنُونَكَ عَنِ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ لِتَفْتَرِيَ عَلَيْنَا غَيْرَهُ
(হে নবী!) আমি তোমার কাছে যে ওহী পাঠিয়েছি, কাফেরগণ তোমাকে তা থেকে বিচ্যুত করার উপক্রম করছিল, যাতে তুমি এর পরিবর্তে অন্য কোনও কথা রচনা করে আমার নামে পেশ কর।(সূরা বনী ইসরাঈল (১৭), আয়াত ৭৩)
এ হাদীছটিতে 'ফিতনা' দ্বারা উপরিউক্ত প্রতিটি অর্থই বোঝানো হতে পারে। এতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, অচিরেই এমন ফিতনা দেখা দেবে, যদ্দরুন নিজ ঈমান ও আমল রক্ষার্থে মানুষকে লোকসমাজ ছেড়ে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতে হবে আর সে লক্ষ্যে লোকালয় থেকে দূরে কোনও পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে অবস্থান করতে হবে।
বলাবাহুল্য, এটা একটা গায়েবী সংবাদ, যা ভবিষ্যতে ঘটবে। গায়েব সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কেউ জানে না। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে এ সংবাদ দান করেছেন, নিঃসন্দেহে তা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ওহীর মাধ্যমে জেনেই দান করেছেন। তাঁর এ ভবিষ্যদ্বাণী বিভিন্ন সময়ে সত্যেও পরিণত হয়েছে। একেক সময় একেক এলাকায় এমন ভয়াবহ ফিতনা দেখা দিয়েছে, অর্থাৎ কাফের-মুশরিক ও বিভিন্ন গোমরাহ ফেরকা এমন নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, যদ্দরুন প্রকৃত ঈমানদারদের পক্ষে সে এলাকায় বাস করা কঠিন হয়ে গেছে। ফলে তাদেরকে নিজ ঈমান-আমল রক্ষার স্বার্থে সে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে।
একটি ভবিষ্যদ্বাণী হলেও হাদীছটির মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, ফিতনাকালে মুমিনদের কর্তব্য নিজ দীন নিয়ে নিরাপদ স্থানে পলায়ন করা। কেননা যদি ফিতনার স্থানে থাকে এবং ফিতনাকারীদের সঙ্গে মেলামেশা করে, তবে গুনাহ থেকে নিজ দীন ও ঈমান রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে। হয় তাদের সঙ্গে মিলে কোনও নির্দোষ ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে, নয়তো অন্যায়ভাবে কারও মাল গ্রাস করা হবে কিংবা সক্রিয়ভাবে বা পরোক্ষভাবে ফিতনাকারীদের সহযোগিতা করা হবে। এসব গুনাহ থেকে আত্মরক্ষার জন্য নিরাপদ স্থানে পলায়ন করাই শ্রেয়। তাই তো দেখা যায় কুরআন মাজীদের সূরা কাহফে এমন একদল যুবকের প্রশংসা করা হয়েছে, যারা দীন ও ঈমান রক্ষার জন্য পাহাড়ের গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।
একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবী হযরত হুযায়ফা রাযি.-কে ফিতনার বিষয়ে অবগত করলে তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি সেরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হই, তবে আপনি তখন আমাকে কী করতে হুকুম দেন? তিনি বললেন, তখন তুমি মুসলিমদের দল ও তাদের নেতার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখবে। তিনি বললেন, যদি কোনও দল ও নেতা না থাকে? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا ، وَلَوْ أَنْ تَعَض بِأَصْلِ شَجَرَةٍ، حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذلِكَ
তুমি বিবদমান দলসমূহ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে, যদিও কোনও গাছের মূল কামড়ে ধরতে হয়, যাবৎ না এ অবস্থার উপর তোমার মৃত্যু আসে।(সহীহ বুখারী: ৭০৪৮; সহীহ মুসলিম: ১৮৪৭)
অবশ্য যখন ফিতনার পরিস্থিতি না হয়, তখন লোকালয়ে থাকাই উত্তম। সে ক্ষেত্রে ইবাদত-বন্দেগীর উদ্দেশ্যে নির্জন স্থানে চলে যাওয়া ও সেখানে বাস করতে থাকা পসন্দনীয় নয়। এক হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, জনৈক সাহাবী এক উপত্যকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে মিষ্টি পানির ফোয়ারা ছিল। জায়গাটি তাঁর খুব পসন্দ হয়। তিনি মনে মনে বললেন, আমি তো লোকজন ছেড়ে এ উপত্যকায় এসে বাস করতে পারি। পরক্ষণেই বললেন, না, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত এরূপ করব না। সুতরাং তিনি এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাঁকে নিষেধ করে দিলেন।(জামে' তিরমিযী: ১৬৫০)
হাদীছটিতে ফিতনাকালে ছাগলের পালকে মুসলিম ব্যক্তির শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত ছাগল একটি বরকতপূর্ণ পশু। খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। লালন-পালন খুব সহজ। এর পেছনে খরচ কম, কিন্তু লাভ অনেক বেশি। এর দুধ খাওয়া যায়, পশম বিক্রি করা যায়, যা দ্বারা পোশাক তৈরি হয়ে থাকে। দ্রুত বংশবিস্তার হওয়ায় এটি একটি ভালো অর্থকরি সম্পদও বটে। ঘন ঘন এর থেকে উৎপন্ন ছাগল বিক্রি করা যায়। এর গোশতও এক সুস্বাদু খাদ্য। নবী-রাসূলগণের প্রত্যেকেই ছাগল চরিয়েছেন বলে বিভিন্ন হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।
ফিতনাকালে জীবনরক্ষার জন্য ছাগল পালন করাই বেশি সহজ। যে-কোনও স্থানে গিয়ে তা পালন করা যায়। পাহাড়-পর্বতে গরু-মহিষ পালন করা সম্ভব নয়। কিন্তু ছাগল পালনে কোনও সমস্যা নেই। এ কারণেই হাদীছটিতে ছাগলের পালকে মুসলিম ব্যক্তির উত্তম সম্পদরূপে উল্লেখ করা হয়েছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ছাগল একটি উত্তম ও বরকতপূর্ণ সম্পদ।
খ. যে পরিস্থিতিতে ঈমান-আমলের হেফাজত কঠিন হয়ে যায়, তখন লোকালয় ছেড়ে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করাই ভালো।
গ. ভবিষ্যদ্বাণী করা ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি মু'জিযা। তাঁর প্রতিটি ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য।


বর্ণনাকারী: