কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

২০. ইলমের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৬১২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৫৪
৪২১. দ্রুত হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে।
৩৬১২. মুহাম্মাদ ইবনে মনসুর (রাহঃ) ...... উরওয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আবু হুরায়রা (রাযিঃ) আয়িশা (রাযিঃ)-এর হুজরার নিকট বসে ছিলেন এবং এ সময় আয়িশা (রাযিঃ) নামাযরত ছিলেন। এ সময় বলছিলেনঃ হে হুজরার বাসিন্দারা, শ্রবণ করুন! তিনি দু’বার এরূপ বলেন। তখন আয়িশা (রাযিঃ) বলেনঃ তুমি কি তার কথার উপর আশ্চর্য হবে না! (তিনি আরো বলেনঃ) যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কথা বলতেন, তখন যদি কেউ তা গণনা করতে ইচ্ছা করতো, তবে সে তা গণনা করতে পারতো।
باب فِي سَرْدِ الْحَدِيثِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَنْصُورٍ الطُّوسِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ جَلَسَ أَبُو هُرَيْرَةَ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ عَائِشَةَ - رضى الله عنها - وَهِيَ تُصَلِّي فَجَعَلَ يَقُولُ اسْمَعِي يَا رَبَّةَ الْحُجْرَةِ مَرَّتَيْنِ . فَلَمَّا قَضَتْ صَلاَتَهَا قَالَتْ أَلاَ تَعْجَبُ إِلَى هَذَا وَحَدِيثِهِ إِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيُحَدِّثُ الْحَدِيثَ لَوْ شَاءَ الْعَادُّ أَنْ يُحْصِيَهُ أَحْصَاهُ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু এ উম্মতের শিক্ষক ছিলেন এবং তাঁর প্রতিটি কথাই উম্মতের জন্য শিক্ষণীয় ছিল, তাই তিনি প্রতিটি কথা বলতেন সুস্পষ্টভাবে। ফলে তাঁর কোনও কথা বুঝতে শ্রোতার কষ্ট হতো না। দীনী বিষয়ে যারা বক্তব্য দান করে, তাদের এদিকে লক্ষ রাখা দরকার। অনেকে বক্তব্যদানের সময় খুব তাড়াতাড়ি করে কথা বলে। শ্রোতার পক্ষে তা বুঝে ওঠা কঠিন হয়ে যায়। বক্তব্য দান করাই তো হয় মানুষকে বোঝানোর জন্য। তারা যদি বুঝতেই না পারে, তবে সে বক্তব্যদানের সার্থকতা কী? কাজেই কোনও বক্তারই হড়বড় করে কথা বলা উচিত নয়। ধীরে ধীরে গুছিয়ে বলা উচিত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. কোনও কোনও বক্তার এরকম হড়বড় করে বলা বক্তব্য শুনে তাতে আপত্তি জানান। তিনি তাদের সংশোধনকল্পে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যের ধরন তাদের সামনে তুলে ধরেন এবং সে প্রসঙ্গেই এ হাদীছটি তিনি বর্ণনা করেন। হাদীসে আছে যে-
ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يسرد سردكم هذا، ولكنه كان يتكلم بكلام يبينه، فصل، يحفظه من جلس إليه
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মতো এরকম হড়বড় করতেন না। বরং তিনি সুস্পষ্টভাবে পরিষ্কার করে কথা বলতেন, তাঁর কাছে যারা বসত তারা মুখস্থ করে ফেলতে পারত।'(জামে' তিরমিযী: ৩৬৩৯; মুসনাদুল বাযযার ১৫৫; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৬৯৬; মুসনাদে ইসহাক ইবন রাহুয়াহ: ১৭০৪)

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

যে-কোনও কথা পরিষ্কারভাবে বলা উচিত, যাতে শ্রোতা তা ভালোভাবে বুঝতে পারে। শিক্ষকদের জন্য এটা আরও বেশি জরুরি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ৩৬১২ | মুসলিম বাংলা