কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
১৭. শপথ ও মান্নতের বিধান
হাদীস নং: ৩২৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৫৬
২৭০. অস্পষ্ট স্বরে ছলনামূলক কসম করা।
৩২৪০. আমর ইবনে মুহাম্মাদ নাকিদ (রাহঃ) .... সুওয়াইদ ইবনে হানযালা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর উদ্দেশ্যে বের হই। এ সময় আমাদের সঙ্গে ওয়াইল ইবনে হুজর ছিল। তখন তাঁকে তাঁর একজন শক্র বন্দী করে ফেলে। কওমের লোকেরা তাঁর ব্যাপারে কসম করতে ইতস্তত করে কিন্তু আমি এরূপ কসম করি যে, সে আমার ভাই। ফলে, দুশমন তাঁকে ছেড়ে দেয়। এরপর আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে উপস্থিত হই এবং আমি তাঁকে এ ব্যাপারে খবর দেই যে, কওমের লোকেরা ওয়াইল সম্পর্কে কসম করাকে ভাল মনে করেনি; অথচ তাঁর ব্যাপারে আমি এরূপ কসম করি যে, সে আমার ভাই। তখন তিনি বলেনঃ তুমি সত্য বলেছ। এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই।
باب الْمَعَارِيضِ فِي الْيَمِينِ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدٍ النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ جَدَّتِهِ، عَنْ أَبِيهَا، سُوَيْدِ بْنِ حَنْظَلَةَ قَالَ خَرَجْنَا نُرِيدُ رَسُولَ اللَّهِ وَمَعَنَا وَائِلُ بْنُ حُجْرٍ فَأَخَذَهُ عَدُوٌّ لَهُ فَتَحَرَّجَ الْقَوْمُ أَنْ يَحْلِفُوا وَحَلَفْتُ أَنَّهُ أَخِي فَخَلَّى سَبِيلَهُ فَأَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّ الْقَوْمَ تَحَرَّجُوا أَنْ يَحْلِفُوا وَحَلَفْتُ أَنَّهُ أَخِي قَالَ " صَدَقْتَ الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে এক মুসলিমকে অপর মুসলিমের ভাই বলা হয়েছে। কুরআন মাজীদেও আছেঃ- إنّما المؤمنون إخوة ‘মুমিনগণ তো পরস্পর ভাই ভাই। সূরা হুজুরাত (৪৯), আয়াত ১০
এর দ্বারা দুই মুসলিমের ঈমানী সম্পর্ককে দুই ব্যক্তির ভ্রাতৃসম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। দুই ব্যক্তি যখন একই মূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় অর্থাৎ তাদের পিতা-মাতা অভিন্ন হয়, তখন তারা ভাই ভাই হয়। তেমনি যারা আদর্শগতভাবে একই মূল তথা ঈমান ও ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের পরস্পরকেও 'ভাই ভাই' শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তারাই ভাই ভাই নামে অভিহিত হওয়ার বেশি উপযুক্ত। কেননা একই পিতা-মাতা-সঞ্জাত হওয়ার দ্বারা যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তা ক্ষণস্থায়ী। এ জীবন তো অল্পদিনের, যা মৃত্যুতেই শেষ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে ঈমান ও ইসলামভিত্তিক সম্পর্ক চিরস্থায়ী, যেহেতু ঈমান ও ইসলাম দ্বারা আখেরাতের অনন্ত জীবন লাভ হয়।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীছে মুসলিম ব্যক্তির কয়েকটি কর্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তার আগে ভূমিকাস্বরূপ المسلم أخو المسلم (এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই)- এ নীতিবাক্যটি বলে নিয়েছেন।কেননা মন-মস্তিষ্কে এ ভ্রাতৃত্ববোধ সঞ্চারিত হয়ে গেলে মুসলিম ব্যক্তি সে কর্তব্যসমূহ পালনে প্রস্তুত থাকবে। বস্তুত সে কর্তব্যসমূহ এ ভ্রাতৃত্বেরই দাবি।সে দাবির কারণে মুসলিম ব্যক্তির স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তা পালন করার কথা। আলাদাভাবে তাকে সেসব কর্তব্যের কথা বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু উম্মতের এক পরম দরদী শিক্ষকও ছিলেন, তাই ছাত্র পড়ানোর মত করে তিনি এক এক করে সেগুলো স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, যাতে উম্মতের চরম গাফেল ব্যক্তিও মুসলিম ভাইয়ের প্রতি আপন কর্তব্য সম্পর্কে অনবহিত না থাকে এবং তা পালন করতে কোনওরূপ অবহেলা না করে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ মুসলিম উম্মাহকে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত করে ।
খ. আমরা কেউ একে অন্যের প্রতি জুলুম করব না। অর্থাৎ অন্যের জান, মাল ও ইজ্জতের উপর আঘাত করব না। এটা ইসলামী ভ্রাতৃত্বের পরিপন্থী।
গ. কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়, তবে তার সাহায্য না করে পাশ কাটিয়ে যাওয়া উচিত নয়; বরং তার সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি।
এর দ্বারা দুই মুসলিমের ঈমানী সম্পর্ককে দুই ব্যক্তির ভ্রাতৃসম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। দুই ব্যক্তি যখন একই মূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় অর্থাৎ তাদের পিতা-মাতা অভিন্ন হয়, তখন তারা ভাই ভাই হয়। তেমনি যারা আদর্শগতভাবে একই মূল তথা ঈমান ও ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের পরস্পরকেও 'ভাই ভাই' শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তারাই ভাই ভাই নামে অভিহিত হওয়ার বেশি উপযুক্ত। কেননা একই পিতা-মাতা-সঞ্জাত হওয়ার দ্বারা যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তা ক্ষণস্থায়ী। এ জীবন তো অল্পদিনের, যা মৃত্যুতেই শেষ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে ঈমান ও ইসলামভিত্তিক সম্পর্ক চিরস্থায়ী, যেহেতু ঈমান ও ইসলাম দ্বারা আখেরাতের অনন্ত জীবন লাভ হয়।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীছে মুসলিম ব্যক্তির কয়েকটি কর্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তার আগে ভূমিকাস্বরূপ المسلم أخو المسلم (এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই)- এ নীতিবাক্যটি বলে নিয়েছেন।কেননা মন-মস্তিষ্কে এ ভ্রাতৃত্ববোধ সঞ্চারিত হয়ে গেলে মুসলিম ব্যক্তি সে কর্তব্যসমূহ পালনে প্রস্তুত থাকবে। বস্তুত সে কর্তব্যসমূহ এ ভ্রাতৃত্বেরই দাবি।সে দাবির কারণে মুসলিম ব্যক্তির স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তা পালন করার কথা। আলাদাভাবে তাকে সেসব কর্তব্যের কথা বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু উম্মতের এক পরম দরদী শিক্ষকও ছিলেন, তাই ছাত্র পড়ানোর মত করে তিনি এক এক করে সেগুলো স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, যাতে উম্মতের চরম গাফেল ব্যক্তিও মুসলিম ভাইয়ের প্রতি আপন কর্তব্য সম্পর্কে অনবহিত না থাকে এবং তা পালন করতে কোনওরূপ অবহেলা না করে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ মুসলিম উম্মাহকে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত করে ।
খ. আমরা কেউ একে অন্যের প্রতি জুলুম করব না। অর্থাৎ অন্যের জান, মাল ও ইজ্জতের উপর আঘাত করব না। এটা ইসলামী ভ্রাতৃত্বের পরিপন্থী।
গ. কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়, তবে তার সাহায্য না করে পাশ কাটিয়ে যাওয়া উচিত নয়; বরং তার সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: